পূর্ণাঙ্গ শাখার অধীনে ব্যাংকিং বুথ স্থাপনে প্রজ্ঞাপন
প্রকাশিত : ০৩:২৮ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ শনিবার
দেশে কার্যরত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন থেকে শাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিং সেন্টারের পাশাপাশি ‘ব্যাংকিং বুথ’ স্থাপন করতে পারবে। পূর্ণাঙ্গ শাখার নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত এসব বুথ থেকে গ্রাহকদের স্বল্পব্যয়ী পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকিং সেবা দিতে পারবে তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের (বিআরপিডি) একটি প্রজ্ঞাপনে সংশোধন এনে জারিকৃত নতুন প্রজ্ঞাপনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বুথগুলোয় স্বাভাবিক ব্যাংকিং সময়সূচি অনুযায়ী সেবা দেয়া হবে। তবে ব্যবসা ও গ্রাহকসেবার স্বার্থে অন্য সময়েও বুথ খোলা রাখা যাবে। সেক্ষেত্রে আগে থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে এবং বুথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
বিআরপিডির আগের প্রজ্ঞাপনটিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ শাখা, এসএমই/কৃষি শাখা, কালেকশন ও ইলেকট্রনিক বুথ এবং ব্যবসা উন্নয়ন কেন্দ্রের কথা উল্লেখ ছিল। বৃহস্পতিবারের সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে এগুলোর সঙ্গে ব্যাংকিং বুথকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে ব্যাংকিং বুথের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশিত নীতি-পদ্ধতির আলোকে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য পূর্ণাঙ্গ শাখার নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত স্বল্পব্যয়ী ব্যবসাকেন্দ্র ব্যাংকিং বুথ হিসেবে পরিচিত হবে। স্বল্পব্যয়ী হওয়ায় এসব বুথ স্থাপনের ব্যয় সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক শাখা স্থাপনের ব্যয় এবং ব্যাংকিং সেবার ফি, চার্জ ও কমিশন নিয়ন্ত্রক শাখার ফি, চার্জ ও কমিশনের চেয়ে বেশি হওয়া যাবে না।
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, বুথ থেকে কী কী সেবা দেয়া হবে এবং কী পরিমাণ লেনদেন করা যাবে, তা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নির্ধারণ করবে। ব্যাংকিং লেনদেনসহ বুথের সামগ্রিক লেনদেনের হিসাব নিয়ন্ত্রক শাখার বুকস অব অ্যাকাউন্টসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিসি গাইডলাইন ও সংশ্লিষ্ট নির্দেশনার আলোকে ব্যাংকিং বুথকে মূল ব্যাংকের নিরীক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এসব বুথ থেকে যেন কোনো অর্থ পাচার না হয়, সেজন্য প্রচলিত বিধিবিধানের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকিং সেবা দেয়া হলেও ব্যাংকিং বুথে বৈদেশিক বাণিজ্য-সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে না।
গ্রাহক কোনো ব্যাংকিং বুথে অ্যাকাউন্ট খুললে তা নিয়ন্ত্রক শাখার অ্যাকাউন্ট হিসেবে গণ্য হবে। বুথের সব ধরনের লেনদেন ‘রিয়েল টাইম বেসিস’-এ হতে হবে এবং তাত্ক্ষণিকভাবে গ্রাহকদের এসএমএস ও প্রিন্ট রসিদ প্রদান করতে হবে। কোনো বুথের সেবা সম্পর্কে গ্রাহক অভিযোগ করতে চাইলে তা দাখিলের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং দাখিলকৃত অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।
ব্যাংকিং বুথের ক্যাশ ইন ট্রানজিট ও ক্যাশ অন কাউন্টারের পূর্ণ বীমা আচ্ছাদন নিশ্চিত করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নগদ অর্থ ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংরক্ষণের জন্য বুথে ভল্ট স্থাপন করা যাবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ভল্টের নিরাপত্তা ও সংরক্ষিত অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ব্যাংকিং বুথের ফ্লোর স্পেস এক হাজার বর্গফুটের বেশি হওয়া যাবে না। বুথের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অন্তত দুজন কর্মকর্তাকে নিযুক্ত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নাম, নিয়ন্ত্রণকারী শাখার নাম ও ব্যাংক প্রদত্ত বুথের নামের সাইনবোর্ড বুথের বাইরে এমন জায়গায় স্থাপন করতে হবে, যেন তা সহজে দেখা যায়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ব্যাংকিং বুথ স্থাপনের ক্ষেত্রে যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ অথবা বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ব্যবসা চলমান পরিকল্পনা (বিজনেস কন্টিনিউইটি প্ল্যান) অবশ্যই থাকতে হবে। আগে থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে নতুন ব্যাংকিং বুথ চালু করা এবং বিদ্যমান বুথ স্থানান্তর বা বন্ধ করা যাবে না। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই যেকোনো সময়ে ব্যাংকিং বুথের অনুমোদন বাতিল করতে পারবে।
আরকে//