ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

নিয়মিত দারচিনি গুঁড়া খেলে ৯ উপকার মিলবে

প্রকাশিত : ১২:৫৫ পিএম, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮ বুধবার

ছোট-বড় নানা রোগ যাতে ঘাড়ে চেপে বসতে না পারে, তার বন্দোবস্ত করাটা আগে প্রয়োজন। কারণ এমনটা করলে শরীর আর অসুস্থ হবে না। ফলে ডাক্তারের আর প্রয়োজন পরবে না। এখন প্রশ্ন হল নানা রোগ থেকে বাঁচাতে শরীরকে শক্তপোক্ত বানানো যায় কীভাবে? এ ক্ষেত্রে উপায় তো অনেক অছে, তবে কম খরচে যদি ফল পেতে চান, তাহলে একটি প্রাকৃতিক উপাদানের উপর ভরসা রাখতে পারেন, যাকে সবাই দারচিনি নামে চিনে থাকি। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ডায়াটারি ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং নানাবিধ ভিটামিনে ভরপুর এই প্রকৃতিক উপাদানটি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে আরও একাধিক উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন-

রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত দারচিনি খাওয়া শুরু করলে দেহের ভিতরে একদিকে যেমন উপকারি কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, তেমনি কমতে শুরু করে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। তাই অল্প বয়সেই হার্টের রোগে আক্রান্ত হতে যদি না চান, তাহলে দারচিনির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে দেরি করবেন না যেন!

দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটাতে সাহায্য় করে

সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন নাকি? তাহলে চোখকে বাঁচাতে নিয়মিত দারচিনি খাওয়া চাইই চাই! কারণ এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খাওয়া শুরু করলে দেহে এমন কিছু উপাদানের প্রবেশ ঘটে যে তার প্রভাবে চোখের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, ড্রাই আই-এর মতো চোখের রোগের চিকিৎসাতেও দারুন কাজে আসে দারচিনি।

অ্যালঝাইমারের মতো রোগকে দূরে রাখে

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রেন সেলের কর্মক্ষমতা কমতে থাকে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু সেল শুকিয়ে যেতেও শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কের কগনিটিভ ফাংশন তো কমেই, তার পাশাপাশি ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমারসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, এমনটা কিন্তু আপনার সঙ্গেও হতে পারে। তাই সময় থাকতে থাকতে দারচিনি খাওয়া শুরু করুন। এমনটা করলে দেখবেন বয়স বাড়লেও তার প্রভাব মস্তিষ্কের উপর পরবে না। আসলে দারচিনির ভিতরে থাকা বেশ কিছু উপাদান নিউরনদের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ব্রেনের মোটোর ফাংশনে এতটা উন্নতি ঘটায় যে কগনিটিভ ডিজেনারেশন বা মস্তিষ্কের বুড়ো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

রোগ-জীবাণুর আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা মেলে

দারচিনিতে থাকা সিনেমেলডিহাইড নামক একটি এসেনশিয়াল অয়েল দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটা শক্তিশালী করে দেয় যে কোনও ধরনের জীবাণুই ধারে কাছে ঘেঁষার সাহস পায় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।

হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে

দারচিনির মধ্যে থাকা একাধিক উপাকারি উপাদান রক্তচাপ স্বাভাবিক করার পাশাপাশি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার এই দুটি রোগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসলে হার্টের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও চিন্তাই থাকবে না। সেই কারণেই তো যাদের পরিবারে এইসব মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের নিয়ম করে দারচিনি খাওয়ার পরামর্শ দেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকেরা।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি মেটে

শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে যে যে উপাদানগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তার মধ্যে অন্যতম। শুধু তাই নয়, শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দিয়ে ক্যানসারের মতো রোগকে দূরে রাখতেও এই উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর দারচিনি, সেই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রাই বৃদ্ধি করে শরীরের ভিতরে। এবার নিশ্চয় বুঝতেই পারছেন প্রতিদিন চারচিনির খাওয়ার প্রয়োজন কতটা।

ক্যানসারের মতো মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দারচিনির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যানসার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।

দেহের ভিতরে প্রদাহ হ্রাস পায়

দেহের ভিতরে প্রদাহের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ণ কোষেদের ক্ষতি হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই তো শরীরে যাতে কোনওভাবে প্রদাহের মাত্র বৃদ্ধি না পায়, সে দিকে খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজটি করবেন কিভাবে? প্রতিদিন নিয়ম করে দারচিনি খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে! আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির শরীরে একাধিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকে, যা প্রদাহ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে

নিজেকে এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের ডায়াবেটিসের মার থেকে বাঁচাতে দারিচিনির সঙ্গে বন্ধুত্ব করা মাস্ট! কারণ এই মশলাটি শরীরে প্রবেশ করার পর বিশেষ কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, যারা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের উৎপাদনও বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

একে//