আফগান সংকট অবসানের পথ কি খুলবে?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩৩ এএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৮:৩৬ এএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ রবিবার
তালেবানদের মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী
যুক্তরাষ্ট্রের দূত কাতারে ছয়দিন ধরে আলোচনার পর কাবুল যাচ্ছেন। তালেবানদের সাথে আলোচনায় খুলবে আফগান সংকট অবসানের পথ?
যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের তালেবান প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনায় দেশটির সতের বছর ধরে চলা সংকটের অবসানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দূত। এ নিয়ে একের পর এক টুইট করেছেন জালমে খালিলজাদ কিন্তু বিস্তারিত কিছু বলেননি।
তবে তিনি কাতারে ছয় দিন ধরে যে আলোচনা চলছে তাকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে একে অতীতের চেয়ে বেশি ফলপ্রসূ দাবি করেছেন। এখন তিনি কাবুলে গিয়ে দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন।
এর আগে তালেবানদের একটি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছিলো যে উভয় পক্ষ সমঝোতার একটি খসড়া তৈরি করেছে। ওই সমঝোতায় আফগানিস্তান থেকে যেমন বিদেশী বাহিনী প্রত্যাহারের পাশাপাশি বলা হয়েছে তেমনি আল-কায়েদা ও কথিত ইসলামিক স্টেট গ্রুপ আফগানিস্তানকে ঘাঁটি বানাতে পারবেনা।
খালিলজাদ জানিয়েছেন তালেবানদের সাথে আলোচনা চলবে এবং কিছুই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। জানা গেছে সরাসরি আফগান কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনায় রাজি নয় তালেবান। যাদের তারা ‘পাপেট’ বা ‘পুতুল’ মনে করে।
তারা বলেছে সরকারের সাথে আলোচনা তখনি শুরু হবে যখন যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী প্রত্যাহারের চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারিত হবে। তালেবান সূত্র উদ্ধৃত করে রয়টার্স বলছে সমঝোতার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আফগানিস্তান থেকে বিদেশী বাহিনী ১৮ মাসের মধ্যে শুরু করা।
এর বিপরীতে তালেবান নিশ্চয়তার আশ্বাস দিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণের জন্য আফগানিস্তানকে ঘাঁটি বানাতে পারবেনা আল-কায়েদা বা ইসলামিক স্টেট।
এছাড়া বন্দী বিনিময়, তালেবান নেতাদের কয়েকজন ওপর ভ্রমণ বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও দু পক্ষ একমত হয়েছে বলে রয়টার্সের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি ইতোমধ্যে বলেছেন তালেবানকে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে যদি তারা যুদ্ধবিরতি গ্রহণ করে ও দেশের সংবিধান মেনে নেয়।
গত ডিসেম্বরেই খবর বেড়িয়েছিলো যে যুক্তরাষ্ট্র অন্তত সাত হাজার সৈন্য সরিয়ে নিতে চায় আফগানিস্তান থেকে, এটি সেখানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের মোট সৈন্যের প্রায় অর্ধেক।
কারা এই তালেবান ?
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯০ এর দশকে সোভিয়েত বাহিনী প্রত্যাহারের পর তালেবানের উত্থান ঘটে আফগানিস্তানে। তালেবান জঙ্গিরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশটিকে শাসন করে এবং এসময় তারা নিষ্ঠুর শরিয়া আইন চাপিয়ে দেয়।
এর ফলে নারীদের প্রকাশ্য কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায় ও চালু হয় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের মতো বিষয়গুলো। আবার ৯/১১ এর ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র বাহিনী তাদের উৎখাত করে।
ওয়াশিংটন তখন যুক্তরাষ্ট্রে হামলাকারী আল কায়েদাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তোলে তালেবানের বিরুদ্ধে। পরে ২০১৪ সালে বিদেশী বাহিনীর বড় অংশ আফগানিস্তান থেকে চলে গেলে তালেবান আবার সংঘটিত হতে শুরু করে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
এমএইচ/