ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

যবিপ্রবির ২০ বিভাগের চেয়ারম্যানের ‘পদত্যাগ’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪০ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রবিবার

শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদকে প্রাণনাশের হুমকি ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মানববন্ধনে হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ২০টি বিভাগের চেয়ারম্যান ‘পদত্যাগ’ করেছেন।

শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপাচার্য বরাবর এই পদত্যাগপত্র দেওয়া হয়।

এবিষয়ে জানতে চাইলে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নাজমুল হাসান বলেন, সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিভাগীয় চেয়ারম্যানের পদ থেকে গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার উপাচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে গেলে তিনি গ্রহণ করেননি। কিন্তু আমরা উপাচার্যের চিঠি গ্রহণ শাখায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।

এব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার কাছে কোন বিভাগীয় চেয়ারম্যানের পদত্যাগ পত্র আসেনি। এছাড়া তিনি বলেন, প্রত্যেক বিভাগের চেয়ারম্যানের আলাদা কাগজে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার নিয়ম। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অফিসে ছিলাম। আমার কাছে কোনো পদত্যাগপত্র আসেনি।


যারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ইকবাল কবীর জাহিদ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ড. মো নাজমুল হাসান, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. আমজাদ হোসেন, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ড. সাইবুর রহমান মোল্লা, রসায়ন বিভাগের ড. সুমন চন্দ্র মোহন্ত, মার্কেটিং বিভাগের ড. মো. মেহেদী হাসান, ইংরেজি বিভাগের ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মদ কামাল হোসেন, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. ওয়াসিকুর রহমান, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের ড. মো. আনিসুর রহমান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড.এএসএম মুজাহিদুল হক, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. মো. বিপ্লব কুমার বিশ্বাস, অ্যাগ্রোপ্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. সৈয়দ মো. গালিব, গণিত বিভাগের মো. সাইফুল ইসলাম, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ড. জাফিউল ইসলাম, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড.মো তানভীর হাসান, পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের ড. মো. ওমর ফারুক, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান শেখ মিজানুর রহমান।

পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গত ৮ ও ৯ জানুয়ারি র‌্যাগিংয়ে মদদদাতা কিছু উচ্ছৃখল শিক্ষার্থীবিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাগিংবিরোধী ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। এর প্রতিবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনাটির প্রতিবাদে ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন। সেখানে হামলা চালিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়। এসব ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতি কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু উপাচার্য ও যশোরের সুশীল সমাজের ন্যায়বিচারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী রিজেন্ট বোর্ডের সভা পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।’

‘তবে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ৫৩তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায়ও শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ন্যায়বিচার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। লাঞ্ছনাকারীরা নিরাপত্তা ও উৎসাহ পেয়েছে বলে আমরা মনে করি। বিচারহীনতার কারণে শিক্ষকমণ্ডলীকে হুমকির মধ্যে ফেলা হয়েছে। এতে আত্মসম্মানের সঙ্গে শিক্ষাদানের পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে।’ উল্লেখ করা হয় পদত্যাগপত্রে।

 

টিআর/