ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

হাসপাতালে চুরি : অসহায় রোগী-স্বজনরা

অালী অাদনান

প্রকাশিত : ১০:৫৮ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:৪৮ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

শাহীনূর

শাহীনূর

রাজধানীর নামী-দামি হাসপাতালগুলোতে চুরির ঘটনা ঘটে থাকে প্রায়। আর এই চুরির শিকার হন সিংহভাগ গ্রাম থেকে আসা রোগী ও তার স্বজনরা। তারা এর প্রতিকারও পান না বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। আর এই চুরি রোধে নেই তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। গ্রাম থেকে আসা এই নিম্ন আয়ের মানুষরা জানেন না কিভাবে পুলিশের সহযোগিতা পেতে হয়। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পক্ষগুলো তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না এই চুরি রোধে বলে অভিযোগ করছেন অনেকেই।

বৃহস্পতিবার এমন একটি ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসার জন্য অাসা শাহীনূর নামে এক নারী তার রোগীর ব্যাগ চুরির অভিযোগ করেছেন। এর অাগেও এখানে এমন ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটার অভিযোগ পাওয়া গেলেও চুরি রোধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে ল্যাবএইড হাসপাতালের এ্যাসিস্টেন্ট জেনারেল ম্যানেজার সাইফুর রহমান লেনিন জানান, অামাদের পুরো হাসপাতালটি সিসিটিভি ক্যামেরার অাওতাভুক্ত। ফলে চুরি হওয়া মালামাল থানার সহায়তা নিয়ে সহজে উদ্ধার করা যায়। তিনি অারও বলেন, অামাদের হাসপাতালটার ( ল্যাবএইড হাসপাতাল) অবস্থান এমন এক জায়গায় যেখানে চারদিক থেকে লোক অাসে। দিনে প্রায় চার পাঁচ হাজার লোক অাসে। ফলে কিছু সমস্যা মাঝে মধ্যে হয়ে যায়।

ঘটনার বিবরণীতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে শাহীনূর নামে এক নারী ল্যাবএইড হাসপাতালে অাসেন চিকিৎসা নিতে। সঙ্গে অাড়াই বছরের একটি একটি শিশু সন্তান। হাসপাতালের তিন তলায় রোগীদের অপেক্ষা করার স্থানে চেয়ারের উপর ব্যাগ রেখে তিনি টয়লেটে গেলে ফিরে এসে দেখেন তার ব্যাগ নাই। তখন তিনি চিৎকার করে কান্না শুরু করেন। গ্রাম থেকে অাসা এই দরিদ্র্য নারী জানান, তার ব্যাগে এক হাজার ৭০০ টাকা, মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিশ ছিল। ব্যাগ চুরির ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি শাহীনূর নামে ওই নারী।

এমন ঘটনাগুলোতে কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীরা দায় নিতে অস্বীকার করেন। ল্যাবএইড হাসপাতালের ঘটনায় কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মী জানান, অামি কারো ব্যাগ পাহারা দিয়ে বসে থাকব না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ল্যাবএইড হাসপাতালসহ বড় বড় হাসপাতালগুলোতে প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে থাকে। কখনো কখনো সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হলেও অধিকাংশ সময় তা সম্ভব হয় না। হাসপাতালে অাসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী জানান, গ্রাম থেকে অাসা অনেক রোগী বুঝেই না সিসিটিভি ক্যামেরা কী? তাছাড়া কোথায় কীভাবে অভিযোগ করতে হবে তাও তারা বুঝে না। এ ব্যাপারে নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে কোন সহযোগিতা পাওয়া সম্ভব হয় না। তাই চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারের চেয়ে কোন মালামাল যেন চুরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।

ক্যাবের প্রেসিডেন্ট গোলাম রহমান বলেন, পাবলিক প্লেসে জিনিশ সবাইকে সতর্ক অবস্থায় রাখতে হবে। এ জন্য জনগণকে সচেতন হতে হবে এবং তার নিজের জিনিস নিজেকেই হেফাজতে রাখতে হবে। তবে হাসপাতালে জিনিশ চুরি হওয়ার দায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। রোগী বা রোগীর স্বজনের জিনিস দেখে রাখা তাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। 

অা অা// এসএইচ/