আঁশযুক্ত খাবার রাখবে সুস্থ, দেবে দীর্ঘায়ু
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৫০ পিএম, ৭ মার্চ ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:১৪ পিএম, ৭ মার্চ ২০১৯ বৃহস্পতিবার
সুস্থ থাকতে চান? নিজের ও পরিবারের জন্যে গড়ে তুলতে চান একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস? সহজ ও বিজ্ঞান সম্মত পন্থা আছে। আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় বাড়ান ফাইবার বা আঁশ-জাতীয় খাবারের আধিক্য।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা-প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট-এ। ২৪৩টি গবেষণার সূত্র ধরে তাতে বলা হয়েছে, আপনার প্রতিদিনকার খাবারে যোগ করুন পর্যাপ্ত আঁশ-জাতীয় খাবার, তাতে ক্রমশ কমতে থাকবে হৃদরোগ ডায়াবেটিস স্ট্রোক ও কোলন ক্যান্সারের মতো জীবনঘাতী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা কমবে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ। নিশ্চিতভাবেই বাড়বে আপনার সুস্থতা, উদ্যম আর প্রাণবন্ততা।
গবেষকরা বলছেন, একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির ফলমূল, শাকসবজি ও পূর্ণ খাদ্যশস্য জাতীয় খাবার থেকে প্রতিদিন ২৫ থেকে ২৯ গ্রাম পরিমান আঁশ গ্রহণ করা আবশ্যক। কারণ, আঁশে ঘটে বিস্তর রোগনাশ। বাড়ে আয়ু।
নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওটাগো-র গবেষক এবং এ গবেষণা-প্রতিবেদনের মূল লেখক এন্ড্রু রেনল্ডের মতে, এ গবেষণার ফলাফল থেকে আমরা এটাই বুঝতে পারছি যে, সারা দিনে যা আমরা খাই তার একটা বড় অংশই হওয়া চাই আঁশসমৃদ্ধ ও পূর্ণ শস্যদানা জাতীয় খাবার, যা রোগঝুঁকিহ্রাস করবে এবং কমাবে অকালমৃত্যুর সম্ভাবনা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্যে প্রনীত ডায়েটারি গাইডলাইন অনুসারে, প্রত্যেক পূর্ণবয়স্ক নারীর দৈনিক খাদ্যতালিকায় আঁশের পরিমাণ থাকতে হবে ন্যূনতম ২৫ গ্রাম এবং পুরুষের ৩৮ গ্রাম। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান মতে, গড়পড়তা আমেরিকানের দৈনন্দিন খাবারে আঁশ গ্রহণের পরিমাণ মোটে ১৫ গ্রাম।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, মানবদেহে আঁশ-জাতীয় খাবারের উপকারিতা দূরপ্রসারী। এ ধরণের খাবার অনেকক্ষণ ধরে চিবোতে হয় বলে এটা পাকস্থলিতে পূর্ণতার অনুভূতি যোগায়, ফলে অতিভোজনের সম্ভাবনা কমে। যা মেদস্থুলতা, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি রোধ করে।
জানা জরুরি, মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া। পরিপাকতন্ত্রেও আছে এমন কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া। সুখবর হলো, খাদ্যআঁশ এই ব্যাকটেরিয়াগুলোর লালনে রাখে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা-কোলন ক্যান্সার ঠেকাতে যা অত্যন্ত কার্যকরী।
ফাইবার বা আঁশ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। কীভাবে? আমরা যখন অতিরিক্ত চিনি বা শর্করা জাতীয় কোন খাবার খাই, তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা এমনভাবে বেড়ে যায় যে, ইনসুলিন অনেক সময় সবগুলো গ্লুকোজকে ভাঙতে পারে না। এতে রক্তে বাড়ে গ্লুকোজের মাত্রা। এ অবস্থা ক্রমাগত চলতে থাকলে একসময় তা রূপ নেয় ডায়াবেটিসে। আর খাবার থেকে শরীরে চিনি শোষণ প্রক্রিয়াটি দীর্ঘাতি করার মাধ্যমে ডায়াবেটিস হওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটিকে বাধাগ্রস্ত করে খাদ্যআঁশ।
সূত্র-কোয়ান্টাম বুলেটিন-টাইম, ১০ জানুয়ারি ২০১৯