জাতীয় আয়কর দিবসের উদ্বোধন
আয়কর প্রদানের হার বাড়ছে ৪ শতাংশ করে
প্রকাশিত : ১২:২৪ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ১২:২৬ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৮ শুক্রবার
আজ ৩০ নভেম্বর, শুক্রবার জাতীয় আয়কর দিবস। সারা দেশে একযোগে পালিত হচ্ছে দিবসটি। এ উপলক্ষ্যে আজ সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায়, জাতীয় রাজস্ব ভবনে ‘জাতীয় আয়কর দিবস ২০১৮’ উদ্বোধন করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, এনবিআর সদস্য কালিপদ হালদার, বাংলাদেশ ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েন সভাপতি এম এ গফুর মজুমদার, ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মতিন, অভিনেত্রী অপুবিশ্বাস, নাট্যাভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, ফেরদৌস, রিয়াজসহ সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের জাতীয় পর্যায়ের সেলিব্রেটি, আয়কর আইনজীবী, সংবাদকর্মীসহ সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এনবিআরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আয়কর দিবস আমাদের দেশে একটা উৎসবে পরিণত হয়েছে। গত দুইবছর ধরে আয়কর প্রদানের হার ৪ শতাংশ হারে বাড়ছে। মানুষের মধ্যে এখন আয়কর প্রদানের বিড়ম্বনা, ভীতি ও সব ধরণের প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে। মানুষ এখন সহজভাবে স্বল্প সময়ে কর দিতে পারছে। কর প্রদানের এ অভাবনীয় উদ্দীপনা ও আগ্রহ পৃথিবীর অন্যদেশের কাছে গর্ব করে বলার মতো বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, কর প্রদানে আমাদের এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এটাকে পরিপূর্ণ ডিজিটালাইজড করা। তবে এ কার্যক্রমে শুরু হয়েছে।আগামীতে এটাকে আরও এগিয়ে নিতে আমাদের নানাবিধ উদ্যোগ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
এনবিআর সদস্য কালিপদ হালদার বলেন, গত ১০ বছরে দেশে কর আদায় দশগুণ বেড়েছে। দেশে এখন ৩৮ লাখ লোক করের আওতায় এসেছে।আয়কর প্রদান করে মানুষ এখন গর্ববোধ করে। এটা গর্বের বিষয়।
আয়কর বিষয়ে জনসচেতনা বৃদ্ধি করার লক্ষ্য ২০০৮ সাল থেকে এ দিনটি উদযাপন করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর আয়কর দিবস উদযাপিত হলেও ২০১৬ সাল থেকে ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালন করছে সংস্থাটি।
এবার ‘আয়কর প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ধারাবাহিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এনবিআর সারাদেশে দিবসটি উদযাপনের কর্মসূচি নিয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনের কারণে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবার এনবিআর থেকে র্যালির আয়োজন করা হয়নি।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, আয়কর কেবল রাজস্ব আহরণের প্রধান খাতই নয়, এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কার্যকরী মাধ্যম। প্রত্যক্ষ কর বা আয়কর পৃথিবীর সব উন্নত রাষ্ট্রের প্রধান রাজস্ব উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়।
তিনি আয়কর মেলা ও আয়কর দিবস আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশে কর সংস্কৃতির লালন ও বিকাশ ত্বরান্বিত হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, কর আহরণের পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার ও সমতা নিশ্চিত করাই কর বিভাগের প্রধান কাজ। দেশে রাজস্ববান্ধব সংস্কৃতি গড়ার লক্ষ্যে এনবিআরের উদ্ভাবনী কর্মসূচির ছোঁয়া জাতীয় পর্যায় থেকে গ্রাম পর্যায়ে বিস্তৃত হয়েছে।
তিনি এনবিআর রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে আরও কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, করদাতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী এবার এক ছাদের নিচে করসেবা প্রদানের মধ্যে দিয়ে ১৩ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলা শেষ হলেও এর সেবাকার্যক্রম আগামী ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে সাত দিন, ৫৬টি জেলা শহরে চার দিন, ৩২টি উপজেলায় দুই দিন এবং ৭০টি উপজেলায় এক দিনব্যাপী আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর মেলায় করদাতাদের অভূতপূর্ব সাড়া কর আহরণে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে। সাত দিনে দুই হাজার ৪৬৮ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৯৫ টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে।
এবার তিনটি ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড এবং ১৪১ জন করদাতাকে সর্বোচ্চ ও দীর্ঘমেয়াদি কর প্রদানের ভিত্তিতে সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়।
আরকে//