চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটের কবলে আইএমএল এর শিক্ষার্থীরা
চবি সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০৫:১৭ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ সোমবার
ক্যাম্পাস জীবন যেন শেষ হচ্ছে না চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের (আই এম এল) শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষক স্বল্পতা শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার প্রতি অনীহা, নিয়মিত বিভাগীয় প্রধান না থাকা, শ্রেণি কক্ষ সংকট ও ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতায় লাগাম ছাড়া হচ্ছে ইনস্টিটিউটের সেশনজট।
২০০৮ সালে বিভাগটি আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু করে। ১ম দিকে বিভিন্ন ভাষার উপর ডিপ্লোমা কোর্স চালু ছিল। ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে এই বিভাগে অনার্স কোর্স চালু হয়।
বর্তমানে অনার্স কোর্সের ছয়টি ব্যাচে ২৮৮ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। এছাড়াও ৮টি ভাষা কোর্সের অধীনে নিয়মিত অনিয়মিত মিলে প্রায় ৯০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে মাত্র ১৩জন শিক্ষক। যার মধ্যে ২জন শিক্ষা ছুটিতে।
অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত ৪ বছরের স্নাতক কোর্স ৫-৬ বছরেও শেষ হচ্ছে না। এতে হতাশায় নিমজ্জিত এসব শিক্ষার্থীরা আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি দিন দিন পিছিয়ে পড়ছেন।
সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, সেশনজটের কারণে বিভাগটির প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর সম্পন্ন হয়েছে যারা তাদের ২৪ মাসের, ২০১৩-১৪ সালের ২য় ব্যাচ ১৮ মাসের, ২০১৪-১৫ সালের ৩য় ব্যাচ ও ২০১৫-১৬ সালের ৪র্থ ব্যাচ ১৩ মাসের এবং ২০১৬-১৭ সালের ৫ম ব্যাচ ৬ মাসের সেশনজটে আছেন।
ব্যাচ ভেদে তারতম্য থাকলেও সেশনজট বছর ছাড়িয়ে গেছে। ১ম ব্যাচের অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা ৬ মাস আগে শেষ হলেও এখনও ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। ফলাফল প্রকাশিত না হওয়ায় পরীক্ষা নেওয়া যাচ্ছে না পরবর্তী ব্যাচের।
তাছাড়া ২য় ব্যাচের পরীক্ষা জুন মাসে শেষ হলেও ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি। ৩য় ব্যাচের পরীক্ষাও এখনও শেষ হয়নি। যাদের এখন ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার কথা। তাছাড়া ২য় বর্ষে একসাথে এখন ৩টি ব্যাচ।
বিভাগের ১ম ব্যাচের কয়েক শিক্ষার্থী জানান, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েও এখনও স্নাতক সম্পন্ন হয়েছে মাত্র। স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে কত সময় লাগবে ঠিক জানি না।
এছাড়া প্রকট আকার ধারণ করেছে শিক্ষক এবং শ্রেণি কক্ষ সংকট। বিভাগটির শ্রেণিকক্ষ রয়েছে মাত্র ১টি। শিক্ষার্থীদের ক্লাসের সুবিধার্থে গ্যালারিতে ক্লাস নেওয়া হলেও অনেক সময় বিদ্যুৎ না থাকলে ক্লাস করানো হয়ে উঠে না। অনেক সময় অন্য বিভাগকে সুযোগ দিতে গিয়ে অর্ধেক সময়ে রুম ছেড়ে দিতে হয়। সেই সাথে সেমিনার লাইব্রেরি না থাকায় শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।
বিভাগটির একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানান, শিক্ষক স্বল্পতা এবং শ্রেণি কক্ষ সংকটের কারণে বিভাগটি আরও ভয়াবহ সেশনজটে পড়তে যাচ্ছে।
বিভাগের সভাপতি সাবরিনা ইসলাম সুইটি জানান, আমাদের পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। পর্যাপ্ত জনবল নেই। মাস্টার্স, অনার্স ও বিভিন্ন ভাষা কোর্স মিলে হাজারের অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এদেরকে নিয়মিত পাঠদান করতে পারছি না শুধুমাত্র শ্রেণিকক্ষের অভাবে।
সেমিনার লাইব্রেরি ও রুম সংকট নিয়ে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন সেকান্দর চৌধুরী বলেন, অনুষদে পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় সমস্যা সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। নতুন কলা অনুষদ চালু হলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।
কেআই/এসি