টাইগারদের সিরিজ জয়ে রেকর্ডের পর রেকর্ড
প্রকাশিত : ০৯:২৪ পিএম, ২ ডিসেম্বর ২০১৮ রবিবার
বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক রেকর্ড নিজেদের দখলে নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু এবার উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে এক জুলি রেকর্ড নিজেদের করে নিয়েছে স্টিভ রোডসের শিষ্যরা।
খেলার মাঠে গত ৯ বছরে মাহমুদউল্লাহ যা করতে পারেনি, এই সিরিজে তাই করে দেখিয়েছেন তিনি। দেশের ৯৪তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হওয়া সাদমান ইসলামও ক্যারিয়ারের প্রথম ইনিংসে ১৯৯ বলে ৭৬ রান করে অভিষেকে সবচেয়ে বেশি বল খেলা ওপেনিং ব্যাটসম্যানের রেকর্ড দখল করে নেন তিনি। এছাড়াও টেস্টে নিজের পারফরম্যান্সকেই পেছনে ফেলে দেশের হয়ে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড নতুন করে গড়েছেন তরুণ অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক উইন্ডিজ সিরিজে অর্জন করা সব রেকর্ড।
* এ টেস্টে কোন পেসার না নিয়েই একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। একাদশে চারজন জেনুইন স্পিনার নিয়ে দল গঠন করে টিম ম্যানেজমেন্ট। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এর আগে পেসার ছাড়া কোন দল মাঠে নেমেছিল একবার।
* এ নিয়ে টেস্টে পাঁচবার সিরিজ সেরা হলেন সাকিব। ২০০ টেস্টের ক্যারিয়ারে টেন্ডুলকারও পাঁচবার সিরিজ সেরা হয়েছেন। সে অর্জনে টেন্ডুলকারের পাশে নাম লিখিয়েছেন সাকিব।
* ঢাকা টেস্টে ক্যারিবীয়দের ইনিংস ও ১৮৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এটিই স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংস ব্যবধানে জয়। সবচেয়ে বড় জয়ও। এর আগে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় ছিল ২২৬ রানে। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ ব্যবধানে জেতে তারা।
ব্যাটিংয়ে রেকর্ড:
* ১৪৫ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এক ইনিংসে কোনো দলের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের দুই অঙ্কের রান করার নজির আছে ১৪বার। এর মানে ১১ জন ব্যাটসম্যানই কমপক্ষে ১০ রান করেছে। এ টেস্টে তা-ই করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ।
* এ টেস্টে বাংলাদেশের ৯৪তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয়েছে সাদমান ইসলামের। ক্যারিয়ারের প্রথম ইনিংসে ১৯৯ বলে ৭৬ রান করেন তিনি। ফলে অভিষেকে সবচেয়ে বেশি বল খেলা ওপেনিং ব্যাটসম্যান বনে গেছেন।
* টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয়বার ও সবমিলিয়ে নবমবার ৫০০ রান ছাড়াল বাংলাদেশের ইনিংস।
* বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে মিরপুরে টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি পেলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিদেশীদের মধ্যে মিরপুরে টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি আছে ভারতের শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবির, শীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইরান পাওয়েল, জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলরের।
* বাংলাদেশের মাটিতে সাতে নেমে মাহমুদুল্লাহ এর ১৩৬ রান দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ ১৪৩ রান নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালামের।
বোলিংয়ে রেকর্ড:
* ২৯ রানে পড়েছে উইন্ডিজের ৫ম উইকেট। টেস্টে এই প্রথম বাংলদেশ ৩০ রানের নিচে প্রতিপক্ষের ৫ম উইকেট পেল। পূর্বের রেকর্ডটাও এই সিরিজের, চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল উইন্ডিজ।
* ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ইনিংস মিলিয়ে মোট ৪০ উইকেট ভাগ করেছেন বাংলাদেশের ‘স্পিন চতুষ্টয়’—মিরাজ, সাকিব, তাইজুল ও নাঈম। এই ভাগাভাগিতেই হয়েছে রেকর্ডটি। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এই প্রথম প্রতিপক্ষ দলের সবগুলো উইকেট নিলেন স্পিনাররা।
* ঢাকা টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানই বোল্ড আউট হন। এ নিয়ে ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটের ইতিহাসে এ ঘটনা ঘটনা ঘটলো তৃতীয়বার। সবশেষ ১৮৯০ সালে ওভাল টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম ৫ ব্যাটসম্যানই সরাসরি বোল্ড আউট হন।
* মেহেদী হাসান মিরাজ প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন ৫৮ রানে ৭ উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৯ রানে ৫টি। ১১৭ রানে ১২ উইকেট, বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচে সেরা বোলিংয়ের কীর্তি এটি।
উল্লেখ্য, গোটা সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম করে সিরিজসেরা হয়েছেন সাকিব আল হাসান। তবে শেষ ম্যাচে আলো ছড়ানোই নাম চলে আসছে মেহেদী হাসান মিরাজের। প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন ৫৮ রানে ৭ উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৯ রানে ৫টি। ১১৭ রানে ১২ উইকেট, বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচে সেরা বোলিংয়ের কীর্তি এটি। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতে।
এসি