ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো

তবিবুর রহমান

প্রকাশিত : ০২:৩০ পিএম, ১০ মার্চ ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৯:১৩ পিএম, ১০ মার্চ ২০১৯ রবিবার

দীর্ঘ ২৮ বছর পর বহুল প্রতিক্ষার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কেন্দ্র করে সকল প্রস্তুতি শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে।

প্রার্থীরা দিয়েছেন নানা প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনের সার্বিক বিষয় নিয়ে একুশে টিভি অনলাইনকে সাক্ষাতকার দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নুর।

ভিপি প্রার্থী নুরুল হক বলেন, ক্যাম্পাসে বিদ্যমান সমস্যাটা হচ্ছে যারা ক্ষমতায় থাকে তারা আধিপত্য বিস্তার করে দখলদারিত্ব বজায় রাখতে চায়। আমরা সেই জায়টাগা বন্ধ করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। গণরুম, গেষ্ট রুম বন্ধ করে প্রথমবর্ষ থেকে সিট নিশ্চিতে কাজ করার চেষ্টা করব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাতে গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত থাকবে সুষ্ঠ সুন্দরভাবে সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে তাদের নির্দেশ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে তাদের অধিকার আদায়ের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারেন আমরা নির্বাচিত হলে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করব। আমার শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করেছি। প্রশ্নফাঁস রোধ আন্দোলন করেছি। সরকারি চাকরিতে কোটা
সংস্কারে আন্দোলন করেছি।

আমার নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের এমন সংগ্রামে অব্যাহত রাখবো। বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে সাথে যোগাযোগ করব। আমরা চাই সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে সুন্দর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণ হোক।

তিনি আরো বলেন, ক্যাম্পাসে যে ভীতিযুক্ত পরিবেশ রয়েছে তা থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে চাই। শিক্ষার্থীরা যাতে যাতে ক্যাম্পাসে নির্ভয়ে চলাফেরা করতে পারে। ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচনে ছাত্রদল ক্ষমতায় ছিল। সেসময় ছাত্রদের চাওয়া পাওয়া পুরণ করেছে ছাত্রদল। তাতে প্রমাণিত হয় ছাত্রদল চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে। তিনি বলেন, এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল উর্বর রাজনীতি চর্চার পুণ্যভূমি। আমরা চাই সে অবস্থা আবারও ফিরে আসুক। এর মধ্য দিয়ে মুক্তবুদ্ধি চর্চার বিকাশ ঘটবে।

তিনি বলেন, ২৮ বছর পর ডাকসুর অচলায়তন ভেঙে নির্বাচন হচ্ছে। আমরা এ জন্য অত্যন্ত আনন্দিত। ডাকসু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের সভায় আমাদের ডাকা হয়নি। তার পরও আমরা সভাকে সমর্থন দিয়েছি। সেখানে নানা দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। এসবের অনেকটাই আমাদের দাবির সঙ্গে মিলে গেছে। সভায় ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে করার দাবি ছিল। প্রশাসন সেটি মানেনি। ভোট দেওয়ার সময় বাড়ানোর আবেদনও মানা হয়নি।

ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক সব সমস্যা সমাধানেও শিক্ষার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা জানিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই নেতা বলেন, নির্বাচিত হলে হলগুলোতে অছাত্র ও বহিরাগতদের কারণে যে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করার চেষ্টা করব। একটি ছাত্র সংগঠনের চাঁদাবাজি ও ফাও খাওয়া দূর করে ক্যান্টিনের খাবারের মান উন্নত করব। রেজিস্ট্রার বিল্ডিংসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রমের আধুনিকায়ন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বন্ধ ও স্বচ্ছতা আনা, পরিবহন ও গবেষণা খাতে বরাদ্দের সুষ্ঠু বণ্টন, মেয়েদের যাতায়াতের সুবিধা বাড়ানো, সব কাজকর্মে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোসহ নানা বিষয়ে কাজ করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

তফসিল ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোটামুটি সহাবস্থানের পরিবেশ বিরাজ করছে উল্লেখ করে নুর বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি-না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনের বিমাতাসুলভ আচরণ অসংখ্যবার দেখেছি। নানা কারণে কিছু শিক্ষকের প্রতি আমাদের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। তবে নির্বাচনে কোনো অনিয়মের চেষ্টা করা হলে সব ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব। তিনি বলেন, দেশের সব মানুষ তাকিয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। এ বিশ্ববিদ্যালয় জাতির বাতিঘর। তাই মানুষ প্রত্যাশা করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনাস্থার জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রশাসন এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখবে।


টিআর/