ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

জাবিতে সিন্ডিকেট সভা নিয়ে শিক্ষকদের ধস্তাধস্তি

প্রকাশিত : ১০:১০ পিএম, ৭ নভেম্বর ২০১৮ বুধবার

এক বছর তিন মাস পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন উপাচার্যপন্থী ও উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকরা। ফলে এক সিন্ডিকেট সদস্য অশোভন আচরনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে পূর্বনির্ধারিত সাধারণ সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক, শিক্ষকদের পদোন্নতি ও নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয় সভার আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। সভার নিয়ম অনুযায়ী, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সিন্ডিকেট সদস্যকেই চিঠি দেয়া হয়। সেই অনুযায়ী উপাচার্যপন্থী ৫ সিন্ডিকেট সদস্য প্রশাসনিক ভবনে আসেন ও সভাকক্ষে প্রবেশ করেন। উপাচার্যবিরোধী সিন্ডিকেট সদস্যরা উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করেন এবং সভাকক্ষের প্রবেশ পথে অবস্থান নেন। এসময় উপাচার্যপন্থী সিন্ডিকেট সদস্য এবং বাংলাদেশ কৃষকলীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা সভাকক্ষে প্রবেশ করতে চাইলে উপাচার্য বিরোধীরা তাকে বাধা দেয় ও পথরোধ করে। এ নিয়ে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা বাধা দিলে দুই পক্ষের শিক্ষকরা বাকবিতন্ডা ও ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় তিনি সভাকক্ষে প্রবেশ করেন।

পরে উপ-উপাচার্য ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. আমির হোসেনসহ উপাচার্যবিরোধী চার সিন্ডিকেট সদস্য সভাকক্ষে প্রবেশ করেন।কিন্তু কিছুক্ষণ পরে তারা বেরিয়ে এসে এই সিন্ডিকেট সভাকে ‘একপাক্ষিক ও উপাচার্য মনোনীতদের সিন্ডিকেট’ বলে অভিহিত করে সিন্ডিকেট সভা বর্জনের ঘোষণা দেন।
পরে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’র শিক্ষকরা তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, আজকের পরিস্থিতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কখনো এমন একতরফা ও অনির্বাচিত সদস্যদেরকে নিয়ে সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। উপাচার্যের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কি উপাচার্যের অনুগত ব্যক্তিদের দ্বারা চলবে? নাকি বঙ্গবন্ধুর দেয়া ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী চলবে?

তিনি আরো বলেন, আমরা নতুন নিয়োগের বিরোধীতা করছি। কিন্তু উপাচার্য তাতে কর্ণপাত না করে তার অনুসারী ও মনোনীত সিন্ডিকেট সদস্যদের নিয়ে একতরফাভাবে নতুন নিয়োগ দিচ্ছে। সিন্ডিকেট সদস্যের সঙ্গে অশোভন আচরণ করিনি বরং তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম।

এ বিষয়ে মোতাহার হোসেন মোল্লা বলেন, উপাচার্য বিরোধীরা সভা শুরুর আগে আমার সঙ্গে কথা বলতে পারতো। কিন্তু তা না করে আমাকে সভাকক্ষে প্রবেশে বাধা দেয়। যা অত্যন্ত অশোভন ও নিন্দনীয়। এ ধরনের কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়া উচিত না। এসব বিষয় নিয়ে সরকারের উর্ধ্বতন পর্যায়ে কথা বলবো।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে বিভাগ উন্নয়ন ফি’র নামে অবৈধ ফি গ্রহণ করা ও তা বাতিলের দাবিতে উপাচার্য কার্যালয়ের নিচে অবস্থান নেয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

আরকে//