ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ক্যান্সার রোগীদেরকে যে কথা বলা উচিত নয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৪ এএম, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:১৩ এএম, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার

স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ৪৭ বছরের ম্যান্ডি মাহানি

স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ৪৭ বছরের ম্যান্ডি মাহানি

যোদ্ধা, লড়াকু, হিরো- ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আপনি হয়তো কখনো এসব শব্দ ব্যবহার করে থাকতে পারেন। কিন্তু নতুন একটি জরিপ বলছে, আক্রান্তদের অনেকে এ ধরণের শব্দে গর্বিত বা আনন্দিত হওয়ার পরিবর্তে মনঃক্ষুণ্ণ হন।

যুক্তরাজ্যের ম্যাকমিলান ক্যান্সার সাপোর্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান দুই হাজার ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর জরিপ চালিয়ে দেখতে পেয়েছে, ‘ক্যান্সার আক্রান্ত’ বা ‘শিকার’ শব্দগুলোও তারা খুব অপছন্দ করেন।

দাতব্য সংস্থাটি বলছে, এটি প্রমাণ করে যে, খুব সাধারণ শব্দও কতটা বিভেদ সৃষ্টিকারী হতে পারে। কেউ ক্যান্সার সনাক্ত হওয়ার পর সেটিকে যুদ্ধ বা লড়াই বলে বর্ণনা করা, তিনি মারা গেলে যুদ্ধে হেরে গেছেন বলা- অপছন্দনীয় বাক্যগুলোর অন্যতম।

গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরণের শব্দ সম্বলিত লেখা সবচেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক বলে ক্যান্সারের রোগীরা মনে করেন।

ক্যান্সারে শনাক্ত হওয়া বা চিকিৎসাকে সহজ এবং বাস্তব শব্দে বর্ণনা করাকেই এই ব্যক্তিরা পছন্দ করেন বলে জরিপে বেরিয়ে এসেছে।

স্তন ক্যান্সারে ভোগা ৪৭ বছরের ম্যান্ডি মাহানি বলছেন, ‘আমি মনে করি ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এখনো যেসব শব্দ বলা হয়, তার বেশিরভাগই নেতিবাচক-সাহসী, লড়াকু, যোদ্ধা, টিকে যাওয়ার মতো শব্দ নতুন সনাক্ত হওয়া রোগীদের মনের ওপর অত্যন্ত চাপ তৈরি করে।’

কেউ মারা যাওয়ার পর লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার মতো শব্দেও তার আপত্তি রয়েছে। ‘এর মানে যেন আপনি লড়াই করেননি বা হাল ছেড়ে দিয়েছেন।’

বরং তার পরিবর্তে তিনি সহজ শব্দ ব্যবহারের পরামর্শ দেন। যেমন তার ক্ষেত্রে তিনি শুনতে পছন্দ করবেন যে, ‘তিনি দুরারোগ্য ক্যান্সারের সঙ্গে বাস করছেন।’

‘আমি কোন সাহসী ব্যক্তি নই বা কারো জন্য উদাহরণ নই। আমি শুধু যে কয়েকটা দিন বাকি আছে, সেটা ভালো ভাবে বেঁচে থাকতে চাই।’

তবে ৩১ বছর বয়সী ক্রেইগ, ২০১৬ সালে যার থাইরয়েড ক্যান্সার সনাক্ত হয়েছে, তিনি বলছেন, যুদ্ধ, সংগ্রাম বা লড়াইয়ের মতো কোন কোন শব্দ তাকে অনুপ্রাণিত করে।

‘ব্যক্তিগতভাবে এসব শব্দ আমাকে উৎসাহ যোগায়। তখন আমাকে ভাবতে সহায়তা করে যে, ক্যান্সার আমার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, যেটির সঙ্গে আমাকে লড়তে হবে।’

ম্যাকমিলান ক্যান্সার সাপোর্টের কর্মকর্তা কারেন রবার্টস বলছেন, ‘এই জরিপের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, সাধারণ শব্দগুলোই কতটা বিভক্তি সৃষ্টিকারী হতে পারে।’

‘এ বিষয়ে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে আমরা এই মানুষের কাছে এই বার্তাটি দিতে চাইছি যেন, তারা যেন আলাপের সময় এমন শব্দ বাছাই করেন, যা তারা শুনতে পছন্দ করেন এবং তাদের জন্য কোনরকম ক্ষতিকর না হয়।

ম্যান্ডি বলছেন, ‘এর মানে এই নয় যে, কাউকে একটা পাঠ্যবই মুখস্থ করে আসতে হবে আর সেগুলোই বলতে হবে। আমি বলবো, বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা নিয়ে কথা না বলাই ভালো। তবে কথা বলতে হলে যা সত্যি, সেভাবেই বললে ভালো।’

তথ্যসূত্র: বিবিসি

এমএইচ/