মার্কিন রাষ্ট্রদূত-বাণিজ্যমন্ত্রী বৈঠক
টিকফা অর্থবহ করতে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:২৬ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:৩০ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি বলেছেন, বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পাদিত টিকফা চুক্তি অর্থবহ করতে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। গত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মুল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে বাংলাদেশ আমদানি করেছে প্রায় ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে মতবিনিময় করে সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। যে কোন পরিমান তৈরি পোশাক রপ্তানির সামর্থ অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চায়, ঘনিষ্টভাবে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে কাজ করতে চায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে, এগুলোর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে। বিনিয়োগের জন্য সব প্রকার সুযোগ সুবিধা নিশ্চত করা হয়েছে। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশে এনার্জি, পাওয়ার, শিপিং, এলএনজি এবং এয়ারলাইন্স সেক্টরে প্রায় ২ বিলিয়নের বেশি মার্কিন বিনিয়োগ রয়েছে। এ বিনিয়োগের পরিমান অনেক বৃদ্ধির সুযোগ এসেছে। এতে করে উভয় দেশ লাভবান হবে।
টিপু মুন্শি বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তায় সুনিদিষ্ট পরিবর্তন এসেছে। এ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও ন্যাশনাল ইনেশিয়েটিভ কারখানাগুলো পরিদর্শন করেছে। এখন পর্যন্ত ৯০ ভাগের বেশি কারাখানা পরিদর্শন সম্পন্ন হয়েছে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশে নতুন নতুন গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। শ্রমিকদের মজুরি সময়োপযোগী করা হয়েছে। সংগত কারণে তৈরি পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। এ সব পণ্যের উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ালে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির সুযোগ পাবে। স্বাভাবিক নিয়মে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান কমে আসবে। তৈরি পোশাক ছাড়াও বাংলাদেশে অনেক রপ্তানি পণ্য রয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে আমি একজন ভালো সেলস ম্যান হতে চাই। বাংলাদেশের সাথে মার্কিন যুক্তসাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশ ভালো। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো কাজের পরিবেশ সুনিদিষ্ট উন্নতি হয়েছে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর শ্রমিকদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, ইলেক্ট্রিক সিকিউরিটি নিশ্চিত হয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য বৃদ্ধি করলে উভয় দেশ উপকৃত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সিঙ্গেল কান্ট্রি হিসেবে সবচেয়ে বড় তৈরি পোশাকের বাজার। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান অনেক। বাংলাদেশে মার্কিন বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে কমার্শিয়াল কাউন্সিলয় নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এস এম রেদওয়ান হোসেন, ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরী এবং রপ্তানি শাখার অতিরিক্ত সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।
কেআই/এসএইচ/