ডেমরায় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ২ শিশুকে হত্যা
প্রকাশিত : ০১:২৬ পিএম, ৯ জানুয়ারি ২০১৯ বুধবার
রাজধানীর ডেমরা থানার কোনাপাড়া এলাকায় দুই শিশু হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা ও তার চাচাতো ভাই আজিজুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শিশু দুটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওয়ারি জোনের উপকমিশনার এ সব তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নুসরাত জাহান (৪) ও ফারিয়া আক্তার দোলা (৫) নামে শিশু দুটিকে বাসায় নিয়ে বিভিন্ন প্রসাধনী দিয়ে সাজানো হয়। তার আগে মোস্তফা ও আজিজুল ইয়াবা সেবন করে এবং ঘরের মধ্যে ক্যাসেট প্লেয়ার চালিয়ে দেয়। প্রসাধনী দিয়ে সাজানোর পর শিশু দুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা। এ সময় ফারিয়া আক্তার দোলা চিৎকার করলে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা নুসরাত দেখে ফেললে তাকেও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে লাশ খাটের নিচে রেখে আজিজুল পালিয়ে যায়।
পরে মোস্তফার স্ত্রী বাসায় ফিরলে ঘরের মধ্যে শিশুদের জুতা দেখতে পান এবং মোস্তফা অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। তখন স্ত্রীর কাছে দুই শিশুকে হত্যা করে লাশ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে মোস্তফা।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে রাজধানীর ডেমরার ‘নাসিমা ভিলা’র মোস্তফার ঘর থেকে শিশু নুসরাত জাহান (৪) ও ফারিয়া আক্তার দোলা (৫) লাশ পাওয়া যায়। এর আগে ওই দিন দুপুর থেকে তারা নিখোঁজ ছিল। এ ঘটনায় সেই বাড়ির গৃহকর্তা মোস্তফাকে প্রথমে খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রী ও শ্যালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছিল।
এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিহত নুসরাতের বাবা পলাশ হাওলাদার বাদী হয়ে ডেমরা থানায় একটি মামলা (নং-১২) দায়ের করেন। এরপর রাজধানীর ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা ও তার চাচাতো ভাই আজিজুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিহত দোলার চাচা রাশেদুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরে দোলা ও নুসরাত খেলতে খেলতে হারিয়ে যায়। তাদের খুঁজতে এলাকাজুড়ে মাইকিং করা হয়। পাশাপাশি ফেসবুকেও ফোন নম্বর ও ছবি দিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। মাইকিংয়ের সময় একজন জানালেন- স্থানীয় মোস্তফা দুপুরের পর শিশু দুটিকে নিজ ফ্ল্যাটে নিয়ে গেছেন। পরে ওই যুবকের তথ্যের ভিত্তিতে তিনি (রাশেদুল) মোস্তফার খালাকে নিয়ে সেই ফ্ল্যাটে যান এবং দুই শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় ওই নারী মোস্তফা যাতে ঘর থেকে বের হতে না পারেন সে জন্য বাইরে থেকে তালা দিয়ে আশপাশের লোকজনকে খবর দেন। কিন্তু ততক্ষণে পালিয়ে যায় মোস্তফা।
রাজমিস্ত্রী মোস্তফা মাদকসেবী বলে জানিয়েছে পুলিশ। সে তার স্ত্রী এবং পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে নাসিমা ভিলায় সাবলেট থাকতো।
একে//