উদ্ভাবনী আইডিয়ায় ভর করে নেপাল যাত্রা
প্রকাশিত : ০৩:১২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ শনিবার
পৃথিবীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের পথে আছে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, আবাসনের স্বল্পতাসহ বেঁচে থাকার তুমুল সংগ্রাম। রয়েছে সীমাহীন চাহিদার বিপরীতে সম্পদের স্বল্পতা। তবে দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক সমস্যাই আজ সমাধান করা হচ্ছে উদ্ভাবনী ভাবনা দিয়ে, বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগছে জীবনের সর্বত্র। সীমিত সম্পদ ও মানুষের উৎপাদন ক্ষমতার যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে মিলছে প্রত্যাশিত সমাধান। তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান। যাতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টকে কাজে লাগিয়ে নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতেও। এ সব ধারণা উঠে আসে নিটল-আয়াত আইডিয়া কনটেস্টে।
তরুণ শিক্ষার্থীদের সুপ্ত ভাবনার দুরন্ত বিকাশে আয়োজন করা হয় ব্যতিক্রমী এই প্রতিযোগিতার। যার লক্ষ্য ছিল নতুন কর্মসংস্থান তৈরি, সীমিত সম্পদের ব্যবহার করে নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবনী আইডিয়া বের করা। যার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা পূরণ সহজ হবে। কমবে এনার্জি লস, ক্ষতি হবে না পরিবেশের।
যাতে প্রাধান্য পায় প্রতিদিনের চাহিদা পূরণে তথ্যপ্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার। মাসব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় জমা পড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক হাজারেরও বেশি আইডিয়ার। এ থেকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগী দল ‘টিম গ্রিনিশ’কে। তাদের প্রকল্প ছিল প্রতিদিনের ব্যবহার করা প্লাস্টিক পণ্য থেকে ব্যবহারযোগ্য নতুন পণ্য তৈরির ধারণা। তাদের দলনেতা ছিলেন তানভীর আহমেদ।
আর নাতাশা কবীরের নেতৃত্বে শারীরিকভাবে অক্ষম ও বৃদ্ধদের নিয়ে ধারণার জন্যে ‘টিম ব্রীজ’ লাভ করে প্রথম রানার্সআপ পুরস্কার। কৃষিপণ্য নষ্ট হওয়া কমানো, অনলাইন মার্কেটে বিক্রির আইডিয়া নিয়ে ‘ফারমার্স ফাইটার্স টিম’ চূড়ান্তভাবে দ্বিতীয় রানার আপ হয়, যাদের দলনেতা ছিলেন মোজাম্মেল হক। বিজয়ীরা নগদ অর্থ ও সম্মাননা ক্রেস্টের পাশাপাশি পাচ্ছেন নেপাল ভ্রমণের সুযোগ। বিজয়ী শিক্ষার্থীরা বলেন, চূড়ান্তভাবে সেরা নির্বাচিত হয়ে ভালো লাগছে। আসলে চেষ্টা ছিল সত্যিকার কাজে আসে এমন কিছু করে দেখানোর। আমাদের প্রচেষ্টা আছে, আছে পরিশ্রমের মানসিকতাও। এ ক্ষেত্রে একটু নির্দেশনা ও সহযোগিতা পেলে দারুণ কিছু করে দেখাতে পারবো।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচার আসর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই প্রতিযোগিতার গ্রান্ড ফিনালে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ও নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমেদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীতে দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব দিবে। আবার, জ্ঞানের বিকাশের মাধ্যমে তারা বিশ্বব্যাপীই প্রতিযোগিতা করতে পারবে। কাজেই, এখন থেকেই শিক্ষার্থীদের যোগ্য ও দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এই ধরণের প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের চিন্তা করতে, নতুন কিছু ভাবতে শেখায়।
বিচারক প্যানেলে ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রাশেদুল ইসলাম, বাটার হেড অফ বিজনেস রেজাউল করিম ও একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার শামীমা দোলা। শামীমা দোলা বলেন, সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী উচ্চ আয়ের দেশে পৌঁছাতে দরকার মানবসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার। এ লক্ষ্যে গতানুগতিক ধারার পরিবর্তে বহুমুখী জ্ঞানার্জন করতে হবে, বাড়াতে হবে দক্ষতা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগী মনোভাব গড়ে তুলতে এমন আয়োজন আরও দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আইডিয়া চেয়ে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। যেখানে জমা পড়ে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার খানেক আইডিয়া। সরকারের এটুআই এবং দেশের বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বাছাই করা হয় সেরা ধারণাগুলো। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয় ৯টি দল।