আমার স্মৃতিতে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম
ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত : ০৫:৩৯ পিএম, ৪ জানুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:৫৮ পিএম, ৪ জানুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার
মাসটা মনে নেই, সালটি ২০০০। আমি নবীন সার্কেল এএসপি। বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ আমার পুলিশী এলাকা। সিলেটে ভিআইপিদের সরকারী ভিজিট লেগেই থাকে। এয়ারপোর্ট এবং মাজারের কারনেই সিলেটের উপর চাপটা বেশী। স্পীকার, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রীদের সরকারী প্রোগ্রামে সার্কেল এএসপি কিংবা এ্যাডিশনাল এসপির সার্বক্ষনিক উপস্থিতি তখন ওখানকার রেওয়াজ ছিল।
একদিন শুনলাম তৎকালীন এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তিন (০৩) দিনের সফরে সিলেট আসবেন। উনার প্রোগ্রামের সিংহভাগ ছিলো তৎকালীন বালাগঞ্জ (বর্তমানে বালাগঞ্জ ও ওসমানী নগর থানা) এলাকায়। সংগতকারনেই উনার প্রোগ্রামগুলোতে আমার ডিউটি পড়ল। এয়ারপোর্টে তাঁকে রিসিভ থেকে সিঅফ করা পর্যন্ত আমার দায়িত্ব। বালাগঞ্জের রাস্তাঘাটের অবস্থা তখন অত্যন্ত খারাপ। তিনি তৎকালীন যুক্তরাজ্য যুবলীগের তরুন নেতা জনাব আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করলেন।
আমি তখন পদমর্যাদা ও বয়স- দু`দিক থেকেই ক্ষুদ্র। প্রতি সপ্তাহেই আমি ভিআইপি ডিউটি করার সুবাদে আমার অর্জিত অভিজ্ঞতার সাথে এই প্রথম ভিন্নতা দেখতে পেলাম। সকলের সাথে উনার মার্জিত আন্তরিক ব্যবহার, মানুষের প্রতি সম্মানবোধ, ব্যক্তিত্ববোধ-সবই দেখলাম ভিন্ন। খুব কাছাকাছি থেকে সেই আমার প্রথম এবং শেষ দেখা। গত ১০ বছরে অনেকবার দেখা হলেও সালাম বিনিময় ছাড়া তেমন কথা হয়নি। ২০০৭-০৮ স্পেশাল ব্রাঞ্চে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল সেসময়ের অভিজ্ঞতা থলিতে ছিল। পরবর্তীতে সাত বছর ডিবি এবং বর্তমান পদে কর্মরত থাকায় দৈনন্দিন অভিজ্ঞতায় আমি তাঁকে ব্যতিক্রমী মানুষ হিসেবেই দেখেছি। ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করেও কতটা নির্মোহ হওয়া যায় তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ সৈয়দ আশরাফ!
গতরাতে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর থেকে মিডিয়া এবং সোস্যাল মিডিয়ায় সাধারন ও অসাধারন ব্যক্তিদের প্রতিক্রিয়াই বলে দেয় সকলের কতটা শ্রদ্ধার মানুষ ছিলেন তিনি। তাঁর বিদেহী আত্মার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। পরপারে ও তিনি ভালো থাকবেন এই কামনা করছি।
লেখক: অতিরিক্ত কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিশন পুলিশ।
এসি