রাজস্ব প্রবৃদ্ধিতে নিম্নগতি
প্রকাশিত : ০৯:২৬ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে ব্যাপক হারে কমে গেছে রাজস্ব আহরণ। নির্বাচনে প্রভাব ফেলেনি অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে। ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে ঠিক চলছে আগের মতো। এমনকি রাজস্ব আয় কম হওয়ার তেমন যৌক্তিকতা দেখছে না অর্থনীতিবিদরা।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই অর্থবছরে জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে রাজস্ব আয় বেড়েছে মাত্র ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এর আগের ২০১৬-১৭ অর্থবছরে যা ছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের এ সময়ে রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি সর্বশেষ তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘোষণার সময় এনবিআরের মাধ্যমে মোট আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ২৯ শতাংশ।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে আমদানি শুল্ক্কের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয় ২৬ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আহরণের লক্ষ্য ধরা হয় ৪০ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা। এ সময়ে আদায় হয় ৩১ হাজার ১০২ কোটি টাকা। আয়কর খাতে ২৭ হাজার ১৪৮ কোটি টকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে পাঁচ মাসে আহরণ হয় ২১ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা।
সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি পোশাকসহ বিভিন্ন খাতে কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে গ্যাস খাত থেকে বেশি ভ্যাট আদায় হয়। এলএনজির দাম সহনীয় রাখতে সম্প্রতি এর সম্পূরক শুল্ক্ক কমানো হয়। অন্যদিকে নির্বাচন ঘিরে উন্নয়ন কাজের গতি স্তিমিত হয়ে পড়েছে। এসব কারণে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অন্যদিকে পেট্রোবাংলাসহ অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিপুল ভ্যাট বকেয়া পড়েছে। এ কারণে আদায় প্রত্যাশিত হচ্ছে না।
এব্যাপারে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকার পরও রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। কেন কমছে তা তার কাছে বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে এনবিআরের বিশ্নেষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
এবিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, জাতীয় নির্বাচনের কারণে রাজস্ব আয়ে প্রভাব পড়েছে। নির্বাচনের পরে নতুন বছর থেকে আয় বাড়বে। এর কারণ ব্যাখায় তিনি বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে বিশদ কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা থেকে ঘাটতি অনেক কমে আসবে।
টিআর/