শীতে কাপছে গরিব, প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা
শামসুল হক
প্রকাশিত : ০৮:১৮ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ রবিবার
আর মাত্র কয়েক দিন পরেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। প্রতিবারের মতো এবারের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হচ্ছে শীতকালে। প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। সব দলের প্রার্থীরাই সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছেন। গ্রামের চায়ের দোকান থেকে সর্বত্র নির্বাচনী আমেজ।
বিশেষ করে গ্রামের ছোট ছোট চায়ের দোকানে বেশ জমে আড্ডা দিচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। তাদের একটি আলোচনার বিষয় জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনী ব্যয় এর সীমা বেধে দিয়েছে প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ৩০০ আসনের কোনো আসনের প্রার্থীই হয়তো এ নিয়ম মানছে না। ব্যয়ের যে সীমা বেধে দেওয়া হয়েছে তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ব্যয় করছেন অনেকেই বলে অভিযোগ আছে। তবে, কোনো কোনো প্রার্থী ব্যয় সীমা ধরে রাখবে বলেই প্রতীয়মান।
উত্তরের জেলা গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুরের থেমে নেই নির্বাচনী প্রচারণা। বিশেষ করে গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে বেশ জোরেসোরে। সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে নির্বাচনী প্রচারণা লক্ষ্য করা গেছে। তীব্র শীত উপেক্ষা করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। শীত উপেক্ষা করে এই নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছেন বেশ বিপাকে। উত্তর এই জেলার চর অঞ্চলের গরিব মানুষরা পড়েছেন বেশ বিপাকে। তীব্র শীতের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছেন। নেই তাদের শীত রোধে শীতের গরম কাপড়।
প্রার্থীরা অনেক খরচ করলেও গরিব মানুষের শীতের পোশাক দিচ্ছে না কেউ বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামের অনেক মানুষ। উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের ছমির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, শীতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। বয়স্ক মানুষ এতো শীত আমরা কি করবো। কিন্তু কোনো ব্যক্তি আমাদের শীতের কোনো গরম কাপড় দেয় নাই। শুনি এমপি প্রার্থীরা অনেক খরচ করছেন কিন্তু আমাদের তো শীতের জন্য গরম কাপড় দিতে পারতেন। তা তো দেন না।
তারাপুর ইউনিয়নের আছির নামের একজন বৃদ্ধা জানান, শীতের সময় আমাদের কেউ একটু গরম কাপড় দিলে ভালো হতো। কিন্তু কেউ আমাদের কোনো খোঁজ রাখেন না। শুধু ভোটের সময় ভোট চান। তারা আমাদের কথা ভাবেন না। শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের গরম কাপড় দরকার। কিন্তু তা তো পাচ্ছি না। এখন খড়কুটো জ্বেলে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছি। গরিবের জন্য কেউ কিছু করে না।
এরকম কথা সুন্দরগঞ্জের অনেকেই বলছেন। কিন্তু তাদের কল্যাণে কেউ এগিয়ে আসছেন না বলে অভিযোগ করছেন অনেকেই। তবে, তীব্র শীত থেকে রক্ষা পেতে কি ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা তা জানার চেষ্টা করা হয়।
গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের মহাজোট সমর্থীত প্রার্থী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, শীতের কথা ভেবে, নির্বাচনী প্রাচরণা শুরু করার আগে প্রায় ৩০০০টি কম্বল বিতরণ করেছি এবং নির্বাচনের পরেই আরও বিতরণ করবো। বিশেষ করে বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে এই কম্বলগুলো বিতরণ করবো। এছাড়াও শীতের কথা চিন্তা করে আরও করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মাজেদুর রহমানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগে চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
নির্বাচন নিয়ে মানুষের যেমন কৌতুহলের শেষ নেই তেমনি গ্রামের সাধারণ মানুষের শীতের গরম কাপড় নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। প্রার্থীরা নির্বাচনী ব্যয় থেকে সাধারণ মানুষের জন্য শীতের গরম কাপড় দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা অনেকেরই।
এসি