ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ছেলের স্বার্থে ফুটবল শিখতে মাঠে মা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২১ এএম, ৯ মার্চ ২০১৯ শনিবার

চার বছরের ছেলেকে কোলে নিয়েই হাজির হয়েছিলেন মাঠে। ছেলেকে মাঠের ধারে বসিয়ে রেখে সদ্য কেনা বুটজোড়া পায়ে গলিয়ে মাঠে নেমে পড়েছিলেন তিনি। জার্সি আর খেলার প্যান্ট মিলেছিল আয়োজকদের কাছ থেকেই। তারপরই ফুটবল নিয়ে কসরত শুরু করে দিলেন জেসমিনা বিবি। তার সঙ্গেই বল নিয়ে মাঠে নেমে পড়লেন আরও তিন নারী। উদ্দেশ্য, ফুটবলের প্রশিক্ষণ নেওয়া।

ভারতের ইসলামপুর এলাকার টেকারায়পুর গ্রামের বাসিন্দা জেসমিনা ঘর সামলান। সকাল থেকে সংসারের কাজকর্ম, গরুর দেখভাল করা, বিকেলে পাড়ায় নারীদের সঙ্গে গেরস্থালির গল্প- এভাবেই দিন কাটছিল তার। কিন্তু কয়েক মাস আগে ইসলামপুরে বেবি লিগ শুরু হওয়ার পর তার রোজকাল রুটিনটা বদলে গেছে। এখন সকাল-বিকেল দুই ছেলেকে নিয়ে রোজ মাঠে হাজির হয়ে যান তিনি। এভাবে বেশ চলছিল। তবে জেসমিনা এবার ঠিক করেছেন, বাড়িতে ছেলেদের অনুশীলনে সাহায্য করতে এবার তিনি নিজেও খানিকটা ফুটবল শিখে নেবেন।

সম্প্রতি সেই সুযোগও তার এসে যায়। মায়েরা সন্তানদের যাতে ফুটবলের শিক্ষা দিতে পারেন সেই জন্য ইসলামপুর বেবি লিগ কমিটি সম্প্রতি আয়োজন করেছিল ‘প্রিমিয়ার স্কিল’ কোচিং ক্যাম্পের। দিনকয়েক আগে এলাকার ২৪ জনকে নিয়ে ওই ক্যাম্প পরিচালনা করেন ভারতের জাতীয় নারী ফুটবল দলের প্রাক্তন খেলোয়াড় কুন্তলা ঘোষদস্তিদার। সেই শিবিরে ২৪ জনের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় চার নারীও। এদের মধ্যে জেসমিনা মাঠে নেমেছেন স্রেফ সন্তানদের স্বার্থে।

জেসমিনা বলছিলেন, ছেলে বেবি লিগে খেলছে। প্রায়ই ওকে নিয়ে মাঠে আসি। নিজে প্রশিক্ষণ নেওয়ায় ফুটবলের অনেক নিয়মকানুন এখন জানতে পারছি। এখন একটু একটু করে ছেলের ভুলগুলোও ধরিয়ে দিতে পারছি। আমার মনে হয়েছিল, ফুটবল নিয়ে একটু পরিষ্কার ধারণা থাকলে ছেলেকে তৈরি করতে সুবিধা হবে। ওকে প্রতিষ্ঠিত ফুটবলার হিসেবে দেখতে এটুকু কষ্ট না হয় সহ্য করলাম। চোট-আঘাতের ঝুঁকি রয়েছে জেনেও মাঠে নেমে পড়েছি।

বেবি লিগ অপারেটর আমিনুল ইসলাম বললেন, প্রশিক্ষণ কর্মশালা আরও একটা সম্ভাবনার দিক খুলে দিল। জেসমিনাকে দেখে ভবিষ্যতে আরও অনেক নারীই উৎসাহিত হবেন।

সূত্র: আনন্দবাজার

একে//