ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন

প্রকাশিত : ১২:০৮ এএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৮ সোমবার

যাত্রা শুরু করলো শাহ আব্দুল করিম স্মৃতি জাদুঘর। গত ২৪ নভেম্বর শনিবার, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলায় বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের নিজ ভিটা উজানঢল গ্রামে নির্মিত এ জাদুঘর উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, পিকেএসএফ এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। 

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই জাদুঘরে অর্থায়ন করে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউণ্ডেশন (পিকেএসএফ) এবং বাস্তবায়নে ছিলো ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস)। এই বাউল শিল্পীর ব্যবহার্য জিনিষপত্র, বাদ্যযন্ত্র, সঙ্গীত এবং তার সম্পর্কিত ইতিহাস সংরক্ষিত হবে এই জাদুঘরে।

উদ্বোধন উপলক্ষ্যে জাদুঘর প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে শাহ আবদুল করিমের অবদান নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।

এ সময় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফ-এর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মুন্সি ফয়েজ আহমেদ, সাধারণ পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক শফি আহমেদ।

টিএমএসএস-এর নির্বাহী পরিচালক ড. হোসনে আরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জসীম উদ্দিন এবং সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. হারুন অর রশীদ।

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে শাহ আব্দুল করিমের একমাত্র সন্তান শাহ নূর জালাল ও তার দল এবং পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থা হীড বাংলাদেশ-এর সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধলআশ্রম গ্রামে ১৯১৬ সালে জন্ম বাংলা বাউল সঙ্গীতের কিংবদন্তী শাহ আব্দুল করিমের। ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গানে উঠে এসেছে সামাজিক অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী বার্তা। তার জীবনের প্রথমপর্বে সঙ্গীতের দীক্ষা ঘটেছিল বাংলা ভাবসাধক ও বাউল পরিমন্ডলে। প্রথম জীবনে তিনি বাউল, ভক্তিমূলক, জারি, সারি, রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পালাগান গেয়েছেন। কিন্তু পরিণত বয়সে তিনি গণসঙ্গীত রচনা ও পরিবেশনে খ্যাতি অর্জন করেন। সঙ্গীতজীবনের একদিকে তিনি ছিলেন গণচেতনার সঙ্গীত রচয়িতা, সুরকার ও গায়ক, অন্যদিকে ছিলেন বাউল-আঙ্গিকের সঙ্গীতশিল্পী।

শাহ আব্দুল করিম এ পর্যন্ত প্রায় দেড় সহস্রাধিক গান লিখেছেন এবং সুরারোপ করেছেন। সঙ্গীত প্রতিভার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন শাহ আবদুল করিম। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তিনি নানা পদক ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সিলেটের একটি বেসকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এই মহান শিল্পী।

কেআই/ এসএইচ/