ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

গাজীপুরে কারখানায় অগ্নিসংযোগ, বিজিবি মোতায়েন

প্রকাশিত : ১১:৫৬ পিএম, ৯ জানুয়ারি ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০৮:২৩ এএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

গাজীপুরে  পোশাক কারখানার শ্রমিক অসন্তোষ ও কারখানায় অগ্নিসংযোগের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার (০৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিজিবি টহল দিচ্ছে।

এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখানে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া বুধবার সকাল থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিজিবি টহল শুরু করেছে।

বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বুধবার কর্মবিরতি দিয়ে বিক্ষোভ, কারখানায় অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের গুলি ও কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে গাজীপুরে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে এদিন গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী, ভোগড়া ও আশপাশের এলাকার কয়েকটি কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক (দক্ষিণ) বিভাগের সহকারী কমিশনার থোয়াই অং প্রু মারমা জানান, সকাল সাড়ে ৯টা থাকে থেকে ওই সোয়া ১১টা পর্যন্ত শ্রমিকরা ওই মহাসড়কে অবস্থান নেয়ায় গাজীপুরা থেকে উভয়দিকে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে সকাল সাড়ে ১১টায় যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মো. কামাল হোসেন জানান, একই দাবিতে সকালে টঙ্গীর বিসিক এলাকার ১৫-২০টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা একসঙ্গে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। সকালে তারা লোহার রড, লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের তাদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দিতে আহ্বান করে।

এ সময় টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকার নর্দান গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলনে যোগ না দিয়ে বরং আন্দোলনরত শ্রমিকদের ধাওয়া দিয়ে বিসিক পানির ট্যাংকি পর্যন্ত নিয়ে যায়। দুপক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে টিকতে না পেরে একপর্যায়ে নর্দানের শ্রমিকরা তাদের কারখানায় ভেতরে গিয়ে আশ্রয় নেয়। বহিরাগত শ্রমিকরা নর্দানে হামলা চালাতে গেলে সেখানকার শ্রমিকরা কারখানার ছাদ থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও বাইরে গরম পানি ছুড়তে থাকে।

পরে তারা বিকল্প পথে নর্দান কারখানা থেকে বের হয়ে চলে যাওয়ার সময় উত্তেজিত বহিরাগত শ্রমিকরা নর্দানে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সেখানে দমকল বাহিনীর গাড়ি যেতেও বাধা দেয় উত্তেজিত শ্রমিকরা।

এর আগে পাশেই প্যাট্টিয়ট ইকো অ্যাপারেলস নামের একটি নতুন কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বহিরাগত শ্রমিকরা। কারখানার প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুরের পর সেখানে একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

দমকল বাহিনীর কর্মীরা যেতে না পারায় কারখানার নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরে শিল্প পুলিশ গিয়ে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. এমদাদুল হক জানান, বুধবার সকালে মহানগরীর গাজীপুরা এলাকার মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা কারখানা থেকে বের হয়ে আশপাশের কারখানার সামনে গিয়ে শ্রমিকদের তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেয়ার আহ্বান জানায়।

আরকে//