ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

নিয়মিত কারি পাতা খেলে ৯ উপকার মিলবে

প্রকাশিত : ০২:১৮ পিএম, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০২:২১ পিএম, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

জাপানি বিজ্ঞানিদের করা একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, কারি পাতায় উপস্থিত ‘কার্বাজল অ্যাসকালোয়েড’ নামক একটি উপাদান, শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে একের পর এক ক্যানসার সেলেরা সব মারা পরতে শুরু করে। ফলে এই মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। বিশেষত কলোরেকটাল, লিউকেমিয়া এবং প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে থাকে না বললেই চলে। তবে এমন উপকার পেতে ৩০-৪০ টা কারি পাতা পরিমাণ মতো পানিতে ফেলে পানিটা ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর পাতাগুলো ছেঁকে নিয়ে সেই পানিতে এক চামচ মধু এবং অল্প করে লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে হবে। প্রতিদিন যদি এমনটা করতে পারেন, তাহলে দেখবেন উপকার মিলতে সময় লাগবে না। তা ছাড়া নিয়মিত নানাভাবে যদি কারি পাতা খাওয়া শুরু করা যায়, তাহলে যে শুধু ক্যানসার রোগই দূরে থাকে, তা নয়, সেই সঙ্গে আরও একাধিক শারীরিক উপকারও পাওয়া যায়। যেমন ধরুন-

দৃষ্টি শক্তির উন্নতি ঘটে

কারি পাতায় উপস্থিত আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ এবং আরও নানাবিধ মিনারেল এবং ভিটামিন শরীরে প্রবেশ করার পর দেহের ভিতরে এমন কিছু রদবদল ঘটায় যে তার প্রভাবে চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ড্রাই আই এবং দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও দূর হয়। প্রসঙ্গত, দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটাতে কারি পাতা খাওয়ার পাশাপাশি আরও একভাবে এই প্রাকৃতিক উপাদানটিকে কাজে লাগাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো কারি পাতা নিয়ে চোখের উপর রাখতে হবে। তবে এই সময় চোখটা যেন বন্ধ থাকে। এভাবে দশ মিনিট থাকার পর পাতাগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। এভাবে প্রতিদিন চোখের পরিচর্যা করলে দেখবেন উপকার পাবেন একেবারে হাতে-নাতে!

হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে

প্রাচীন আয়ুর্বেদিক পুঁথিতে উল্লেখ পাওয়া যায়, কারি পাতায় উপস্থিত ল্যাক্সেটিভ প্রপাটিজ শুধু যে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়, তা নয়। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদনদেরও বের করে দেয়। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে। তাই যারা প্রায়শয়ই বদ-হজমের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাদের কারি পাতাকে সঙ্গী বানানো মাস্ট!

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি মেটে

এই উপাদানটির মাত্রা শরীরে যত বাড়তে শুরু করে, তত একাধিক রোগ দূরে থাকতে বাধ্য হয়। তাই সুস্থ শরীরের স্বপ্ন পূরণ করতে নিয়মিত কারি পাতা খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটির ভিতরে প্রচুর মাত্রায় মজুত রয়েছে এই উপাদানটি, যা নিমেষে দেহের ভিতরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

পেট খারাপের চিকিৎসায় কাজে লাগে

সকাল-বিকাল বাইরে খাওয়ার অভ্যাস আছে নাকি? তাহলে পেটকে ঠাণ্ডা রাখতে নিয়মিত কারি পাতাও থাওয়া উচিত। কেন এমন উপদেশ দেওয়া হচ্ছে, তাই ভাবছেন নিশ্চয়? আসলে নিয়মিত কারি পাতা খাওয়া শুরু করলে পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে ডায়ারিয়ার প্রকোপ কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে কারি পাতার ভিতরে উপস্থিত কার্বেজল অ্যালকালয়েড নামক উপাদান এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

লিভার চাঙ্গা হয়ে ওঠে

প্রায় প্রতিদিনই কি অ্যালকোহল সেবন করেন? তাহলে তো নিয়মিত কারি পাতা খাওয়াও মাস্ট! কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং ক্ষতিকর টক্সিনের হাত থেকে লিভারকে রক্ষা করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে লিভারের উপর অ্যালকোহলের কুপ্রভাবও পরে কম। এখন প্রশ্ন হল, লিভারের উপকারে কিভাবে খেতে হবে কারি পাতা? এ ক্ষেত্রে এক কাপ কারি পাতার রসে এক চামচ ঘি, অল্প পরিমাণে চিনি এবং গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।

ত্বকের সংক্রমণের প্রকোপ কমায়

শুনে অবাক হচ্ছেন? হবেন না! কারণ কারি পাতায় উপস্থিত শক্তাশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল প্রপাটিজ যে কোনও ধরনের স্কিন ইনফেকশন কামতে দারুন কাজে লাগে।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে

খাবারে দিয়ে প্রতিদিন কারি পাতা খেলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক লেভেলের উপরে যাওয়ার সুযোগ পায় না। এখানেই শেষ নয়, কারি পাতায় উপস্থিত ফাইবারও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

হার্টের ক্ষমতা বাড়ে

কারি পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার খারপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চলে এলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জার্নাল অব চাইনিজ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে কারি পাতা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা তো কমেই, সেই সঙ্গে ভাল কোলেস্টরলের পরিমাণও বাড়তে শুরু করে। ফলে হার্টের কর্মক্ষমতার উন্নতি ঘটে।

অ্যানিমিয়ার মতো রোগকে দূরে রাখে

ফলিক এবং আয়রনে ভরপুর এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করার পর লহিত রক্ত কনিকার মাত্রা এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে অ্যানিমিয়ার মতো রোগ বেশিদিন দাপাদাপি করার সুযোগই পায় না। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে একটা খেজুরের সঙ্গে ২টি কারি পাতা খেলেই উপকার মেলে।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

একে//