ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

বাগেরহাটে মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলীর পরিবার অবরুদ্ধ

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৬:৪৩ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৭:২১ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সোমবার

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পঞ্চকরন ইউনিয়নের কুমারিয়াজোলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী খানের পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে মানবতার জীবনযাপন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, কুমারিয়াজোলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী খান ৫নং চক কুমারিয়াজোলা মৌজায় ১৯৯৩ সালে তার চাচাতো ভাই জয়নাল খানের নিকট থেকে বায়না চুক্তি মোতাবেক ক্রয় করেন যা পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে .৪৫ শতক জমি তার অনুকুলে নিস্পত্তি হয়ে ৯৪ সাল থেকে বসতবাড়ি করে ভোগ দখল করে আসছেন।

সম্প্রতি উক্ত বসতবাড়ি থেকে তাকে উচ্ছেদের জন্য তারই আপন ছোট ভাই ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান খান .২০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করে প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক হয়রানি করে যাচ্ছেন বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী খানের পরিবারকে।  

সর্বশেষ ৫-৬ মাস ধরে তার বাড়ি থেকে বের হবার চলার পথটুকুও নেটের বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিসহ অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা এ পরিবারটিকে উচ্ছেদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি হুমকি অব্যাহত রেখেছেন। ইতোপূর্বে আহম্মদ খানের বিরুদ্ধে একটি হয়রানিমূলক মামলাও দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি পুনঃ তদন্তের জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। 

সোমবার সরেজমিনে মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী খানের বাড়িতে গেলে সংবাদ কর্মীদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মহিষচরনী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম খান (৭২) মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ হাওলাদার (৭৩) ও মোশারেফ হোসেন হাওলাদার (৭৫)।

তারা বলেন, জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে পাকসেনাদের হাত থেকে দেশ স্বাধীন করে এখন অপরাধের কাছে পরাধীন হয়েছি! এসব কি হচ্ছে। এগুলো দেখার কি কোন লোক নেই? এ রকম অনেক প্রশ্নের উত্তর চেয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ কর্মীদের কাছে।

মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী খানের স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে চারজনের সংসার। স্ত্রী পারুল বেগম (৫৫) বাড়িতেই থাকেন। বড় ছেলে সোহেল রেজা (৩৫) ঢাকায় গামেন্টেসে চাকরি করেন। ছোট ছেলে হিজবুল বাহার জুয়েল (২৯) মাস্টার্স শেষ করে ঢাকায় একটি প্রাইভেট ফার্মে কর্মরত। দুই ছেলেই ঢাকায় থাকায় জনবলের অভাবে মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী খান থানা পুলিশের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন ন্যায় বিচারের আশায়। থানা পুলিশ ঘটনাস্থথ পরিদর্শন করে উভয়পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে থানায় হাজির হওয়ার জন্য বলেছে।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি নিয়ে ২ ভাইয়ের মধ্যে আদালতে মামলা রয়েছে। সে কারণে স্থানীয়ভাবে কোন পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি।

এ সম্পর্কে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সদস্য সচিব শাহ আলম বাবুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী খানের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ। এটা আমাদের সবার জন্য লজ্জাকর।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী খান অবরুদ্ধ আছেন এমন কোন খবর বা অভিযোগ আমার কাছে আসেনি।  আদালতে যদি মামলা থেকে থাকে তবে বিষয়টি আদালতকেই অবহিত করতে হবে।

এ বিষয়ে মজিবুর রহমান খান জানান, তিনি কারও জমিতে অনাধিকার প্রবেশ করেননি। ক্রয় করা জমিই তিনি বেড়া দিয়ে ভোগ দখল করেছেন। এ জমি নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান।

কেআই/এসএইচ/