ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

চলতি বছর আমাদের গা পুড়বে অসম্ভব গরমে: নাসা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৯ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শনিবার

শিল্প বিপ্লবের পর উনিশ শতকে বিশ্বের তাপমাত্রা গড়ে যতটা বেড়েছিল, তার চেয়েও তাপমাত্রা অন্তত ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১ দশমিক ৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট বেড়েছে, শুধুই গত বছরে। এই বছরেও আমাদের গা পুড়বে অসম্ভব গরমে। দারুণ দহন-জ্বালায় জ্বলতে হবে আমাদের।

আগামী ৫ বছরের মধ্যে যে কোনও একটি বছরে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট উষ্ণায়নের দৌলতে।

উষ্ণায়নের সমস্যাকে যিনি গুরুত্বই দিতে চান না, সেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ওই তথ্য দিয়ে একই সঙ্গে ভুল প্রমাণ করল রাষ্ট্রপুঞ্জ, মার্কিন মহাকাশ সংস্থা ‘নাসা’ ও সমুদ্র গবেষণা সংস্থা ‘নোয়া’। তিনটি সংস্থাই গত বুধবার আলাদাভাবে জানাল, ভয়ঙ্কর বিপদে পড়ে গেছে সভ্যতা। তার সামনে এখন শুধুই মরণ-বাঁচনের প্রশ্ন। আর বেঁচে থাকার সেই সম্ভাবনাটাও ঝুলছে শুধুই একটা সুতোর উপর! যার এক ও একমাত্র কারণ, আমরাই দ্রুত বিষিয়ে দিচ্ছি প্রকৃতি ও পরিবেশকে। জেনেশুনেই বিপন্ন করে তুলছি আমাদের অস্তিত্ব। অস্বীকার করছি বেঁচে থাকার অধিকারকে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনস্থ ওয়ার্ল্ড মেটিরিওলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও)-এর সেক্রেটারি-জেনারেল পেট্টেরি টালাস বলেছেন, ‘গত ২২ বছরের মধ্যে ২০টি বছরই ছিল গত এক শতাব্দিতে উষ্ণতম।

গত বুধবারই নাসা এবং নোয়া ওয়াশিংটনে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছে, ২০০১ থেকে শুরু করে একুশ শতকের প্রথম দু’টি দশকে ২০১৮ সালটি ছিল চতুর্থ উষ্ণতম বছর। ২০১৯ সালটি হবে পঞ্চম উষ্ণতম। আর এই দু’টি দশকে সবচেয়ে গরমের বছরটি ছিল ২০১৬। শিল্প বিপ্লবের পর এতটা উষ্ণ হয়নি আর কোনও বছর। গত দেড়শো বছরের মধ্যে ২০১৬ সালটির উষ্ণতম হওয়ার প্রধান কারণ অবশ্য প্রশান্ত মহাসাগরের ‘এল নিনো’।

ডব্লিউএমও, নাসা এবং নোয়া, এই তিনটি সংস্থাই জানিয়েছে, ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের ১৯০টি দেশ শিল্প বিপ্লবের সময়ের চেয়ে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা-বৃদ্ধিকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার অঙ্গীকার করলেও, এই শতাব্দির শেষে পৌঁছে তা আদৌ সম্ভব হবে না। তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি বেড়ে যাবে।

ডব্লিউএমও, নাসা এবং নোয়া, এই তিনটি সংস্থাই জানিয়েছে, বন্যা, দাবানল, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। মৌসুমগুলোর স্বাভাবিক মেয়াদের রদবদল ঘটেছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। তার ফলে, বিশ্বজুড়েই চাষবাস, সেচ দারুণভাবে মার খেয়েছে।

নাসা ও নোয়া জানাচ্ছে, গা পোড়ানো গরম দেখেছে অস্ট্রেলিয়া, চলতি বছরের জানুয়ারিতে। গত দেড়শো বছরে এতটা গরম পড়তে দেখা যায়নি অস্ট্রেলিয়ায়। সুমেরুর আবহাওয়া (পোলার ভর্টেক্স) কিছু দিনের জন্য গ্রাস করেছিল মধ্য ও পশ্চিম আমেরিকার একটি বিশাল অংশকে। জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকটা পর্যন্ত।

সূত্র: আনন্দবাজার

একে//