মোদির দিন শেষ : মমতা বন্দোপাধ্যায়
প্রকাশিত : ০৮:০৪ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ শনিবার
(ফাইল ফটো)
পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, কলকাতার ব্রিগেড সব সময় ইতিহাস তৈরি করেছে। বাংলাদেশ হওয়ার পর প্রথম বিজয় উৎসব হয়েছিল এই ব্রিগেডে। ইন্দিরা-মুজিব মিলে সেই বিজয় উৎসব পালন করেছিলেন। ব্রিগেড সব সময় ইতিহাস তৈরির জন্য বিখ্যাত। দেশের প্রয়োজনে সবাই আমরা এক জায়গায় আসতে বাধ্য হয়েছি। মনে রাখবেন একটা শহর গুরুত্ব পায় না, কিন্তু অনেক শহর নিয়ে একটা দেশ তৈরি হয়। মোদির দিন শেষ। মনে রাখবেন বাংলার মাটি পবিত্র ঘাঁটি। এই মাটি স্বাধীনতা আন্দোলনের পথ দেখিয়েছে, নবজাগরণের পথ দেখিয়েছে। ভারত যখন সমস্যায় পড়েছে, তখন বাংলাই পথ দেখিয়েছে।
শত নয়, লাখো লাখো মানুষ! কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে সমাবেশে এ রকম জনস্রোত দেখে নেতারা শান্তিতে ফিরতে পারলেন নিজ নিজ রাজ্যে। মঞ্চ থেকে মহাজোট নেতারা জানালেন এতো মানুষের সমাগম ভাবতে পারনি। মমতা বলেছিলেন জোটের পক্ষ থেকে কলকাতায় নির্বাচনের প্রথম র্যালি করবো। সবাই আসুন। ভেবেছিলাম আর পাঁচটা র্যালির মতোই হবে। কিন্তু এটা র্যালি কই, এতো রেলা (ব্যাপক জনগণের বিপ্লবী সমাবেশ) দেখানো।
এমনই বললেন উত্তর প্রদেশের নেতা জয়ন্ত সিংহ। তার সঙ্গে তাল মেলালেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবও। এরকম র্যালির রেলা দেখে বিরোধীজোট স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও কপালে ভাঁজ পড়তেই পারে দিল্লির কেন্দ্রীয় শাসক গোষ্ঠীর।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেবে গৌড়া, পাঁচ রাজ্যের সাবেক এবং এক বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও বিভিন্ন প্রদেশের শক্তিশালী আঞ্চলিক দলগুলোর নেতৃত্ব মিলিয়ে ২৩ দলের নেতার মিলন ঘটলো সমাবেশের মঞ্চে। মঞ্চ পরিচালনা করেন খোদ মমতা। একে একে নেতাকে বলার সুযোগ করে দিলেন তিনি। কেউ ভাষণ দিলেন হিন্দিতে, কেউ তামিল ভাষায়, কেউ আবার ইংরেজিতে।
সমাবেশ থেকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, আমি মনে করি ভারতের রাজনীতিতে আজকের দিনটি যথেষ্ট ঐতিহাসিক। গত পাঁচ বছরের মোদি-অমিত শাহের জোট দেশকে খারাপ অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। মোদি বেকারদের ভুল বুঝিয়ে ভোট নিয়েছেন। যুবকরা চাকরি পাচ্ছে না। কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন। দেশে দলিত অত্যাচার হচ্ছে। মুসলমানদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। গত ৭০ বছরে পাকিস্তান চেয়েছে দেশকে টুকরো টুকরো করতে। কিন্তু তা পারেনি। আর পাঁচ বছরে বিজেপি তা-ই করে দেখাচ্ছে। ওরা হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে লড়াই বাঁধিয়ে দিচ্ছে। মোদি ২০১৯ -এ আবার ক্ষমতায় এলে, দেশ টুকরো হয়ে যাবে। যে করেই হোক মোদি-অমিত শাহকে রুখতে হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লা বলেন, আজ আমরা সমাবেশ করছি, কালকে ওরা (বিজেপি) বলবে একজনকে সরানোর জন্য আমরা জোট বেঁধেছি। বিষয়টা একজনকে (মোদি) হটানোর নয়। এটা দেশ বাঁচানোর লড়াই। একটা চিন্তার পরিবর্তনের জন্য আমরা একজোট হয়েছি। জম্মু-কাশ্মীরে অবস্থা ভয়ানক। ওরা মনে করে মুসলমানরা ভারতীয় নয়। ওরা ভুলে যায় আমরাও এদেশেরই সন্তান। গোটা দেশে বিজেপিবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। এবার দেশে নতুন সরকার হবে।
মহাজোটের উদ্দেশে মমতা বলেন, এখান থেকে শুরু হলো। আপনারা কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী নিজ নিজ রাজ্যে প্রচার শুরু করুন, আমরা সবাই যাবো সেখানে। মোদির উদ্দেশে বলেন, আচ্ছে দিনের অনেক সময় পেয়েছেন কিন্তু আনতে পারেননি। জোটের উদ্দেশে বলেন, অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন। এবার দিল্লি বদলে দিন। আমার জন্মভূমি সব দেশের রানি। এই ভূমিতে দাঙ্গা চাই না, বিদ্বেষ চাই না, ভেঙে যেতে দেবো না।
এসএইচ/