পাইলস ছাড়াও যেসব কারণে মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়ে: ডা. আসিফ আলমাস হক
প্রকাশিত : ০৬:০৫ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৭:০০ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০১৮ সোমবার
ডা. আসিফ আলমাস হক
পাইলস হলে চুলকানি বা রক্তক্ষরণ হয়। লজ্জায় অনেকে বিষয়টিকে দীর্ঘদিন গোপন করে রাখে। ফলে অনেকেই ভুল চিকিৎসার শিকার হন যা স্থায়ী সমস্যা সৃষ্টি করে।
পাইলস হলো মলদ্বারের একটি রোগ। মলদ্বারের নিচের অংশে এক ধরনের রক্তের গুচ্ছ, যেটা আঙ্গুরের মতো ফুলে যায়, ফলে মল ত্যাগ করলে বা মল ত্যাগ না করলেও সেখান থেকে প্রায়ই রক্তপাত হয়।
এটিই হচ্ছে পাইলস। বিভিন্ন কারণে পাইলস আক্রান্ত হতে পারে। তবে পাইলসের মূল কারণ হলো মল শক্ত হওয়া। শুধুমাত্র খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমেও এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মলদ্বার দিয়ে রক্ত অনেক কারণে যেতে পারে। অ্যানাল ফিশার, পাইলস, পলিপ, প্রোকটাইটিস- আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কোলোরেক্টাল ক্যানসার। এসবের কারণে মলদ্বার দিয়ে রক্ত যেতে পারে। সুতরাং মলদ্বার দিয়ে রক্ত বের হলেই এই সিদ্ধান্তে যাওয়া যাবে না যে, আপনি পাইলস রোগী। এমনটি হলে একজন কোলোরেক্টাল সার্জন দিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে।
পাইলস থেকে বাঁচতে প্রথমে চেষ্টা করতে হবে মল যেনো শক্ত না হয়। যে কারণে খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।
প্রচুর পরিমান সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। আঁশজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। বেশি বেশি পানি খেতে হবে।
আঁশ যুক্ত ফলমুল খেকে হবে। ইসুবগুলের ভূসি খেতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কোনো খাবার খেলে যেল মল শক্ত হয়ে না যায়। যেমন গরুর মাংস। লাল মাংস খেলে মল শক্ত হয়ে যায়।
এছাড়া প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়াম করবেন। যারা সারাক্ষণ বসে অফিস করে তাদের এমন সমস্যা দেখা দেয়। মলত্যাগের অভ্যাস যেন প্রতিদিন থাকে।
কোনো ধরনের অনিয়ম দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
আমরা অনেক রোগী পেয়ে থাকি যারা এসব ভুল চিকিৎসা নিয়ে কোনো সমধান না পেয়ে আমাদের কাছে আসে। তখন চিকিৎসাসেবা দেওয়াটা আমাদের অনেকটাই জটিল হয়ে পড়ে।
অনেকেই কম টাকায় চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য হয়তো তাদের কাছে যায়। এবিষয় আমার পরামর্শ হলো তারা যদি কোনো খাবার ওষুধ দেয় তাহলে তা খাবেন। যদি মলদ্বারে কিছু লাগাতে বলে তাহলে লাগবেন না।
অনেক সময় তারা মলদ্বারে এসিড জাতীয় কিছু দিতে বলে এটা দিলে মলদ্বার পুড়ে যেতে পারে। তখন মলদ্বার কেটে ফেলা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। তখন সেই রোগীকে পেটের মধ্যে ব্যাগ লাগিয়ে দিতে হয় সারা জীবনের জন্য।
অরাপরেশনের মাধ্যমে পাইলস ভালো হয়। এখন তো আরও আধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে বাংলাদেশে। অধ্যাপক ডা: এন্টনিও লংগো, অধ্যাপক সার্জারি, ইউনির্ভাসিটি অব প্যালেরমো, ইটালি ১৯৯৩ সালে একটি অত্যাধুনিক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন যার নাম Longo Operation ev Stapled Haemorrhoidectomy।
এ অপারেশন অনেক ভালো। রোগীর অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে আমরা চিকিৎসা দিই।
পরামর্শদাতা: বারডেম হাসতাপালের রেজিস্ট্রার।
শ্রুতিলেখক: তবিবুর রহমান।
/ এআর /