নির্বাচনের আগে জাপা মহাসচিবকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ
প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮ সোমবার
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক ব্যস্ততার মধ্যেই রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিবের পদ থেকে সরিয়ে এই পদে সরকারের প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে নিয়োগ দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
জাতীয় পার্টির একজন সিনিয়র নেতা বিবিসিকে বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন নিয়ে দরকষাকষির সময় জাতীয় পার্টিতে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে খোদ দলীয় নেতাদের মধ্য থেকেই।
দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কয়েকজন প্রকাশ্যে এ সংক্রান্ত অভিযোগ আনেন এবং তাদের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন রুহুল আমিন হাওলাদার।
আবার এই কথিত মনোনয়ন বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে এরশাদের নাম গণমাধ্যমে উঠে আসায় নিজের ও দলের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থেই রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে দিয়েছেন এরশাদ - এমনটাই জানিয়েছেন ওই নেতা।
দলের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মনোনয়ন নিয়ে যা ঘটেছে তাতে জেনারেল এরশাদ ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
‘স্যার চেয়েছিলেন বাবলু চট্টগ্রাম থেকে মহাজোটের প্রার্থী হোক। কিন্তু তাকে কক্সবাজারে দেওয়া হয়েছে এবং পরে রংপুরের একটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী করা হয়েছে। আবার বাবলুর গাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এ সব ঘটনায় এরশাদ মহাসচিবের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন’।
তাকে কেন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কিংবা মনোনয়ন বাণিজ্য সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে তার স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্না বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন। জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নাসরিন জাহান রত্না বলেছেন, তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনা এ সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তিনি বলেন, ‘মহাসচিব পরিবর্তন করেছেন পার্টির চেয়ারম্যান এবং সে এখতিয়ার উনার আছে’।
প্রসঙ্গত, সাবেক সেনা প্রধান এইচ এম এরশাদ যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন থেকেই জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন রুহুল আমিন হাওলাদার। তবে মহাসচিব হিসেবে তার পদচ্যুতির ঘটনা এর আগেও ঘটেছিল। এরশাদ সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী প্রথম মহাসচিব হয়েছিলেন ২০০২ সালে। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ সালের এপ্রিলে তাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন এরশাদ। কিন্তু এর দুই বছর পরই ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তাকে আবার মহাসচিব নিযুক্ত করেন এরশাদ। আর এবার তাকে সরিয়ে এরশাদ তার জায়গায় তুলে আনলেন মশিউর রহমান রাঙ্গাকে, যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী।
সূত্র: বিবিসি
একে//