ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

‘বৌ তুই ভাত বাড়, বাসায় আইস্যা খামু’

আলী আদনান

প্রকাশিত : ০৬:৩৪ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৬:৩৮ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

`বৌ, তুই ভাত বাড়। আমি বাসায় আইস্যা ভাত খামু`। এটিই ছিল ইছহাক ব্যাপারীর বৌয়ের সাথে শেষ কথা। কিন্তু ভাত খাওয়া হয় নি তার। তার বাসায় ফেরার আগেই চকবাজারে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে লাগা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় সে। চেনা না যাওয়া লাশটির জন্য মর্গের সামনে অপেক্ষা করছে তা বোন হাছিনা বানু।

ইছহাক ব্যাপারী`র গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুর। দশ বছর আগে ঢাকায় আসে অভাব মেটাতে। ভ্যান চালায়। ভাড়া বাসায় থাকে মাদবর বাজার। ঘরে স্ত্রী ও দুই শিশু। বড়টির বয়স পাঁচ, ছোটটির তিন বছর বয়স।

ইছহাক ব্যাপারী গতকালও ভ্যান চালিয়েছিল। রাত দশটা বাজার কিছু আগে সে তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ভাত বাড়তে বলে। কিন্তু আর বাসায় ফেরা হয়নি তার।

তার বোন হাছিনা বানু মর্গের সামনে এ প্রতিবেদকের সামনে কাঁদতে কাঁদতে বলে, ভাইটা আমার দুপুরে খেতনা। রাতে ফিরে খেত। তারপর ছেলেদের সাথে গল্প করত।

হাছিনা বানু আরো বলেন, ধারনা করছি সে ভ্যান নিয়ে বাসায় ফেরার সময় আগুনের সামনে পড়ে যায়। যেখান থেকে আর বের হওয়ার রাস্তা ছিল না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন লাগার সময় চকবাজারের চুরিহাট্টা মোড়টি যানজটে ঠাসা ছিল। এ কারণে রাস্তাতেই অনেকে পুড়ে মারা গেছে।

বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে নন্দ কুমার দত্ত সড়কের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা আশপাশের ভবনেও ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পরে হেলিকপ্টারে করে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়।

অবশেষে ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় বৃহস্পতিবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন পর্যন্ত ৮১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

আ আ//