ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

দেশের দন্ত্য চিকিৎসা এখন বিশ্বমানের

প্রকাশিত : ০২:১৭ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৬:২০ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ রবিবার

১৯৬১ সালে ডেনটিস্ট পেশার ডেন্টার কলেজের মাধ্যমে যাত্র শুরু হয়। দীর্ঘদিন এপেশাটা অবহেলিত ছিলো। তবে এখন স্বাস্থ্যবান্ধব সরকারে কল্যাণে এ পেশাটি একটি অবস্থানে পৌঁছেছে। শুরুতে ডেন্টার কোর্সটি ছিলো চার বছরের। ফলে বাংলাদেশ থেকে এই কোর্স শেষ করে বিশ্বমহলে তেমন সুযোগ তৈরি মিলতো না। যে কারণে আমরা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে একটু অবহেলিত ছিলাম।

বর্তমানে ডেসটিস্ট কোর্সটির ৫ বছর মেয়াদি উত্তির্ণ হয়েছে। ফলে আমাদের দেশের ডেন্টাল সার্জনরা উন্নত বিশ্বের সমমানের বলা যেতে পারে। আমাদের দেশে এখন দাঁতে সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এমনকি উন্নত বিশ্বে উদ্ভাবিত যে কোনো ডেন্টাল পদ্ধতি খুব সহজেই আমাদের দেশে এখন চলে আসছে। আমাদের দেশের ডেনটিস্টরা নিজ উদ্যোগে দেশে বা দেশের বাইরে ট্রেনিংয়ে অংশ নিচ্ছেন।

সম্প্রতি একুশে টিভি অনলাইনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবীর বুলবুল এমন অভিমত ব্যক্ত করেন। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান।

একুশে টিভি অনলাইন: বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের ডেনটিস্ট্র এর অবস্থান কেমন ?

ডা. হুমায়ুন কবীর বুলবুল: বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ডেনটিস্ট্রদের অবস্থা অনেক ভাল। বর্হিবিশ্বের কাছে আমরা আমাদের অবস্থা তুলে ধরেছি। বিগত তিন-চার বছরে আমাদের অবস্থান শক্ত ভাবে জানান দিয়েছে।

একুশে টিভি অনলাইন: বাংলাদেশে এখন ডেনটিসট্রির অবস্থা কী?

ডা. হুমায়ুন কবীর বুলবুল: কিছুদিন আগে আমাদের দেশে একটি ধারণা ছিল, দাঁতের সমস্যা মানেই দাঁত ফেলে দেওয়া। তবে বর্তমানে দেশে যে প্রেক্ষাপট তাতে আমাদের দেশের ডেন্টাল সার্জনরা উন্নত বিশ্বের সমমানের বলা যেতে পারে। আমাদের দেশে এখন সব ধরনের চিকিৎসা হয়। যেমন : উন্নত বিশ্বে উদ্ভাবিত যে কোনো ডেন্টাল পদ্ধতি খুব সহজেই আমাদের দেশে এখন চলে আসছে। আমাদের দেশের ডেনটিস্টরা নিজ উদ্যোগে দেশে বা দেশের বাইরে ট্রেনিংয়ে অংশ নিচ্ছেন। দেখা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এখন দাঁত ফেলে দেওয়ার চিকিৎসাটি আর নেই। একমাত্র আক্কেল দাঁত ছাড়া মুখের কিন্তু সব দাঁতই অনেক অবস্থাতেই রাখা যায়। এ ধরনের চিকিৎসা এবং চিকিৎসার যন্ত্রপাতি আমাদের দেশে আছে।

একুশে টিভি অনলাইন: ভুয়া চিকিৎসক থেকে রক্ষা পেতে কোন কোন জায়গা থেকে দাঁতের চিকিৎসা  নেওয়া উচিত।

ডা. হুমায়ুন কবীর বুলবুল:  শুরুতে দুইটি সরকারি ডেন্টার হাসপাতাল নিয়ে দন্ত্য চিকিৎসার যাত্রা শুরু হয়। বর্তমান এই হাসতাপালের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৮টি। এগুলোর  ডেন্টাল ইউনিট খুবই শক্তিশালী। এছাড়া ঢাকার বাইরেও জেলা পর্যায়ে অনেক উন্নত হয়েছে। এখন আর আগের মতো অবস্থা নেই। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও রাজশাহী ডেন্টাল ইউনিট খোলা প্রস্তাবনা রয়েছে। এই দুইটি ইউনিট চালু হলে দন্ত্য চিকিৎসার বিশ্বমানের দুয়ার খোলবে।

একুশে টিভি অনলাইন: আমরা কিন্তু ওরাল সার্জারি বা ওরাল ক্লিনিক বিষয়টি দেখি। সেটি আসলে কী?

ডা. হুমায়ুন কবীর বুলবুল: ডেন্টাল শব্দের অর্থ কেবল দাঁত নয়। এর প্রকৃত অর্থ হলো দাঁত সম্পর্কীয়। এখানে দাঁতের পাশাপাশি আমাদের চোয়ালের হাড়, ঠোঁট, জিহ্বা, তালু, মুখের স্নায়ু, লালাগ্রন্থি সবকিছু এই ডেন্টাল শব্দের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। আমাদের দেশে এই দিনটি খুব বেশি জনপ্রিয় নয়। কারণ আমাদের দেশে এক শ্রেণির মানুষ এখনো দাঁতের চিকিৎসাকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না। তবে যে কোনো উন্নত দেশে এই দিনটি ব্যাপকভাবে পালিত হয়। এই দিনে রোগীরা তাদের ডেন্টাল সার্জনকে শুভেচ্ছা জানায়, কার্ড দেয়, ফুল দেয়। এর সঙ্গে সঙ্গে ক্লিনিক্যাল সাক্ষাতের মাধ্যমে নতুন ডেন্টাল রোগের তথ্য তারা নিয়ে আসে। মানুষকে সচেতন করতে এই দিনটি সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে।

 

একুশে টিভি অনলাইন: একটা অভিযোগ আমরা শুনি, রোগীদের কাছে যে দাঁতের চিকিৎসায় ব্যয় খুব বেশি। যাদের সামর্থ্য কম তাদের জন্য খুব কষ্ট হয়ে যায়। তাদের জন্য কী বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে?

ডা. হুমায়ুন কবীর বুলবুল: একটি কথা সবাইকে বিশেষভাবে বলা উচিত ডেন্টালে ব্যবহৃত প্রতিটি জিনিস এখন দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। আমরা কিন্তু চেষ্টা করি দেশের মানুষের অবস্থা বুঝে অনেক কম পয়সায় চিকিৎসা দিতে। এখন তো ইন্টারনেটের যুগ। নেটে ঢুকলেই মানুষ দেখতে পারে আশপাশের দেশে কী পরিমাণ খরচ। আপনি দেখবেন এখন প্রবাসীরা শুধু নয়, ভিনদেশি মানুষও বাংলাদেশে আসছেন উন্নত চিকিৎসা অপেক্ষাকৃত কম খরচে নেওয়ার জন্য। তারপরও আমি বলব, ডেন্টাল চিকিৎসা কিছুটা ব্যয়বহুল আমাদের দেশে। তবে বেসরকারি মেডিকেলের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালেও কিন্তু যন্ত্রপাতির উন্নতি হয়েছে। সেখানে রোগীরা অনেক কম খরচে চিকিৎসা নিতে পারে।

 

টিআর/