ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

চবি শিক্ষার্থীদের খরচ কমাবে জোবাইক

জুবাইর উদ্দিন, চবি

প্রকাশিত : ০৩:১১ পিএম, ১ ডিসেম্বর ২০১৮ শনিবার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক নম্বর গেট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি, ইনস্টিটিউট বা আবাসিক হলে ১৫ থেকে ৩০ টাকা খরচে নিজ গন্তব্যে যেতে হতো। এখন আর এত টাকা খরচে নিজ গন্তব্যে যেতে হবে না।

এখন থেকে মাত্র তিন টাকায় নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেবে মোবাইল অ্যাপ ভিত্তিক সাইকেল শেয়ারিং সার্ভিস ‘জোবাইক’। তবে এর জন্য ৫ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড সময়ের ভেতর নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। এর চেয়ে বেশি সময় নিলে পরবর্তী ৫ মিনিটের জন্য আবারও তিন টাকা লাগবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট, জিরো পয়েন্ট, শহীদ মিনার, বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও হলের সামনেসহ ১২টি স্থানে পাওয়া যাবে এ সব সাইকেল।

গত কয়েকদিন কমেন্ট ও ম্যাসেজের মাধ্যমে অনেকেই জোবাইক সাইকেল শেয়ারিং কীভাবে কাজ করবে জানতে চেয়েছেন।

যেভাবে ব্যবহার করা যায়: জোবাইক অ্যাপস দিয়ে সাইকেলের গায়ে লাগানো কিউআর কোড স্ক্যান করলে সাইকেলের লক খুলে যাবে এবং গন্তব্যে যাওয়ার পর যে কোনও মুক্ত স্থানে পার্ক করে লকটি আটকিয়ে দিতে হবে। জোবাইকের মালিকানায় ক্যাম্পাসে সাইকেল থাকবে।

যেভাবে টাকা কাটবে: একাউন্টে আগে থেকে রক্ষিত টাকা থেকে টাকা কেটে রেখে দেওয়া হবে। একাউন্ট হ্যান্ড ক্যাশ দিয়ে রিচার্জ করা যাবে। ঠিক যেভাবে মোবাইল নম্বর রিচার্জ করা হয় সেভাবে কিন্তু ভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে।

পরিবেশ বান্ধব, স্বাস্থ্যকর এবং গ্রিন এই ট্রান্সপোর্টেশন ব্যবস্থা চীন, সিঙ্গাপুরসহ ইউরোপের দেশগুলোতে বেশ জনপ্রিয় এ সাইকেল শেয়ারিং। ছেলে-মেয়ে উভয়ের ব্যবহার উপযোগী হিসেবে তৈরি জোবাইকের স্মার্ট এই সাইকেলের সঙ্গে আছে অত্যাধুনিক লক, সোলার প্যানেল এবং জিপিএস পদ্ধতি।

ইতিমধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকেল শেয়ারিং চালু হয়েছে। সেখানে বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে এ সার্ভিস। তবে এ জন্য প্রথমে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাপটি ব্যবহার করে যে কেউ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসের ভেতরে সাইকেলের সঙ্গে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করলে ওই ১২ জায়গায় সাইকেল পাওয়া যাবে।

জোবাইকের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট ইসতিয়াক আহমেদ শাওন একুশে টিভি অনলাইনকে জানান, ক্যাম্পাসে বিদ্যমান পরিবহন সংকট নিরসনের পাশাপাশি দেশের ট্যুরিজম ইন্ড্রাস্ট্রি এবং দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশনসহ সবদিক চিন্তা করেই আমাদের জোবাইক পদ্ধতি চালু করা।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এক হল থেকে অন্য হলে এবং হল থেকে ক্লাসে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যানবাহন সহজলভ্য করতে সাইকেল শেয়ারিং সেবা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। গন্তব্যে যাওয়া ছাড়াও অনেকে এই সাইকেল শরীর চর্চার মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবে।

জোবাইকের চটগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় লিডার মাইনুল ইসলাম একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, ১৫ দিনের ভেতরে আমাদের জোবাইক পদ্ধটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হবে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অনুমতিও নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, এক নম্বর গেট থেকে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ, কলা ফ্যাকাল্টি পর্যন্ত অটোরিকশা করে যেতে ৩০ টাকা আর সিএনজি অটোরিকশায় ১২ টাকা খরচ হয়। আবার জিরো পয়েন্ট থেকে ওইসব জায়গায় অটোরিকশা করে ১৫ টাকা আর সিএনজি অটোরিকশা করে ৬ টাকা খরচ হয়। সাইকেল শেয়ারিং সার্ভিস চালু হলে জিরো পয়েন্ট থেকে ৫ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে পৌঁছালে ৩ টাকা আর এক নম্বর গেট থেকে ১০ মিনিট সময়ের মধ্যে পৌঁছালে খরচ পড়বে মাত্র ৬ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মিজবাহ বলেন, যেখানে প্রতিদিন শুধু ক্যাম্পাসে পরিবহন খরচ ৩০ থেকে ৫০ টাকা যেত, এ সাইকেল সার্ভিস চালু হলে সর্বোচ্চ খরচ হবে ১৫ টাকা। যা একজন শিক্ষার্থীর জন্য অনেক বড় পাওয়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নিয়াজ মোরশেদ রিপন একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, এ জোবাইক ব্যবস্থা পরিবেশ বান্ধব, স্বাস্থ্যকর এবং গ্রিন ট্রান্সপোর্টেশন। তারা আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে। এ সার্ভিস চালু হলে একদিকে যেমন খরচ কম পড়বে অন্যদিকে পরিবহন সংকটও মিটবে।

একে//