ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১

একটি পরিবারকে নিঃস্ব করে দেয় একটি সড়ক দুর্ঘটনা

প্রকাশিত : ০২:৩৪ পিএম, ১ অক্টোবর ২০১৬ শনিবার | আপডেট: ০২:৩৭ পিএম, ১ অক্টোবর ২০১৬ শনিবার

এক একটি সড়ক দুর্ঘটনা নিঃস্ব করে দেয় একটি পরিবারকে। প্রিয়জন হারানোর কষ্ট সারা জীবন বয়ে নিয়ে বেড়ায় পরিবারগুলো। অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতি, ফিটনেসহীন গাড়ি, বিআরটি’র উদাসীনতাসহ নানা কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে চালক, মালিক ও সড়ক-পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিচ্ছে বহু তাজা প্রাণ। প্রিয়জন হারিয়ে এরকম কান্না যেন সারা জীবনের। রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান ও তাঁর স্ত্রী রওশান আরা। ঈদের পরদিন সকালে ফাঁকা রাস্তায় এভাবেই নেশাগ্রস্ত প্রাইভেট কার চালক তাদের দুজনকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। শেওড়াপাড়ার একটি গার্মেন্টসের সিসিটিভির ফুটেজে ধরা পড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি। মা-বাবার এরকম করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাদের ছেলে মোহাম্মদ রায়হান। তিন বছরের শিশু আয়নের চোখ খুজে বেড়ায় তা দাদা-দাদীকে। বরাবরের মতই পুলিশ বাদি হয়ে মামলাও করেছে। ঈদের পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এই মৃত্যুই বলে দিচ্ছে ভয়াবহতা। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সোনারা বেগম স্বামী ও ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। ছেলে বিয়ে করে নতুন বৌ নিয়ে বাড়ি আসবে, পুরো বাড়িতে যখন আনন্দের ফোয়ারা ঠিক সেই সময়ে বিয়ের গাড়ির সাথে বাসের সাথে সংঘর্ষে মারা যায় আটজন। দেশে সড়কের যে সক্ষমতা, তাতে গাড়ির গতি হওয়া উচিত ঘন্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার। গতিদানব চালকের গাড়ির গতি ওঠে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। দুর্ঘটনা এড়াতে পদক্ষেপ নেয়া হয় অনেক কিন্তু, বাস্তবসম্মত কি-না সেটাই প্রশ্ন। সঠিক প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে চালকেদরও। বুয়েটের গবেষনায় দেখা গেছে বিগত ১৭ বছরে ৫৩ হাজার একশ একানব্বইটি সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৬০৫। বছরে গড়ে ৫ হাজার চুরানব্বই জনের মৃত্যু হয়েছে সড়কে। ২০১৫ সালের দুই ঈদেই চারশরও বেশি মানুষ নিহত হয়, আহত হয়েছিল ১২শোর বেশি। আর এ বছর দুই ঈদে প্রাণ গেছে ৫ শ’রও বেশি মানুষ। অসংগতি রয়েছে বিআরটিএ অফিসেও। আন্তজার্তিক মানদন্ড অনুযায়ী মটর ভেইকেল টেসটিংয়ের জন্য ৫৯টি পরীক্ষা করার কথা। কিন্তু দায়সারাভাবে পরীক্ষা করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে গাড়িগুলো। বিআরটিএর এই কর্মকর্তাই বলছেন, দুর্ঘটার অন্যতম কারন ত্র“টিযুক্ত গাড়ি। তবে সবার সমন্বিত উদ্যোগে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।