পালিত হচ্ছে হুমায়ূনের জন্মদিন
পুরস্কার পেলেন দুই সাহিত্যিক
প্রকাশিত : ০৩:৪৬ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার
বাংলা সাহিত্যের শরৎচন্দ্রের পর সবথেকে বেশি পাঠক যিনি তৈরি করেছেন তার নাম হুমায়ূন আহমেদ। নন্দিত এই কথা সাহিত্যিকের আজ সত্তরতম জন্ম বার্ষিকী। যথাযথ সম্মান, ভাবগাম্ভীর্য আর আনুষ্ঠানিকতায় পালিত হচ্ছে প্রয়াত এই লেখকের জন্ম বার্ষিকী।
জন্ম বার্ষিকীতে হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে প্রবর্তিত ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার’ পেলেন দুই কথাসাহিত্যিক রিজিয়া রহমান ও ফাতিমা রুমি। কথাসাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য রিজিয়া রহমান এবং নবীন সাহিত্য শ্রেণিতে (অনূর্ধ্ব চল্লিশ বছর বয়স্ক লেখক) ফাতিমা রুমি এ স্বীকৃতি পান। গতকাল সোমবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে জমকালো এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় এ পুরস্কার। পুরস্কার হিসেবে রিজিয়া রহমানকে পাঁচ লাখ টাকা ও ফাতিমা রুমিকে এক লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পুরস্কারের বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও এক্সিম ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও স্বাগত বক্তব্য দেন ‘অন্যদিন’ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। রিজিয়া রহমানের শংসাবচন পাঠ করেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং ফাতিমা রুমির শংসাবচন পাঠ করেন ‘কালি ও কলম’ সম্পাদক আবুল হাসনাত। রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠে হুমায়ূন আহমেদের প্রিয় দুটি রবীন্দ্রসংগীত ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’ ও ‘আজ জ্যোত্স্না রাতে সবাই গেছে বনে’ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করে অনুষ্ঠানের সভপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ নেই, হুমায়ূন আহমেদ আছেন। আমরা যারা তাঁর সাহচর্য লাভ করেছিলাম, তাদের স্মৃতিতে তিনি রয়েছেন। যাঁরা তাঁর সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পাননি, তাঁরা তাঁর সাহিত্যকর্মকে ভালোবেসে তাঁর নৈকট্য লাভ করেছেন। হুমায়ূন আহমেদ এখনো সর্বত্র বিরাজিত।’
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘আমাদের সামগ্রিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব রেখে গেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব যে তিনি সারা দেশে একটি বিশাল পাঠক শ্রেণি তৈরি করেছেন। তাঁর সেই পাঠকরা এখন নানা জায়গায় ছড়িয়ে। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি আধুনিক, প্রগতিশীল চিন্তাধারার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।’
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘প্রিয় মানুষেরা চলে গেলেও, তাঁকে প্রিয়জনরা স্মরণ করলে চিরকাল বেঁচে থাকেন। হুমায়ূন আহমেদ তেমনই একজন। তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন।’
মেহের আফরোজ শাওন বলেন, ‘একজন সাহিত্যিকের জীবন পরিপূর্ণতা পায়, যখন তাঁর নামে পুরস্কার প্রবর্তিত হয়। এ পুরস্কার প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যজীবন পরিপূর্ণ হয়েছে।’
স্বীকৃতি লাভের অনুভূতি প্রকাশ করে রিজিয়া রহমান বলেন, ‘এ পুরস্কারপ্রাপ্তি আমার জন্য একই সঙ্গে সম্মানের, গর্বের, দুঃখের ও বেদনার। কেননা হুমায়ূন আহমেদ আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট। আমার তো স্মৃতি হয়ে যাওয়ার কথা ও হুমায়ূন আহমেদের বেঁচে থাকার কথা। তাঁর স্মৃতির স্মারক হিসেবে পাওয়া এ পুরস্কার অনেক গর্বের ও সম্মানের।’
ফাতিমা রুমি বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের নামাঙ্কিত এ পুরস্কার একজন নবীন লেখকের জন্য অনেক বড় পাওয়া। এ পুরস্কার আমার লেখালেখির জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’
//এস এইচ এস//