যারা ইতিহাস পড়ে না তারা শিকড়বিহীন:ইউজিসি চেয়ারম্যান
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭:৩০ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৭:৩৩ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, রাষ্ট্রকে সঠিকভাবে জানতে হলে তার ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করা জরুরি। যারা ইতিহাস পড়ে না তারা মূলত শিকড় বিহীন প্রজন্ম।
শুক্রবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ ও ভারতের কলকাতার ‘মওলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজ’ এর যৌথ উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘দক্ষিণ এশিয়ায় রাষ্ট্র এবং সমাজ: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপাট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সেমিনার কক্ষে, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের সেমিনার কক্ষে কনফারেন্সটি অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ধ্বংসাত্মক সকল কিছু থেকে উন্নয়নের মহাসড়কে উঠা নিয়ে দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞগণ সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নিজস্ব জনশক্তি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, দেশ একদিন এগিয়ে যাবেই। বর্তমান প্রেক্ষিতে যেকোন দুর্যোগে অন্য দেশ থেকে সাহায্য পাঠাবে এই আকাঙ্খায় তীর্থের কাকের মত বাংলাদেশের এখন আর অপেক্ষা করতে কিংবা এর প্রয়োজন হয় না। গ্রামীন বাংলাদেশ এখন অতীত; উন্নয়ন এবং প্রযুক্তির ছোঁয়া এখন সকল অঞ্চলে পড়েছে। নারীরা বর্তমানে কর্মক্ষেত্রের সকল পদেই বিচরণ করছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এমনকি বর্তমানে আমাদের বিজি ৭৮৭ বোয়িং এয়ারক্রাপ্টের ক্রু সকল সদস্যই নারী, এটা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।
সভাপতির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন,আমরা যত নতুন কিছুর সাথেই পরিচিত হচ্ছি,ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে যে এগুলোর ব্যপ্তি আগেও ছিল। কোন জাতির সঠিক উৎস ও অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে ইতিহাস গবেষণার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।
উদ্বোধনী সেশনে কি-নোট প্রদান করেন ভারত সরকারের প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব ও কাউন্সিল ফর সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট (নতুন দিল্লী, ভারত) এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মুচকুন্দ দুবে এবং বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কনফারেন্সের কো-অর্ডিনেটর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপনে বক্তব্য প্রদান করেন ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শামসুন নাহার। উল্লেখ্য, দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা ও ভুটান এর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক ও শিক্ষকের প্রায় ৬৪টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে।
কনফারেন্সটির প্লিনারি সেশন-১ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড.আবুল বারাকাত এর সভাপতিত্বে বক্তব্য প্রদান করেন ভারতের নতুন দিল্লীর জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর হিস্টোরিক্যাল স্টাডিজ এর অধ্যাপক ড.সুচিত্রা মাহাজন, ব্রাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আফসান চৌধুরী এবং জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কে ভারদোয়াজ।
‘Colonial South Asia : Rise of Nationalism, Anit-colonial Movements and Independence’ শীর্ষক টেকনিক্যাল সেশন-১ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমেদ আব্দুল্লাহ জামাল এর সভাপতিত্বে এতে ৯টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।
‘Post-Colonial South Asian States and Soceity : Problems and Prospects’ শীর্ষক টেকনিক্যাল সেশন-২ এ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শারিফউদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে ৮টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।
‘Modern South Asia : Politics and Development শীর্ষক টেকনিক্যাল সেশন-৩ এ ভারতের জয়দেবপুর ইউনিভার্সিটি এর ইতিহাস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. রূপ কুমার বর্মন এর সভাপতিত্বে ৮টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।
‘Modern South Asia : Health and Education’ শীর্ষক টেকনিক্যাল সেশন-৪ এ বাংলাদেশের ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. কে. এম. মহসিন এর সভাপতিত্বে ৭টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।
কেআই/