ঐতিহ্য ও অর্জনে বিসিআইসি
মো. আক্তারুজ্জামান :
প্রকাশিত : ০১:১০ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রবিবার
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) উৎপাদন, আমদানি ও মাঠ পর্যায়ে ইউরিয়া সার সরবরাহের মাধ্যমে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে পরিবর্তনের যে যুগান্তকারী সূচনা ঘটেছে, সেই পথনির্দেশিকায় সার শিল্পের সম্প্রসারণ একটি অনিবার্য বিষয়। দেশে সারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা সামনে রেখে অন্যান্য খাতের মতো সার শিল্পকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। সেক্ষেত্রে দেশের শিল্প সেক্টরে বিসিআইসির নাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত মধ্যম আয়ের দেশ বিনির্মাণের পূর্বশর্ত হচ্ছে কৃষিজাত পণ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জন। এ ধারায় দেশের সার শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই।
১৯৭৬ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল করপোরেশন, বাংলাদেশ পেপার অ্যান্ড বোর্ড করপোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যানারিজ করপোরেশনের সমন্বয়ে ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির ২৭ নং অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) যাত্রা করে। বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন সার কারখানাগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড, জামালপুরের সরিষাবাড়িতে যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আশুগঞ্জে ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড, ঘোড়াশালে ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড ও পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, চট্টগ্রামে উত্তর পতেঙ্গায় টিএসপি সার কারখানা, চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ডিএপি সার কারখানাসহ মোট আটটি সার কারখানা রয়েছে।
দেশের কৃষিতে বছরে প্রায় ২৫ লাখ টন ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে। বিসিআইসি নিয়ন্ত্রণাধীন ইউরিয়া সার কারখানাগুলো পুরনো হয়ে যাওয়ায় কারখানাগুলো পরিপূর্ণভাবে উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে পারছে না। এমন এক বাস্তব পরিস্থিতির মুখে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে অবস্থিত ষাটের দশকে স্থাপিত বার্ষিক ১ লাখ ৬ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড বন্ধ করে ২০১৬ সালে একই জায়গার ওপর অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর, শক্তিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব দৈনিক ১ হাজার ৭৬০ টন এবং বার্ষিক ৫ লাখ ৮০ হাজার ৮০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন শাহজালাল সার কারখানা স্থাপন করা হয়। কারখানাটি স্থাপনের ফলে একদিকে দেশে আমদানি নির্ভরতা কমেছে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে। শাহজালাল সার কারখানা প্রায় ১৬৫ একর জমির ওপর চীনের কমপ্লান্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১২ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে নির্মাণকাজ শুরু হলে ২০১৬ সালে কারখানাটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। কারখানাটিতে শতভাগ লোডে অর্থাৎ দৈনিক ১ হাজার ৭৬০ টন ইউরিয়া উৎপাদনের জন্য ১৫০ পিএসআই চাপে দৈনিক ৪৫ এমএমসিএফ প্রাকৃতিক গ্যাস প্রয়োজন হয়। এ গ্যাস জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড থেকে সরবরাহ করা হয়।
দেশে ইউরিয়া সারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদনের পর গত ২৪ অক্টোবর বিসিআইসি ও জাপানের ঐতিহ্যবাহী মিত্সুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (এমএইচআই) ও চায়না ন্যাশনাল কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম কোং লিমিটেডের সঙ্গে ৯ লাখ ২৪ হাজার টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাসসাশ্রয়ী অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ঘোড়াশাল পলাশ সার কারখানা নির্মাণের জন্য এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ঘোড়াশাল পলাশ সার কারখানা বাস্তবায়নের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৪৬০ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ৮৪৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে। বাকি ৮ হাজার ৬১৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা বাণিজ্যিক ঋণের মাধ্যমে সংস্থান করা হবে। বিআইডির অর্থায়ন সহযোগিতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। বাংলাদেশে আগেও সার কারখানা নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা জাপানের রয়েছে। কাজ শুরুর পর ৩৯ মাসে প্রকল্পটি সম্পন্ন করার লক্ষ্য রয়েছে।
এছাড়া রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম কাগজকল কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড, সুনামগঞ্জে ছাতক সিমেন্ট কারখানা লিমিটেড, চট্টগ্রামের কালুরখাটে উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি লিমিটেড, চট্টগ্রামের বাড়বকুণ্ডে চিটাগং কেমিক্যাল কমপ্লেক্স, ঢাকার মিরপুরে বিআইএসএফ লিমিটেড এবং পলাশে অবস্থিত দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ক্রমবর্ধমান প্রশিক্ষণের প্রয়োজন মেটাতে রসায়ন শিল্পের জন্য বিসিআইসি নেদারল্যান্ডস সরকারের সহযোগিতায় কারিগরিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (টিআইসিআই) স্থাপন করেছে। যেখানে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থী হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া দেশের রাসায়নিক শিল্প কারখানাগুলোর জনবলের কারিগরি দক্ষতা ও কারিগরি সেবা প্রদান সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ‘মডার্নাইজেশন অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পুরনো সার কারখানাগুলোর যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের মাধ্যম আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির লক্ষ্যে কয়েকটি কারখানার পুনর্বাসন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে ১৯৯২ সালে স্থাপিত যমুনা ফার্টিলাইজার কোং লিমিটেড, ১৯৭২ সালে স্থাপিত ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড, ১৯৮৩ সালে স্থাপিত আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড, ১৯৮৫ সালে স্থাপিত পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের পুনর্বাসন কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং কারখানাগুলো উৎপাদনে রয়েছে।
ইউরিয়া সার উৎপাদনে কাঁচামাল হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু দেশে আবাসিক, বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতে গ্যাসের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সার কারখানাগুলো বন্ধ রেখে অন্য সেক্টরগুলোয় গ্যাস নিশ্চিত করতে হয়। ফলে উচ্চমূল্যে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে আমদানির মাধ্যমে দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা নিশ্চিত করা হয়। এ অবস্থায় বর্তমান সরকার বিভিন্ন সেক্টরে গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে এলএনজি আমদানি করছে। এ এলএনজি জাতীয় গ্রিডে পাঠানোর ফলে দেশে একদিকে যেমন গ্যাসের চাহিদা মিটবে, অন্যদিকে শিল্প খাতসহ বিসিআইসির ইউরিয়া সার কারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতা বজায় থাকবে। সেক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে ইউরিয়া সার আমদানি অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
১৯৫৩ সালে স্থাপিত দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় কর্ণফুলী পেপার মিলের প্রথম পর্যায়ের ‘বিএমআর’ সম্পন্ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে কারখানার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পরিবর্তন ও মেরামত করে এর উৎপাদনশীলতা অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে কেপিএমের নিজস্ব জায়গায় একটি নতুন পেপার মিল নির্মাণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
নিজস্ব বাফার গোডাউনে সংকুলান না হওয়ায় উৎপাদিত ও আমদানিকৃত সার সুষ্ঠু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিসিআইসিকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। এক্ষেত্রে খোলা আকাশের নিচে সার রাখা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। দেশের কৃষক ও বিতরণ সুবিধার কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন অঞ্চলে ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। এরই মধ্যে চট্টগ্রামে কালুর ঘাটে নিজস্ব জমিতে ২৫ হাজার টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন মোট ৫০ হাজার টনের দুটি ট্রানজিট গোডাউন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় আরো ৩৪টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণের বিষয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (্একনেক) কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।
বিসিআইসির উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সুনামগঞ্জ জেলায় ১৯৪১ সালে ১ লাখ ৫০ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি অত্যন্ত পুরনো এবং এতে লোকসান হয়ে যাওয়ায় শক্তিসাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বার্ষিক ১ লাখ ৫০ হাজার টন এবং ড্রাই পদ্ধতিতে বার্ষিক ৪ লাখ ৫০ হাজার টন ক্লিংকার উৎপাদন করার লক্ষ্যে একনেক সভায় ৬৬৬ কোটি ৮১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বিনিয়োগ ব্যয়সংবলিত ডিপিপি অনুমোদিত হয়। এদিকে ছাতক সিমেন্ট কোম্পানির অব্যবহূত জমিতে কাফকোর মডেলে একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সিমেন্ট কারখানা স্থাপনের বিষয়ে সৌদি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইমেনশনস আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
পে-অফকৃত চিটাগং কেমিক্যাল কমপ্লেক্স পুনঃচালুকরণের লক্ষ্যে ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি অনুমোদনের পর চীনের সাধারণ ঠিকাদার M/S Wuhan Anyang Science & Technology Ltd. (ডব্লিউএএসটিসিএল)-এর সঙ্গে বিসিআইসির একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সাধারণ ঠিকাদার ডব্লিউএএসটিসিএল কারিগরি কাজ সম্পন্ন করার পর ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করে। কিন্তু সাতদিনের নিরবচ্ছিন্ন পিজিটিআর সম্পাদনের জন্য ১৩ জানুয়ারি কার্যক্রম শুরুর পর জিইজি বন্ধ হওয়ায় কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে সাধারণ ঠিকাদার কয়েকবার প্রচেষ্টার পরও উৎপাদনে যেতে সক্ষম হয়নি। এক পর্যায়ে ডব্লিউএএসটিসিএল বিসিআইসি কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কারখানা ছেড়ে চলে যায়। সে পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ ঠিকাদার ডব্লিউএএসটিসিএল আইনগতভাবে টার্মিনেট করা হয়। বর্তমানে বিসিআইসির নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা ও পরিচালন পদ্ধতি প্রণয়ন করে চিটাগং কেমিক্যাল কমপ্লেক্স পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন ও অব্যাহত উৎপাদনশীলতাই একমাত্র এ গতিকে বেগবান করতে পারে। পাবলিক সেক্টর-প্রাইভেট সেক্টরসহ সর্বক্ষেত্রে সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে কাঙ্ক্ষিত অর্জন ধরে রেখে আগামীতে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া কোনো অবাস্তব স্বপ্ন নয়। স্বপ্ন তখন বাস্তবে কথা বলবে এবং জাতির জনকের সোনার বাংলার সোনালি আভা চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে।
গত আট বছরে বিসিআইসির উল্লেখযোগ্য অবদান
১. শাহ্জালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড: বর্তমান সরকারের সময় বৈদেশিক বিনিয়োগের মাধ্যমে ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেটে বার্ষিক ৫ লাখ ৮০ হাজার ৮০০ টন গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন ইউরিয়া সার কারখানা শাহ্জালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (এসএফসিএল) স্থাপন করা হয়েছে। এসএফসিএলে ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয় এবং ২০১৬ সালের ১ মার্চ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়েছে।
২. চিটাগং কেমিক্যাল কমপ্লেক্স: চিটাগং কেমিক্যাল কমপ্লেক্স পুনঃচালুকরণের লক্ষ্যে কারখানার মেকানিক্যাল কমপ্লিশন এবং প্রি-কমিশনিং ও কমিশনিংয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি পিজিটিআরের কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু পিজিটিআর চলাকালীন যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেয়। ওই মেরামত কাজ সম্পন্ন করার পর ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে পুনরায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। পরীক্ষামূলক উৎপাদন স্থিতিশীল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় পিজিটিআরের কার্যক্রম শুরু করা হবে।
৩. ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড: ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডকে লাভজনকভাবে পরিচালনা করার জন্য ৬৬৬ কোটি ৮১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বিনিয়োগ ব্যয়ে ‘ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের উৎপাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস টু ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৮ মার্চ একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়। বর্তমানে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
৪. মডার্নাইজেশন অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ: প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ৩ ডিসেম্বর মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫০ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫৮ দশমিক ২৪ শতাংশ।
৫. সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় নতুন ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মাণ: ওই প্রকল্পের প্রণীত ডিপিপিটি ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। (চলবে)
লেখক : ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ বিভাগ), বিসিআইসি
এসএ/