চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ঋতুরাজ বসন্ত বরণ উৎসব পালিত
জুবাইর উদ্দিন, চবি সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০৮:১৮ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০৯:২২ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বুধবার
ফাল্গুনের হাত ধরেই প্রকৃতিতে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটে। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়েছে। বসন্তের আগমনে প্রকৃতির সঙ্গে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা। সকল কুসংস্কারকে পেছনে ফেলে, বিভেদ ভুলে, নতুনের প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা নিয়ে বসন্ত উপস্থিত হয়েছে। আর তাই তো বসন্তের আনুষ্ঠানিক বার্তা জানান দিতে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় লিখেছেন- ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’। বসন্তের আগমনকে ঘিরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের ঐকতান জানান দেয় বসন্ত এসে গেছে। আর তাই বাসন্তী রং শাড়ি পড়ে, কপালে টিপ, হাতে কাঁচের চুড়ি, পায়ে নুপুর, খোঁপায় গাঁদা ফুল আর ছেলেরা ফতুয়া-পাঞ্জাবি, ফতুয়া পড়ে ভালোবাসার বসন্ত বন্দনায় মুখরিত করে সাঁটলের ক্যাম্পাস।
বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে আড্ডায় ব্যস্ত ছিলো। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ছিল নবীনের দখলে। বেশির ভাগ তরুণ-তরুণীদের ছবি তুলে সামাজিক গণমাধ্যমে শেয়ার করতে দেখা গেছে। বসন্ত অনেক ফুলের বাহারে সজ্জিত হলেও গাঁদা ফুলের রঙকেই পোশাকে ধারণ করে তরুণ-তরুণীরা। খোঁপায় শোভা পায় গাঁদা ফুলের মালা।
শীতের রুক্ষতার প্রকৃতির রিক্ততায় ক্যাম্পাসে ছিল না প্রাণের জোয়ার। কিন্তু গাছে গাছে ফুলের মৌ মৌ গন্ধ আর প্রজাপতির উড়াউড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণের বোটানিক্যাল গার্ডেনে এখন বসন্তের আগমনী বার্তা বইছে।
বুধবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী নানা আয়োজনে বরণ করে নিয়েছে ঋতুরাজকে। উদীচীর বর্ণাঢ্য এই উৎসবের আয়োজনে বসন্তের প্রকৃতি বর্ণনা ও বন্দনা করা ছাড়াও বাঙালির জীবনে বসন্তের প্রভাব নানা ব্যঞ্জনায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
বসন্তের শুভেচ্ছা জানিয়ে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বসন্তের এ দিনে আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীরা অন্যায়-অবিচার-দুর্নীতি ও সন্ত্রাসকে প্রতিহত করে সকল কুসংস্কার ও অন্ধকার শক্তিকে নিধন করে আলোর প্রজ্জ্বলন ঘটিয়ে দেশ তথা বিশ্বকে আলোকিত করবে এটিই হোক বসন্তের শপথ।’
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আহমদ সুমন বলেন, ‘বসন্ত সব সময় মনেই থাকে। প্রকৃতি তাকে রাঙিয়ে তোলে কেবল’
রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শবনম তন্বী বলেন, ‘সকাল থেকেই শাড়ি পড়ে এসেছি। আজ খুবই ভালো লাগছে। বন্ধুদের সাথে ছবি তুলেছি, ঘুরছি। বসন্ত আমার কাছে ঈদ উৎসব।’
বাংলা পঞ্জিকা বর্ষের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনকে আমরা পালন করি ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’ হিসেবে পালন করি। এ উৎসব এখন পরিণত হয়েছে বাঙালির নিজস্ব সার্বজনীন প্রাণের উৎসবে। বসন্তের প্রথম মুহূর্তকে ধরে রাখতে তাই তো সবাই মেতে ওঠে নানা উৎসব ও সাজে। বাসন্তি রঙের শাড়িতে বাঙালি নারীকে অপরূপ দেখায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আতিকা চৌধুরী আদ্রিতা, আফিয়া ফারজানা, তুলতুল রামিছা এবং তৌসি বসন্তকে বরণ করতে নিজেদের উদ্যোগে বসিয়েছে মেহেদী দেওয়ার স্টল। যেখানে তরুণীরা এসে লাগিয়ে নিচ্ছেন ইচ্ছে মত মেহেদী।
কেআই/