ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

জার্মানির মুসলিম অনুষ্ঠানে শুকরের মাংস, অতপর..

প্রকাশিত : ০৯:০৯ এএম, ১ ডিসেম্বর ২০১৮ শনিবার

জার্মানির একটি মুসলিম সম্মেলনের খাদ্য তালিকায় শুকরের মাংসের সসেজ থাকায় দুঃখ প্রকাশ করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে বার্লিনে ওই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বিভিন্ন ধর্মের মানুষজনের কথা চিন্তা করে ওই খাবারগুলো বাছাই করা হয়েছিল। তবে কেউ যদি ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত পেয়ে থাকেন তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা হলো।  

এই অনুষ্ঠানটির আয়োজিত হয় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট শিহোফেরের উদ্যোগে, যিনি গত মার্চ মাসে মন্তব্য করেছিলেন যে, `জার্মানিতে ইসলাম খাপ খায়না।`

ওই ইসলামিক সম্মেলনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ ব্যক্তি মুসলমান ছিলেন বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। ইসলাম ধর্ম অনুসারে, শুকর খাওয়া মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ।

যে সসেজটি ওই অনুষ্ঠানে খেতে দেওয়া হয়েছিল, তার স্থানীয় নাম ``ব্লাড সসেজ``-যেটি শুকরের রক্ত এবং মাস দিয়ে তৈরি করা হয়।

এ ঘটনার পর জার্মানির সাংবাদিক টেনচে ওযডামার তার টুইটারে লিখেছেন, `শিহোফেরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমে কি বার্তা দিতে চায়? যারা শুকর খায় না, সেই মুসলমানদের জন্য খানিকটা শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত।`

জানা যাচ্ছে, সম্মেলনের শুরুতে শিহোফের মন্তব্য করেছেন যে, তিনি জার্মানিতে `জার্মান ইসলাম` দেখতে চান।

সাংবাদিক ওযডামার লিখেছেন,  ‘শিহোফেরের এরকম আত্মম্ভরি আচরণের মাধ্যমে `জার্মানির মুসলমানদের বেশিরভাগের কোন সমর্থন পাওয়া যাবে না।`

এসব সমালোচনার মুখে জার্মান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই অনুষ্ঠানের খাদ্য তালিকায় ১৩ রকমের খাবার ছিল। যার মধ্যে হালাল, নিরামিষ, মাংস এবং মাছ ছিল। সব খাবার বুফেট পদ্ধতিতে খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল এবং কোনটা কি খাবার, তা পরিষ্কারভাবে লেখা ছিল।

জার্মানির কিছু সংবাদপত্র লিখেছে, ২০০৬ সালে জার্মানির প্রথম ইসলামিক কনফারেন্সে হ্যাম আকারে শুকরের মাংস দেওয়া হয়েছিল।

গত মার্চ মাসের মন্তব্যে  শিহোফের বলেছিলেন, `জার্মানিতে ইসলাম খায়না, কারণ খৃষ্টান ধর্মের আদলেই জার্মানি গড়ে উঠেছে।` ধারণা করা হয়, চরম ডানপন্থী ভোটারদের আকৃষ্ট করতেই তিনি ওই মন্তব্য করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, `যে মুসলমানরা আমাদের মধ্যে বসবাস করছেন, তারা অবশ্যই জার্মানি...কিন্তু তার মানে এই নয় যে, অন্যদের জন্য ভুলভাবে ভাবতে গিয়ে আমরা নিজেদের রীতি বা ঐতিহ্যকে জলাঞ্জলি দেবো।‘

তবে গতমাসে ব্যাভারিয়ার নির্বাচনে শিহোফেরের ক্রিশ্চিয়ান সোস্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ) দল বড় ধরণের পরাজয়ের মুখে পড়েছে।

বিবিসির জার্মানি সংবাদদাতা বলছেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, অভিবাসীদের নিয়ে তার কঠোর বাক্য এবং নীতি যেন তাদের জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

 

এমএইচ/