শ্বেতী হলে কী করবেন?
প্রকাশিত : ১২:০৮ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১২:০৮ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
ত্বকের একটি বিচিত্র রোগ হল শ্বেতী। শ্বেতীতে আক্রান্ত রোগীরা বেশির ভাগই মানসিক অবসাদে ভোগেন। অনেকেই এটিকে ভয়াবহ কোনও রোগ বলে মনে করেন। এটির সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে শ্বেতীতে আক্রান্ত রোগীকে দেখলে আঁতকে ওঠেন অনেকে। তবে শ্বেতী ভয়াবহ কোনও রোগ নয়! প্রথমেই আমাদের জানতে হবে যে শ্বেতী কী?
ত্বকের মধ্যের মেলানোসাইট কোষে থাকে মেলানিন, যা ত্বকের স্বাভাবিক রঙের ভারসাম্য রক্ষা করে। মেলানিনের ক্রিয়াকলাপে বাধা সৃষ্টি হলে বা ভারসাম্য নষ্ট হলেই দেখা দেয় শ্বেতী।
শ্বেতী কেন হয়?
মেলানিনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া ছাড়াও বংশগতভাবেও শ্বেতী হয়ে থাকে। প্রতি ১০০ জন শ্বেতী রোগীর মধ্যে ৩০ জনের ক্ষেত্রেই শ্বেতী হয় বংশগত ধারায়, মাতৃকুল বা পিতৃকুলের কারও না কারও থেকে জিনের প্রভাবে। বাকি ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে শ্বেতী সাদা দাগ ছড়াতে থাকে নিজস্ব কারণে, যার মূলে রয়েছে মেলানিনের কারসাজি! বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় ১০ কোটি মানুষ শ্বেতীতে আক্রান্ত।
শরীরের কোন অংশে হয় এই শ্বেতী?
সাধারণত মুখমণ্ডল, কনুই, বুকেই প্রথমে শ্বেতী হতে শুরু করে। কখনও কখনও শ্বেতী চোখের পাশ দিয়ে, নাকের দুপাশে বা ঠোঁটের কোণ বা উপর দিয়েও শুরু হয়। কিছু ক্ষেত্রে শ্বেতী খুব একটা ছড়ায় না, একটা বিশেষ জায়গাতেই থাকে। আবার কখনও এমন ভাবে মুখে, বুকে, হাতে, পায়ে ছড়িয়ে পড়ে যে বোঝাই না এক সময় গায়ের রং আসলে কী ছিল! দ্বিতীয় ধরনের শ্বেতীর দাগই মানুষকে শ্রীহীন করে তোলে। ৫০ শতাংশ শ্বেতী ধরা পড়ে বয়স বছর দশেক হওয়ার পর।
শ্বেতীর চিকিত্সায় কী করণীয়?
ছোট আকৃতির শ্বেতী মলম বা ওষুধে সেরে যেতে পারে। চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী মলম লাগানো বা ওষুধ সেবনের পাশাপাশি সকাল বেলার রোদ লাগাতে হবে শ্বেতী-আক্রান্ত স্থানে। বড় আকারের শ্বেতী হলে মলম আর ওষুধে কাজ হতে প্রায় দু’বছরের বেশি সময় লেগে যেতে পারে। ওষুধে কাজ না হলে, চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী অস্ত্রপচার করাতে হবে। শ্বেতীর চিকিত্সায় অস্ত্রপচারের নাম ‘পাঞ্চ গ্রাফটিং’। যে ধরনের শ্বেতী বছর দুয়েক মোটামুটি একই জায়গায় অবস্থান করে সেই শ্বেতী সারিয়ে তুলতে পারে এই পাঞ্চ গ্রাফটিং।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যত অল্প বয়সে শ্বেতীর চিকিত্সা করা যায় তত ভাল। ডায়াবেটিস, হাইপার থাইরয়েড যাদের রয়েছে, তাদের শ্বেতী হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। শরীরের যে কোনও জায়গায় সাদা দাগ দেখা দিলে দ্রুত চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
সূত্র: জিনিউজ
একে//