‘হেফাজত আমিরের বক্তব্য রাষ্ট্রনীতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ’
প্রকাশিত : ০৩:১৬ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ০৩:১৮ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০১৯ শনিবার
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, মেয়েদের স্কুল-কলেজে না পড়ানোর আহ্বান হেফাজত আমিরের নিজস্ব অভিমত। এই বক্তব্য রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আজ শনিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর চশমাহিলের বাসায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নর্বনির্বাচিত শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, যিনি মেয়েদের পড়াশুনা নিয়ে যে মন্তব্য করছে, তার তার ব্যক্তিগত অভিমত। বাংলাদেশের শিক্ষানীতি প্রণয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনা অথবা শিক্ষা খাতে কোনো নির্বাহী দায়িত্বে তিনি নেই। যেহেতু তিনি কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অবস্থানে নেই, তিনি অভিমত দিলেই সেটা রাষ্ট্রীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্ত বা প্রতিফলিত হবে, এমন চিন্তা করবার অবকাশ নেই।
তিনি বলেন, দেশের যেকোনো নাগরিকেরই বাকস্বাধীনতা আছে। তার মনের ভাবনা প্রকাশ করার অধিকার আছে। তবে আমি সম্মানের সাথে বলব, আমরা সকলেই যারা বাকস্বাধীনতার চর্চা করছি, আমরা যেন এই বিষয়টা মাথায় রাখি যে- সংবিধান অনুসারে আমাদের সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা যেন বৈষম্যমূলক মন্তব্য না করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তককে সাম্প্রদায়িকীকরণ বা বিভাজন সৃষ্টি করা, কোমলমতিদের মানসিকতায় এসব বিভাজন দিয়ে দেয়া, দীর্ঘমেয়াদে সমাজের স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে। পড়াশোনা যদি সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হয় তাহলে অদূর ভবিষ্যত নয়, নিকট ভবিষ্যতও আমাদের জন্য বিপদজনক হয়ে পড়বে। তাই অসাম্প্রদায়িক,ধর্মনিরপেক্ষ কারিকুলাম অত্যন্ত প্রয়োজন। পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার মানোন্নয়নও খুবই প্রয়োজন। এতে সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে না।
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন,‘এক সময় বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে গেলে পুনরায় স্নাতক শ্রেণিতে পড়তে হতো। এখন দেশে শিক্ষার মান উন্নত হয়েছে এবং সনদও আন্তর্জাতিক মানের হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সহজেই মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা নিতে পারছে। এই মান ধরে রাখতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব।
প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার ১১৮তম বার্ষিক মাহফিলে মাদরাসার পরিচালক শাহ আহমদ শফী মাহফিলে উপস্থিত জনতার কাছ থেকে মেয়েদেরকে স্কুল-কলেজে না দিতে এবং দিলেও সর্বোচ্চ ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়ানোর জন্য ওয়াদা নেন। যা পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
টিআর/