দিনের কখন কী খাবেন কতোটুকু খাবেন : ইসরাত জাহান
প্রকাশিত : ০৬:৫২ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
ইসরাত জাহান
সুস্থতার কোন বিকল্প নেই। শারীরিকভাবে যদি মানুষ সুস্থ না থাকে তাহলে টাকা পয়সা, সম্মান, ক্ষমতা সব অর্থহীন হয়ে যায়। শারীরীক সুস্থতার যেমন পুষ্টিকর খাওয়ার খেতে হয় তেমনি মানতে হয় বেশ কিছু নিয়ম কানুন। এর অাগে অামরা সকালের নাস্তা নিয়ে অালাপ করেছি।
অাজকে অামরা অালাপ করব, দিনের কখন কী খেতে হয়। সকালের নাস্তার পর অামরা সাধারণত মিড মর্নিংয়ে খাই। বিশেষ করে যারা বাসায় থাকে তাদের জন্য মিড মর্নিংয়ে খাওয়া সহজ। অামি বলব মিড মর্নিংয়ে ফল জাতীয় খাবার খেতে। ফল জাতীয় খাবার ভালো হজম হওয়ার জন্য সকাল দশটা থেকে এগারোটা ভালো সময়। অায়ুর্বেদিকের ছাত্রী হিসেবে অামি জানি শারীরিক কার্যক্রম সূর্যের সঙ্গে জড়িত। সূর্য যতো উপরের দিকে উঠতে থাকে অামাদের হজম ক্ষমতা ততো বাড়তে থাকে। যখন সূর্য মাথার উপরে থাকবে তখন শরীর সবচেয়ে বেশী পাওয়ারাইজড থাকে। তখন যে খাবারটা খাবেন সেটা খুব তাড়িতাড়ি হজম হয়। এজন্য পশ্চিমারা সন্ধ্যার পর কোন ভারী খাবার খায় না।
যারা অফিস করে বা বাইরে যেতে হয় তারা সঙ্গে করে কোন ফল নিয়ে যেতে পারেন। সেটা অাপেল, পেয়ারা, নাশপাতি বা কলা হতে পারে। যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে এসময় কুসুম ছাড়া একটা সেদ্ধ ডিম খেতে পারেন।
দিনের গুরুত্বপূর্ণ খাবার দুপুরে খাবার বা মধ্যাহ্নভোজ। অবশ্যই দুপুর দুটা থেকে অাড়াইটার মধ্যে খেয়ে নেওয়া ভালো। অাপনার শরীরে ক্যালরি অনুযায়ী এ সময় দুই থেকে তিন কাপ ভাত নিতে পারেন। একশ গ্রাম ভাত থেতে একশ কিলো ক্যালরি অাসে। অাধা কাপ ডাল খাবেন। অাধা কাপ সবজি খাবেন। সালাদ রাখবেন। অবশ্যই লেবু নিবেন। মাছ বা মাংস থেকে যে কোন একটা নিবেন তবে তা অবশ্যই মাঝারি সাইজের।
অনেকে দুপুরের খাওয়ার পর চা খাওয়ার অভ্যাস অাছে। অামরা অবশ্যই সেই অভ্যাস ত্যাগ করব। কেননা, চা বা কফির যে ক্যাফেইন তা পুষ্টি কার্যকরে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।
সন্ধ্যায় অামরা একটা রং চা বা গ্রীনটি খেতে পারি। সঙ্গে লেক্সাস বিস্কুট থাকতে পারে। মুড়ি থাকতে পারে। চাইলে একমুঠো চীনাবাদাম খেতে পারি। এটা অামাদের শরীরের জন্য খুব দরকার।
রাতের খাবারটা অবশ্যই ন`টা থেকে সাড়ে ন`টার মধ্যে শেষ করা উচিৎ। রাতের খাবারটাও দুপুরের খাবারের মতোই হবে। তবে যারা ওজনটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তারা ওটস খেতে পারেন। ভাত খেতে পারেন তবে তা কম পরিমাণে। রুটিও খেতে পারেন।
বেডটাইম মিল হিসেবে যাদের ওজনের সমস্যা নেই তারা পাতলা করে একগ্লাস দুধ খেতে পারেন। যাদের ওজনের সমস্যা অাছে তারা টকদই বা মিষ্টিদই খেতে পারেন। সারাদিন চায়ের সাথে কালোজিরা খেতে পারেন।
খাবার বেশি খাওয়া যেমন উচিৎ নয় তেমনি কম খাওয়াও উচিৎ নয়। খেতে হবে প্রয়োজন অনুযায়ী ও পরিমাণ মতো। তবে যা পাব তাই খাব- এই মানসিকতা পরিহার করতে হবে।
লেখক: নিউট্রিশিয়ান ও ডায়াটেশিয়ানিস্ট, বিঅারবি হাসপাতাল।
আআ/এসএইচ/