স্কুল-মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কোয়ান্টাদের সাফল্য
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:০৬ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০২:৫৭ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ বুধবার
৪৮ তম (২০১৯) শীতকালীন জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ভলিবল, ব্যাডমিন্টন একক, ব্যাডমিন্টন দ্বৈত, টেবিল টেনিস একক এবং টেবিল টেনিস দ্বৈত- এই ৫টিতে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের মেয়ে কোয়ান্টাদের দল অংশগ্রহণ করে। এছড়া ভলিবল, ব্যাডমিন্টন একক, ব্যাডমিন্টন দ্বৈত, টেবিল টেনিস একক, টেবিল টেনিস দ্বৈত, বাস্কেটবল এবং অ্যাথলেটিকস- এই ৭টি ইভেন্টে ছেলে কোয়ান্টাদের দল অংশগ্রহণ করে।
গত ৬ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা মোট ৫টি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা (লামা) পর্যায়ে এবং জেলা (বান্দরবান) পর্যায়ে মেয়ে ও ছেলে কোয়ান্টাদের উভয় দল সবগুলো প্রতিযোগিতায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপর তারা চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত উপ-অঞ্চল পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম জেলার সেরা দলগুলো।
আঞ্চলিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন দলগুলোকে নিয়ে ২২-২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামে অুনষ্ঠিত হয় জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা।
টেবিল টেনিস
উপ-অঞ্চল পর্যায়ে কোয়ান্টা (মেয়ে) রেশমী তঞ্চঙ্গ্যা ও খই খই সাই মার্মা জুটি কাফকো স্কুলকে ৩-০ সেটে পরাজিত করে। আর একক প্রতিযোগিতায় রেশমী তঞ্চঙ্গ্যা একই স্কুলকে ৩-০ সেটে পরাজিত করে।
অন্যদিকে কোয়ান্টা (ছেলে) রামহিমলিয়ান বম ও পাঅং বম জুটি কাফকো স্কুলকে ৩-০ সেটে পরাজিত করে। একক প্রতিযোগিতায় রামহিমলিয়ান বম একই স্কুলকে ৩-০ সেটে পরাজিত করে।
কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত অঞ্চল পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় মেয়ে ও ছেলে উভয় কোয়ান্টারা সিলেট ও কুমিল্লা জেলা দলকে একক ও দ্বৈত উভয় ইভেন্টে ৩-০ সেটে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।
জাতীয় পর্যায়ে মেয়ে কোয়ান্টাদের দলটি চাঁপা অঞ্চলের রাজশাহী জেলা দল এবং পদ্ম অঞ্চলের ঢাকা জেলা দলের সাথে প্রতিযোগিতা করে। এতে তারা টেবিল টেনিস (বালিকা) দ্বৈত ইভেন্টে জাতীয় পর্যায়ে রানার আপ হয়।
রামহিমলিয়ান বম ও পাঅং বম জুটি টানা চতুর্থবারের মতো জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এক ইভেন্টে রামহিমলিয়ান বম রানার-আপ হয়।
ভলিবল
১৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় মেয়ে কোয়ান্টারা নোয়াখালী জেলা দলকে ২-০ সেটে পরাজিত করে। পরদিন ১৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা দলকে ২-১ সেটে পরাজিত করে মেয়ে কোয়ান্টারা। দুপুরে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির মেয়ে কোয়ান্টাদের এই দলটি পরপর দুইবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন খাগড়াছড়ি জেলা দলটির কাছে পরাজিত হয়ে উপ-অঞ্চল পর্যায়ে রানার আপ হয়।
আর ভলিবল বালক প্রতিযোগিতায় উপ-অঞ্চল পর্যায়ে রাঙামাটি ও কক্সবাজার জেলা দলকে পরাজিত করে কোয়ান্টারা চ্যাম্পিয়ন হয়। অঞ্চল পর্যায়ে কুমিল্লায় সিলেট ও কুমিল্লা জেলা দলকে পরাজিত করে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়।
জাতীয় পর্যায়ে প্রথমে চাঁপা অঞ্চলের লালমনিরহাট জেলা দল, এরপর পদ্ম অঞ্চলের ময়মনসিংহ জেলা দল এবং সবশেষে গোলাপ অঞ্চলের বাগেরহাট জেলা দলকে পরাজিত করে জাতীয় পর্যায়ে পর পর দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয় কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ ভলিবল দল।
এথলেটিকস
কোয়ান্টারা এখানে বালক বড় ও বালক মধ্যম উভয় বিভাগে অংশ নেয়। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্যায়ে বালক বড় বিভাগে ২০০ ও ৪০০ মিটার দৌড়ে জুবাইল ইসলাম স্বর্ণপদক, ৮০০ ও ১৫০০ মিটার দৌড়ে মোশারফ হোসেন স্বর্ণপদক, দণ্ডযোগে উচ্চ লাফ (পোল ভল্ট) ও দড়িলাফে আফদার আলী শেখ স্বর্ণপদক এবং লাফ-ধাপ-ঝাঁপে (ট্রিপল জাম্প) বেবিজালেননোয়াম বম রৌপ্যপদক লাভ করে। ৪X২০০ মিটার যোগাযোগ দৌড়ে (রিলে রেইস) জুবাইল ইসলাম লাভ করে রৌপ্যপদক। আর বালক মধ্যম বিভাগে ২০০ মিটার দৌড়ে ওয়াইগ্য মার্মা রৌপ্যপদক, দড়িলাফে রবিউল হাসান স্বর্ণপদক ও উসেনু মার্মা রৌপ্যপদক এবং লাফ-ধাপ-ঝাঁপে (ট্রিপল জাম্প) চংয়া মুরুং ব্রোঞ্জপদক লাভ করে। আর বালক বড় বিভাগে জুবাইল ইসলাম ব্যক্তিগত রানার আপ হয়।
বাস্কেটবল
কোয়ান্টাদের বাস্কেটবল মাঠ তৈরি হয়েছে প্রায় ৩ মাস আগে। এই স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে কোয়ান্টারা প্রতিযোগিতা করেছে গত কয়েকবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন দলের সঙ্গে।
১৫ জানুয়ারি সেন্ট প্লাসিডস উচ্চ বিদ্যালয়ের বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে স্বাগতিক দলের সঙ্গে হেরে উপ-অঞ্চল পর্যায়ে কোয়ান্টারা রানার আপ হয়।
ব্যাডমিন্টন
ছেলে কোয়ান্টারা একক ও দ্বৈত ইভেন্টে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে উপ-অঞ্চল পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। মেয়ে কোয়ান্টারা একক ও দ্বৈত ইভেন্টে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে উপ-অঞ্চল পর্যায়ে একক ও দ্বৈত উভয় ইভেন্টে রানার আপ হয়। বালিকা একক ইভেন্টে অষ্টম শ্রেণির কোয়ান্টা নাদিরা তাহসিন রানার আপ এবং দ্বৈত ইভেন্টে নাদিরা তাহসিন ও ষষ্ঠ শ্রেণির কোয়ান্টা মউ মউ খয় মার্মা রানার আপ হয়।
৪৮তম জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া (শীতকালীন) প্রতিযোগিতা ২০১৯-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয় গত ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ শনিবার চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। অনুষ্ঠানে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের কোয়ান্টাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম।
এর আগে ৪৭ তম (২০১৮) গ্রীষ্মকালীন জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের ছেলে কোয়ান্টাদের হ্যান্ডবল দল জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পায়। জাতীয় পর্যায়েও অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে মোট পাঁচবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হলো তারা। এর মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয়বার একই ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বিরল নজির গড়ল কোয়ান্টারা।
২০১৮ সালে হ্যান্ডবল ইভেন্টের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয় রাজশাহীতে। এতে অংশ নেয় বকুল, গোলাপ, পদ্ম ও চাঁপা অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন দলগুলো। বকুল অঞ্চলের সেরা দল কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ ১৩-৭ গোলে গোলাপ অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন দল কুষ্টিয়া জিলা স্কুলকে পরাজিত করে। পদ্ম অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন স্কুল ময়মনসিংহ জিলা স্কুলকে ৩১-৪ গোলে পরাজিত করে কোয়ান্টারা। সবশেষে চাঁপা অঞ্চলের ফুলকুঁড়ি ইসলামিক একাডেমীকে ২৫-১৭ গোলে পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে আনে।
আর ২০১৮ সালে জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ৪৭তম গ্রীষ্মকালীন পর্বে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েই আঞ্চলিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের মেয়ে কোয়ান্টাদের হ্যান্ডবল দল।