চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস পালিত
চবি সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০৫:৩৭ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ রবিবার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় মহাসমারোহে ও আনন্দঘন পরিবেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবস পালন করা হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধ ‘স্মরণ’সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ ভবন দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয় এবং ১২.০১ মিনিটে বিউগল বাজিয়ে বিজয় দিবসের সূচনা লগ্নকে স্বাগত জানানো হয়।
রোববার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মসজিদে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের স্ব-স্ব উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয় এবং সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যে পুস্পমাল্য অর্পণ করে লাখো শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, শিক্ষক সমিতি, অনুষদ সমূহের ডিনবৃন্দ, হলসমূহের প্রভোস্টবৃন্দ, সভাপতি-পরিচালক ফোরাম, অফিসার সমিতি, চবি ক্লাব (ক্যাম্পাস), চবি মহিলা সংসদ, সমন্বয় কর্মকর্তা বিএনসিসি, চবি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়ন, সাংবাদিক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ।
পুস্পমাল্য অর্পণ শেষে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় র্যালি এবং র্যালি শেষে চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর বঙ্গবন্ধু চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী এবং সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী মহাকালের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী ত্রিশলক্ষ শহীদ, ‘৭৫ এ নির্মমভাবে শহীদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যবর্গের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত দু’লক্ষ জায়া-জননী-কন্যার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।
উপাচার্য ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দীপ্ত নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দূরদর্শীতা আলোকপাত করে বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত গণমানুষের মুক্তির দূত এবং বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা।
উপাচার্য আরও বলেন, সত্যকে কখনো লুকিয়ে রাখা যায় না। ’৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলতে ষড়যন্ত্রকারীরা নতুন প্রজন্মের কাছে যে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপনের মহাযজ্ঞ শুরু করেছিল, তারা তাতে সফল হয়নি, বরং আজ দেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে সত্য উন্মোচিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য-গতিশীল নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে।
ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য) দিবাকর বড়ুয়ার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ, চবি শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও চবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. রাশেদ-উন-নবী, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব, সিনেট সদস্য প্রফেসর এ বি এম আবু নোমান, সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মহীবুল আজিজ, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বশির আহাম্মদ, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান, অফিসার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, চ.বি. ক্লাব (ক্যাম্পাস)-এর সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, চবি কমচারী সমিতির সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন এবং কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আলী হোসেন।
চবি সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠান সূচিত হয়। আলোচনা সভা শেষে চবি সংগীত বিভাগ, নাট্যকলা বিভাগ ও চবি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
কেআই/এসি