ভারত-পাকিস্তান নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে কমেডিয়ান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩৫ পিএম, ৪ মার্চ ২০১৯ সোমবার
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় কমেডিয়ান ট্রেভর নোয়াহ।
কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে `জোক` বা তামাশা করা তার উচিত হয়নি। নোয়াহ একজন দক্ষিণ আফ্রিকান কমেডিয়ান, রেডিও ও টেলিভিশন উপস্থাপক এবং অভিনেতা।
বর্তমানে তিনি মার্কিন কেবল টেলিভিশন চ্যানেল কমেডি সেন্ট্রালের রাতের ভুয়া সংবাদের অনুষ্ঠান `দ্য ডেইলি শো উপস্থাপনা করেন।
দ্য ডেইলি শো অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, দু`দেশের (ভারত ও পাকিস্তানের) মধ্যে একটি যুদ্ধ হবে `খুবই আমোদের বিষয়" বলে মন্তব্য করেন।
তিনি আরো বলেন, "এটি হতে যাচ্ছে যেকোন সময়ের তুলনায় দীর্ঘতম যুদ্ধ---আরেকটি ড্যান্স নাম্বার।"
একথা বলার সময় পাঞ্জাবি গান গেয়ে বলিউড নায়কের ভঙ্গিমায় নেচে দেখাচ্ছিলেন নোয়াহ। আর এই মন্তব্যের কারণে ভারতে তীব্র সমালোচনার শিকার হন তিনি।
টু্ইটারে বহু ভারতীয় বিষয়টি নিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কাশ্মীর নিয়ে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে ইতোমধ্যে দুইটি যুদ্ধ এবং কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুই দেশই কাশ্মীরকে নিজের বলে দাবী করে আসছে এবং উভয়ই কাশ্মীরের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
বিতর্কের সূত্রপাত
দ্য ডেইলি শোতে গত সপ্তাহে হাজির হয়ে নোয়াহর করা ঐ মন্তব্যকে অনলাইনে `বর্ণবাদী` এবং `অসহিষ্ণু` বলে সমালোচনা করেছেন বহু মানুষ।
ভারত ও পাকিস্তানে আটকে পড়া মানুষের আত্মীয় পরিজন যারা দেশের বাইরে অপেক্ষা করছেন, বিশেষ করে ভারতীয় অ্যামেরিকান নাগরিকেরা, নোয়াহর মন্তব্যকে রীতিমত আপত্তিকর বলে বর্ণনা করেছেন।
বলিউডের একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রী ট্রেভরের সমালোচনা করেন। যুদ্ধের মত সিরিয়াস বিষয় নিয়ে মজা করার কারণে এর আগেও নোয়াহ সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।
নোয়াহর দুঃখপ্রকাশ
টুইটারে এক পোস্টে নোয়াহ বলেছেন, "আমার মন্তব্যে আপনারা আহত হয়েছেন, সেজন্য আমি দুঃখিত। আমার উদ্দেশ্য মোটেই তা ছিল না।"
নোয়াহ বলেছেন, কমেডি করে তিনি `কষ্ট, যন্ত্রণা ও অস্বস্তি মোকাবেলা` করেন।
তিনি জানান, "আমার মাকে যখন মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, আমি সেটা নিয়েও কমেডি করেছি।"
তবে, তার করা কমেডি ভারত পাকিস্তান উত্তেজনার মতই অনলাইনে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, সেটা দেখে তিনি অভিভূত বলেও মন্তব্য করেছেন।
পাল্টাপাল্টি অনলাইন যুদ্ধ
নোয়াহর মন্তব্যে অনেকে যেমন প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তেমনি অনেকে আবার বলেছেন যে তার বক্তব্য নিয়ে এত মাতামাতি করাও ছিল `অপ্রয়োজনীয়`।
সেই সঙ্গে অনেকেই ঐ দিনের শোটিকে উপভোগ্য ছিল বলেও রায় দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে টুইটারেই ভারতকে নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক বেশি চলে।
যেকারণে নোয়াহর এই বিষয়টি নিয়েও এখানেই আলোচনা বেশি হয়েছে। আর রাজনীতি নিয়ে ব্যঙ্গ করার চল ভারতে তেমন একটা নেই। যে কারণে তার ওপর ক্ষেপেও গেছেন দেশটির অনেকে।
ফেসবুকে `হিউম্যানস অব হিন্দুত্ব` নামে একটি পেজ রীতিমত নোয়ার বিরুদ্ধে অনলাইনে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
এদিকে, ভারতীয় বিমান বাহিনীকে সমর্থন করে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর পাকিস্তানে তার বিরুদ্ধে নানা প্রচারণা শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে ইউনিসেফের `গুডউইল অ্যাম্বাসেডর` পদ থেকে প্রিয়াঙ্কাকে সরিয়ে দেবার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান।
কাশ্মীর সংকট কীভাবে বাড়লো
২৬শে ফেব্রুয়ারি ভারত তাদের ভাষায় পাকিস্তানে জঙ্গি ঘাটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়।
১৪ই ফেব্রুয়ারি ভারত শাসিত কাশ্মীরে এক আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ৪০জন ভারতীয় সেনা নিহত হবার ঘটনার জবাব হিসেবে ভারত ঐ হামলা চালায়। বিবিসি বাংলা
এসি