ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

সহকারী শিক্ষকদের হাতে লাঞ্চিত হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষ

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:১৯ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলম ও ট্রেজারার প্রফেসর ডঃ বিধান চন্দ্র হালদারকে লাঞ্চিত করেছে ইনক্রিমেন্টের দাবীতে আন্দোলনকারী সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা। কিন্তু ইউজিসি সাফ জানিয়ে দেয় ইনক্রিমেন্ট দেয়ার ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেই।   

বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে দুইটার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় রেজিস্ট্রিারের কক্ষের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬ টার সময় পদোন্নতি প্রাপ্ত ৫৭ জন শিক্ষক কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদারের কক্ষে গেলে ইনক্রিমেন্ট পাওয়া নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রক্টর অধ্যাপক খালেদ হোসেন ও ছাত্র পরামর্শক অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম এবং ৪ জন ছাত্রসহ ৬০ জনের বিরুদ্ধে মহিলা শিক্ষককে লাঞ্চিত, ছিনতাই ও অন্যান্য শিক্ষকদের মারধর করার অভিযোগে গত ২২ নভেম্বর থানায় একটি মামলা হয়। সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসান জামিল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এদিকে ঐ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলম কোতয়ালী থানায় একটি পাল্টা এজাহার জমা দিয়েছেন। যা গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রেকর্ড হয়নি। যাতে আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষকের নাম রয়েছে। এ নিয়ে পদোন্নতি প্রাপ্ত আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদারের কক্ষে যান । এ সময় ট্রেজারার শিক্ষকদেরকে রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পদোন্নতি প্রাপ্ত কতিপয় সহকারী শিক্ষকরা রেজিস্ট্রারের কক্ষে যান। সেখানে কথা বলে রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. শফিউল আলম লাঞ্চে যাওয়ার কথা বলে রুম থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় পিছন দিক থেকে পদোন্নতি প্রাপ্ত দুই জন সহকারী শিক্ষক রেজিস্ট্রারকে কিলঘুষি মারেন এবং হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে আসেন। পরে পদোন্নতি প্রাপ্ত কতিপয় সহকারী শিক্ষকরা রেজিস্ট্রারকে উদ্ধার করেন।

এ ব্যাপারে পদোন্নতি প্রাপ্ত রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহসীন আলী জানান, আমরা মামলার বিষয়ে প্রথমে কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদারের কক্ষে যাই। তিনি বিষয়টি নিয়ে রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. শফিউল আলমের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। সে কারণে আমরা রেজিস্ট্রারে সঙ্গে তার কক্ষে কথা বলতে যাই। তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলে লাঞ্চে চলে যান।সেখানে কোন ঘটনা ঘটেনি।

এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমি ক্লাস করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পাই আমাদের জুনিয়র কয়েকজন স্যার ট্রেজারার স্যারকে গলা ধাক্কা দিয়ে নিচে নামাচ্ছেন এবং রেজিস্ট্রার স্যার এর জামার কলার ধরে কিল ঘুষি মারতে মারতে নিচে নামাচ্ছিলেন। পাশাপাশি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস স্যারকেও গলা ধাক্কা দিয়ে নিচে নামাতে দেখেছি। এ সময় সেখানে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। আমি ঘটনাটি দেখার পর আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম।জুনিয়র শিক্ষকেরা কিভাবে নিজের স্বার্থের জন্য এত নিচে নামতে পারে। সিনিয়র স্যারদের উপর এরকম ন্যাক্কারজন হামলা করতেও তাঁরা দ্বিধা করে না ।নিজেকে খুব ধিক্কার জানাতে ইচ্ছে করছে যে আমি এমন শিক্ষকদের ছাত্র । তাদের ব্যবহার আমাদের কল্পনাকেও হার মানিয়েছে।’

এসি