যেভাবে রাজনীতিতে উত্থান তরিকুলের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৩৯ পিএম, ৪ নভেম্বর ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ১০:৩৯ পিএম, ৪ নভেম্বর ২০১৮ রবিবার
সদ্য প্রয়াত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম বিএনপি গঠনের সময় থেকেই দলে ছিলেন। স্বাধীনতার পর বাম রাজনৈতিক দলে থাকা অবস্থায় জিয়াউর রহমানের ডাকে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। তরিকুল ইসলাম ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য।
১৯৪৬ সালের ১৬ নভেম্বর যশোরে জন্ম হয় তরিকুল ইসলামের। ১৯৬২ সালে কিশোর বয়সেই নিজেকে চিনিয়ে দেন তিনি। ওই সময়ে যশোর এমএম কলেজের শিক্ষার্থী থাকাকালে কলেজের জরাজীর্ণ শহিদ মিনার পুনর্গঠনকালে পাকিস্তান সামরিক সরকারের রোষানলে পড়ে গ্রেফতার হন তিনি। ওই করাবরণের সময়েই রাজনীতিতে হাতেখড়ি যশোর থেকে উঠে আসা এই রাজনৈতিকের। কারাগারে আটক থাকা কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের কাছ থেকে দীক্ষা বাম রাজনীতির।
১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে যশোর এমএম কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৮ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের জন্য রাজবন্দী হিসেবে যশোর ও রাজশাহীতে কারাভোগ করেন ৯ মাস। ১৯৬৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় গ্রেফতার হন তিনি।
১৯৭০ সালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন তরিকুল। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর ন্যাপ থেকে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলে (জাগদল) যোগ দেন তিনি।
পরে বিএনপি গঠনের সময় জিয়াউর রহমানের ডাকে সাড়া দেন। বিএনপির ৭৬ সদস্যের প্রথম আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মনোনিত হন তরিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে বিএনপির যশোর জেলা আহ্বায়কের দায়িত্ব পান।
১৯৮০ সালে জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে পর্যায়ক্রমে তিনি দলের যুগ্ম মহাসচিব, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, ভাইস চেয়ারম্যান ও ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত দলের পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটির সদস্য পদ পান।
তরিকুল ইসলাম ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারে প্রথমে সমাজকল্যাণমন্ত্রী এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন। চার দলীয় জোট সরকারের সময় তথ্য এবং পরিবেশ ও বনমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
সর্বশেষ গত ১ বছরের বেশি সময় ধরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। সাবেক এই মন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন। গত একমাস ধরে তিনি অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
রোববার বিকেল ৫টায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন বিএনপির এই প্রতিষ্ঠাতা নেতা। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
বিএনপির কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তরিকুলের ইসলামের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে স্ত্রী অধ্যাপক নার্গিস বেগম, বড় ছেলে শান্তনু ইসলাম সুমিত এবং ছোট ছেলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত রয়েছেন।