জাবির হলে আসন না পাওয়ায় বিপাকে শিক্ষার্থীরা
জাবি সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০৯:১৩ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শনিবার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে রোববার। ক্লাস শুরুর একদিন আগে নবীন শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। কিন্তু শিক্ষার্থীদের হল বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও তা সময় মতো দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে প্রশাসনের এমন ‘দায়িত্বহীনতায়’ বিপাকে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন কর্তৃক এমন ভোগান্তির ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবন ও বিভিন্ন হলের সামনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অবস্থান নেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে নবীন শিক্ষার্থীদের ভিড় বাড়ে। কিন্তু হল বরাদ্দ না পাওয়ায় বিপাকে পড়েন তারা।
ফিরোজ হাসান নামের এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘ আমরা অনেক দূর থেকে জার্নি করে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাই। বিশ্রামেরও সুযোগ হয়নি। সেই সকাল থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বসে আছি। হল বরাদ্দ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফলতি ও দায়িত্বহীনতায় আমরা বিব্রতবোধ করছি।’
প্রশাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২০৩০ ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়েছে,কিন্তু হলে আবাসন সংকটের কারনে এখনও ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ সেশনে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরাই রুম পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এই আবাসন সংকট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ না থাকায় ‘গণরুম’ নামক অপসংস্কৃতি ও একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা।
গণরুমের বিষয়ে এক অভিভাবক বলেন,‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে শিক্ষার্থীদের অনেক যুদ্ধ করতে হয়। থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা যেনো পায় একজন শিক্ষার্থী সেটাই তারা আশা করে। প্রথম বর্ষে গণরুমে অনেক গাদাগাদি করে থাকতে হয়। একজন শিক্ষার্থীর জন্য এটা অনেক কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। সিট না পেলে অভিভাকরা সন্তানকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় থাকে বলে জানান তিনি।’
এদিকে বেলা ৩টায় হলের আবাসন সংকট ও হল বরাদ্দ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট। মিছিল শেষে ছাত্রজোটের নেতারা বলেন,‘হলের এলটমেন্ট নিয়ে ছাত্রদের ভোগান্তির দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে। প্রশাসন চাইলে হল বরাদ্দ দুদিন আগেই দিতে পারতো তাহলে আজকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হতো না।’
মিছিলে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী, সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার, মাহাথির মুহাম্মদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) আবু হাসান বলেন,‘নবীন শিক্ষার্থীদের আজকে (গতকাল) ক্যাম্পাসে আসার কথা নয়। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় ও অফিস তো বন্ধ। আমি বিষয়টি শুনে হল বরাদ্দের তালিকা প্রস্তুত করে বিকাল চারটার দিকে প্রশাসনিক ভবন ও সংশ্লিষ্ট হলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষার্থীরা হল বরাদ্দ তালিকা দেখে নিতে পারবে।’
কেআই/