টাকা ফেরত দিলেন যাত্রাবাড়ি আইডিয়াল স্কুল
প্রকাশিত : ০৮:০১ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৮:০৮ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৮ রবিবার
যাত্রাবাড়ি আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের বিরুদ্ধে ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠার পর তা ফেরত দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানটিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান ও টাকা ফেরত না দিলে ব্যবস্থা গ্রহণের তথ্য কানে আসার পর আজ রবিবার অনেকটা নাকে খত দিয়ে সে টাকা হাতে হাতে ফেরত দিলো স্কুল কর্তৃপক্ষ।
দুদক সূত্রে জানা যায়, অভিযানে ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের সত্যতা পায় দুদক।
অতিরিক্ত আদায় করা টাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান হাওলাদার, সহকারী প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নাসরীন নাহারের যৌথ নামে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে (যাত্রাবাড়ী শাখা) গচ্ছিত রাখেন।
অভিযানের পর স্কুল কর্তৃপক্ষ বেআইনিভাবে আদায় করা ২১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেয়ার লিখিত অঙ্গীকার করে। দুদকের নির্দেশ অনুযায়ী আজ ২৫ নভেম্বর স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাকদের হাতে তাদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দেন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুজ্জামান হাওলাদার।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, যাত্রাবাড়ি আইডিয়াল স্কুল জেডিসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিশেষ ক্লাসের নাম করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে। তারা ফরম ফিলাপের বোর্ড ফি বিজ্ঞান বিভাগের ১৯’শ টাকা, মানবিক ও ব্যবসায় শাখা ১৭৫০ টাকাসহ মোট ৬৬০০ টাকা করে নিয়েছে। এতে অনেকে বাড়তি টাকা দিতে রাজি হয়নি। পরবর্তীতে দুদকের নিকট এ নিয়ে অভিযোগ করা হয়।
এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ি আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুজ্জামান হাওলাদার বলেন, আমরা মোটেই ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নিচ্ছি না। আমরা সরকারি পরিপত্রের আলোকে বিশেষ ক্লাসের জন্য সরকার নির্ধারিত ১২০০ টাকার সঙ্গে দুইটি মডেল টেস্টের জন্য ১০০০ টাকা নিচ্ছি। এখানে বাড়তি টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও যেহেতু এটা নিয়ে কথা উঠেছে তাই আমরা টাকা ফেরত দিয়ে দিচ্ছি। সরকার থেকে এ নিয়ে নির্দেশনা আছে এর বাইরে আমরা কিছু করি নি। ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা ২১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা আজ ছাত্র ছাত্রীদের ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এব্যাপারে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে এবিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা তা এখনি মন্তব্য করা যাচ্ছে না।
লায়লা আক্তার নামে একজন অভিভাবক তিনি বলেন, আমার ছেলের নাম হিমেল। তাকে আমি বিশেষ ক্লাস করাতে চাই। কারণ এই সময়টা সে স্কুলে কাটাচ্ছে। এতে করে আমিও নিশ্চিন্ত হচ্ছি। এখনকার ছেলে মেয়েরা বাবা ইয়াবাসহ নানা কিছুতে আসক্ত হচ্ছে। সেখান থেকে এটাতো ভালো। তারা তিনমাস স্কুলে আটকা থাকলো। পড়াশোনার মধ্যে থাকলো। এটাকে আমি ভালো মনে করছি।
তবে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে অনেকের মাঝে এ নিয়ে দ্বিমতও রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী তায়েবা বলেন, আমরা অনেকেই এ ধরণের বিশেষ ক্লাস চাই না। কারণ আমরা বাইরে প্রাইভেট পড়ি, অনেকের বাসায় শিক্ষক আছে। তাই এখানে আবার পড়ার ইচ্ছে নেই। আমাদের সাইন্স বিভাগের বেশিরভাগই বিশেষ ক্লাসের বিপক্ষে।
মানবিক শাখার ছাত্রী নাদিয়া আক্তার বলেন, তিনমাসে কোচিংসহ মোট আমরা ৬৬০০ টাকা দিচ্ছি এটা খুব বেশি না। আমরা আর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ কোচিং করতে চাই। যেহেতু আমাদের পরীক্ষা সামনে তাই স্কুলের এই বিশেষ ক্লাস আমাদের দরকার। কিন্তু এখানে বিজ্ঞান শাখার কেউ কেউ চাচ্ছে না। এ জন্য ঝামেলা তৈরি হয়েছে। আজকে আমাদের টাকা ফেরত দিয়ে দিচ্ছে।
এসি