সোহাগের লেখনীতে নগরীর গন্ধমাখা প্রেম-বিরহের আখ্যান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৫১ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৮:৪১ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বুধবার
কোনো ঘোর নেই, নেই কোনো প্রহেলিকা৷ সোজাসাপ্টা ভাষায় নিজের কথাটাকেই কবিতার ছাঁচে ফেলে বলা৷ পেশাদার জীবন এবং প্রেম-বিরহ-আবেগ আর ভালোবাসার আশ্চর্য মিশেলে নিজের জীবনদৃষ্টির এক সরল সৃষ্টিশীল প্রকাশ৷ বইটির নাম ‘শাওন রাতে সুনয়না’৷ ৪২টি কবিতার সংকলন এই গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে কারুবাক প্রকাশনী (স্টল নম্বর:৫৩৭, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)৷
বইটির লেখক কামরুল হাসান সোহাগ পেশায় নগর পরিকল্পনাবিদ৷ পেশাদারিত্বের বাইরেও তাঁর ধ্যান লেখালেখিতে৷ শব্দের শক্তিতে তাঁর পূর্ণ আস্থা৷ এবারের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘শাওন রাতে সুনয়না’৷ গত বইমেলায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভালোবাসা এই চিরহরিৎ’৷
কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, ‘আমার নতুন এই কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতা অর্থবহ। খুবই অল্প সময়ে বইটির কাজ শেষ করতে হয়েছে। আমি কবিতার মাধ্যমে মানুষের জীবনের ভেতরের রুপটাকে বের করে আনার চেষ্টা করেছি। যেমন- রিকশাওয়ালারা বেপরোয়া গাড়ি চালায়, তাদের যে বোধ নেই সে বিষয়টিকে তুলে আনার চেষ্টা করেছি। খেলার মাঠ নিয়েও আমি চিন্তা করি। পূর্বাচলের সাহেব আলীকে নিয়ে লিখেছি যার জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এভাবে মানবিক ও সমসাময়িক বিষয়গুলো আমার কবিতায় স্থান পেয়েছে।’
কামরুল হাসান সোহাগের প্রতিভাও বহুমাত্রিক৷ তিনি একাধারে একজন কবি, ঔপন্যাসিক ও গল্পকার৷ এবারের বইমেলায় কারুবাক থেকেই আসছে তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘ছায়া মামনি’৷ ব্যস্ত ও যান্ত্রিক শহুরে জীবনে বাবা-মার স্নেহবঞ্চিত শিশুদের দুঃখ ও অসহায়ত্বের এক মানবিক উপাখ্যান `ছায়া মামনি`৷ ডে কেয়ার সেন্টারে প্রতিপালিত শিশুদের যন্ত্রণার এক কোমল ভাষ্য এই উপন্যাস৷ এছাড়াও, ভাষাপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ `বিট্টুর নতুম বেব্লেড`৷
কামরুল মনে করেন তাঁর বইগুলো পাঠকেরা গ্রহণ করবেন৷ তাঁর বক্তব্য, বাস্তব জীবনের সত্য ছবিকে তিনি সাবলীল ভাষারূপ দিয়েছেন৷ তাঁর প্রতিটি বাক্যই খুব সহজে বোধগম্য৷ বর্তমান সময়ের মানুষ জটিলতা তেমন পছন্দ করে না৷ তাই তাঁর প্রত্যাশা, তিনি সত্যিকারের পাঠকদের সাড়া পাবেন৷
সৃষ্টিশীল এসব কাজেই শুধু নয়, পেশাদার জীবনেও কামরুল হাসান সোহাগ সমান সব্যসাচী৷ ২০০৪ সালে রাজউকে যোগ দেন৷ বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির উপ-নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে কাজ করছেন৷ নগরায়ন ও সরকারব্যবস্থা এবং নগর পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের ওপর তাঁর দুটি গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে৷ নগর পরিকল্পনাবিদদের পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) বোর্ড মেম্বারও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি৷ বিআইপি জার্নালের সম্পাদকীয় বোর্ডের একজন সদস্য কামরুল হাসান সোহাগ৷
১৯৭৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর খুলনার ডুমুরিয়ায় এই লেখকের জন্ম৷ অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার বাবা ও শিক্ষিকা মায়ের সন্তান তিনি৷ তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়৷ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা বিষয়ে স্নাতক ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্নাতকোত্তর শেষে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দাতা সংস্থায় কাজের মধ্যে দিয়ে কর্মজীবন শুরু৷ `কেয়ার বাংলাদেশ`-এ টেকনিক্যাল অফিসার হিসেবে বগুড়া ও রংপুর অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করেন চার বছর৷ সবশেষ ২০০৪ সালে যোগ দেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউকে৷
এসি