ভরাডুবি জেনেই নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি: আওয়ামী লীগ
প্রকাশিত : ১০:৪৭ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
ভরাডুবি নিশ্চিত জেনেই বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।
বৃহস্পতিবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। এমনকি নির্বাচনের পূর্বে দেশের বিভিন্নস্থানে বিএনপি-জামাতের ক্যাডাররা গায়ে মুজিব কোট পরিধান করে নৌকা মার্কার ব্যাজ লাগিয়ে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
আব্দুর রহমান বলেন, দুর্নীতিবাজ, সাজাপ্রাপ্ত, পলাতক আসামি তারেক রহমানের মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিএনপি নেতা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। বিএনপির দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির কারণে তাদের নেতাকর্মীরা আজ গভীর হতাশায় নিমজ্জিত।
তিনি বলেন, নির্বাচনের মাঠে নেতাকর্মীশূন্য বিএনপির ভরাডুবি নিশ্চিত এই আশঙ্কায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে তারা। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের নীলনকশা অনুযায়ী জনগণের নির্বাচনকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে, পরিকল্পিতভাবে নাশকতা ও সন্ত্রাসের এ পথ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
নির্বাচনের সময় কেন্দ্র পাহারা দেওয়ার ঘোষণায় বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এমন অভিযোগ করে এ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. কামাল হোসেনের কেন্দ্র পাহারার ঘোষণায় বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আপনারা জানেন নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর দিনই নোয়াখালী, ফরিদপুর, পাবনা, ঈশ্বরদীতে, বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতারা একদিকে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীকে হত্যা করে অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নির্লজ্জভাবে নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা অভিযোগ করছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাকর।
তিনি এ সময় দাবি করেন, অসত্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন একজন ডিসি এবং দুইজন এডিসি, চারজন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করেছে।
এ অবস্থায় কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে অভিযোগের তদন্ত ও অভিযুক্তের সঙ্গে কথা বলে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও অভিযোগ করেন, আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। প্রার্থীরা নিজেদের লোক দিয়ে গোলযোগ সৃষ্টি করছেন, আওয়ামী লীগ ও মহাজোট প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে হামলা অগ্নিসংযোগ এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন।
তিনি বলেন, তারা ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের অফিসে বোমা হামলা চালিয়েছে, মুন্সিগঞ্জে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী মাহী বি চৌধুরী ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ হয়েছে, সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর অফিসে হামলা, টাঙ্গাইলের সখীপুরে পুলিশের গাড়িতে হামলা, পাবনার সাঁথিয়ায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগ, খুলনার পাইকগাছায় নৌকা প্রতীকের অফিসে পাঁচটি ককটেল বোমা হামলা, শেরপুর সদর উপজেলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্নস্থানে ভাঙচুর চালিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মাহরুফা আখতার পপি প্রমুখ।
আরকে//