ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

আহসান মঞ্জিলে জবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসারের সংঘর্ষ

জবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ১০:৪২ পিএম, ৪ মার্চ ২০১৯ সোমবার

রাজধানী পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক নিদর্শন আহসান মঞ্জিলে টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মঞ্জিলের দায়িত্বরত আনসারদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুর দুইটার দিকে অহসান মঞ্জিলের ভেতরে এই ঘটনা ঘটে। এতে দর্শনার্থীসহ কমপক্ষে ৬ জন আহত হয়েছে।

আহতরা হলেন দর্শনার্থী সবুজ সুলতান, জবি ভুমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন, সাইফুল ইসলাম, ওয়ালীউল্লাহ, শিহাব, সিএসই বিভাগের সুমিত দত্ত। আহতদের সুমনা মেডিকেল হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহসান মঞ্জিলে ঘুরতে আসে। এ সময় ফটকের নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের টিকিট দেখতে চাইলে তারা এগারো জন শিক্ষার্থী আটটি টিকিট দেখায়। এ নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে আনসার সদস্য জাহাঙ্গীর, আসাদ ও পুলিশ সদস্য হান্নান আহসান মঞ্জিলের গেট লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের রড ও বাঁশ দিয়ে এলাপাতারি পেটানো শুরু করে। পরে আহত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাদের বন্ধুদের খবর দিলে জবির আরও ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী এসে তাদের উদ্ধার করে।

সংঘর্ষের সময় আহসান মঞ্জিলের ভেতরে দর্শনার্থীরা আটকে পরে এদিক সেদিকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে । এ সময় মঞ্জিলে ঘুরতে আসা শ্যামলী মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেইনিং স্কুলের শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থী সবুজ সুলতানকে আনসার সদস্যরা মারধর করে তার ডিএসএলআর ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ভেতরে আটকে রাখে। পরে কোতয়ালী জোনের এসি বদরুল হাসান রিয়াদকে খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পুলিশের গাড়িতে ও মিটফোড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

অন্যদিকে আহসান মঞ্জিলের কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলেন, জবি শিক্ষার্থীরা আনসার সদস্যদের ওপর হামলা এবং আহসান মঞ্জিলের পিছনের কোয়ার্টারে ভাঙচুর করে। পরে দুপুর তিনটার দিকে কোতয়ালী থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় কর্তৃপক্ষ কিছুক্ষনের জন্য আহসান মঞ্জিলে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়।

এদিকে সংঘর্ষের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর শামসুল কবির, আব্দুল্লাহ মাহফুজ,আসাদুজ্জামান রিপন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার মীমাংসা না করেই বিশ্ববিদ্যালয় বাস ছেড়ে যাওয়ার অজুহাতে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত চলে আসেন। এ সময় সাংবাদিকরা শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে ক্যাম্পাসে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তারা। পরে ক্যাম্পাসে এসে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

কোতয়ালী জোনের এসি বদরুল হাসান রিয়াদ বলেন, টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে জবি শিক্ষার্থীদের সাথে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আহসান মঞ্জিল যাদুঘরের উপ-কীপার মো. ইলিয়াস খান বলেন, টিকিট নিয়ে আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আবেদন করলে আমরা তাদের টিকিটের বিষয়ে সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়া হবে।

সহকারি প্রক্টরদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে জানতে চাইলে জবি সহকারী প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন,ঘটনাস্থলে পাঠানো সহকারি প্রক্টররা যদি দায়িত্বে অবহেলা করে থাকে তাহলে তাদের সঙ্গে বসা হবে। আর আহসান মঞ্জিল কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি করে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য সর্বনিন্মে আনার চেষ্টা করা হবে।

কেআই/