নির্বাচনী ইশতেহারে গৃহনির্মাণের অধিকার চায় বস্তিবাসীরা
প্রকাশিত : ০১:১৮ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ বুধবার
ঢাকায় দরিদ্র বস্তিবাসীর সংখ্যা ৪০ লাখ। যারা দৈনন্দিন কর্মকান্ডের মাধ্যমে নগর জীবন ও জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। অথচ এই লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য নিরাপদ পানি, পয়:নিষ্কাশন, নিরাপদ বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, যা অত্যান্ত অমানবিক। নগরের চালিকাশক্তি উন্নয়নের অংশীদার বস্তিবাসীদের জন্য সরকারী গৃহায়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন ও গৃহঋন সহায়তা তহবিল সৃষ্টি করা প্রয়োজন। তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলসমূহের ইশতেহারে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর গৃহনির্মাণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এমন দাবিই তুলে ধরলেন এনডিবাস (নগর দরিদ্র বস্তিবাসীর উন্নয়ন সংস্থা) নামক একটি বেসরকারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অাজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মতবিনিময় ও অালোচনা সভায় এমন দাবি তুলে ধরা হয়।
বক্তারা বলেন, সার্বজনীন মানবাধিকার সনদ, জাতীয় গৃহহীন নীতিমালা ও হ্যাবিটেট (১ ও ২) সনদ অনুযায়ী নগর দরিদ্রদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান নিশ্চিত করতে হবে। বস্তি উচ্ছেদ করে লক্ষ লক্ষ গরীব মানুষকে উচ্ছেদ করা যাবে না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী রাজনৈতিক দল সমূহের নির্বাচনী ইশতেহারে নগর দরিদ্রদের অাবাসনের অধিকার নিশ্চিতকল্পে কর্মসূচী অন্তর্ভুক্তি করণের দাবিতে এ মতবিনিময় ও অালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা আরও বলেন, ঢাকায় তের হাজার বস্তি অাছে। পরিকল্পিত ভাবে এসব বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন ও তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করলে সেখানে মাদক সহ নানা ধরনের অপরাধের প্রবণতা দিনদিন বেড়েই যাবে। যা রাষ্ট্রকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়বে। যা কারো কাম্য নয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অায়োজক সংগঠনের সভাপতি অাব্দুল হামিদ ফকির। প্রবন্ধ উপস্থাপন করের সংগঠনটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক অাঞ্জুমান অারা বেগম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম অাকাশ।
প্রধান অতিথি এম এম অাকাশ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনটি দাবি তুলে ধরে বলেন, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে বস্তি উচ্ছেদ করা যাবেনা, বস্তির জায়গার মালিকানা দরিদ্র লোকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, গৃহায়নের জন্য উপযুক্ত পুঁজি ও কারিগরী সহযোগিতা দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সালম অাক্তার নামক এক নারী অভিযোগ করেন, ‘রোহিঙ্গারা এদেশে বস্তিবাসীদের চেয়ে অনেক বেশী সুবিধা ভোগ করছে। অথচ নিজ দেশে বস্তিবাসীদের বাসস্থানের কোন নিশ্চয়তা নেই।’
এমন অভিযোগের জবাবে এমএম অাকাশ বলেন, সমাজে কয়েক শ্রেণীর দরিদ্র অাছে। মোটামুটি দরিদ্র, দরিদ্র, হতদরিদ্র ইত্যাদি। রোহিঙ্গাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। কারণ তারা একদেশ থেকে অন্যদেশে এসেছে। যাদের নিজের কোন দেশ নেই তাদের চেয়ে গরীব অার কে হতে পারে।
এম এম অাকাশ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে একটি লোকও গৃহহীন থাকবে না। তাই নির্বাচনী ইশতেহারে সেই প্রতিশ্রুতি অাজ সবচেয়ে বড় দাবি।’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থপতি সালমা এ শফি, মোস্তফা কায়ুম খান, বেসরকারী সংগঠন কাপের নির্বাহী পরিচালক রেবেকা খোন্দকার রেবেকা সান ইয়াত, নারী নেত্রী কাজী বেবী, শাহিন অাক্তার ডলি, ফাতেমা বেগম প্রমুখ।
অা অা//